নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহঃ সামনেই দুর্গাপুজো। উৎসবমুখর বাংলা, এদিকে, তার আগেই মর্মান্তিক পথদুর্ঘটনার বলি এক শিশু-সহ তিনজন। পাশাপাশি আহত আরও দুই। তাঁদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলেই জানা গিয়েছে। পথচারী এক মহিলাকে বাঁচাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ধারে উল্টে যায় পাথর বোঝাই এক ট্রাক। সেই সময় রাস্তার ধারে একই পরিবারের পাঁচজন, তাঁদের উপরেই উল্টে যায় লরিটি। এর জেরে ঘটনাস্থলেই ৩ জনের মৃত্যু হয়। মৃতদের মধ্যে এক শিশু রয়েছে। পাশাপাশি গুরুতর আহত আরও দুই।
মঙ্গলবার এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে মালদহের হরিশচন্দ্রপুর থানার অন্তর্গত দৌলতনগর গ্ৰাম পঞ্চায়েতের বটতলি গ্ৰামের ভালুকা দিল্লী দেওয়ানগঞ্জ রাজ্য সড়কে। দুর্ঘটনার পর, স্থানীয়রা সঙ্গে সঙ্গে ছুটে আসেন এবং উদ্ধারকাজ শুরু করেন। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় শোকের ছায়া এলাকায়। এদিকে, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে, দুর্ঘটনাস্থলে ছুটে আসে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি দেওদূত গজমের এবং ভালুকা ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক ঝোটন প্রসাদের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী। এছাড়াও দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন চাঁচল মহকুমার পুলিশ আধিকারিক শুভেন্দু মন্ডল, হরিশ্চন্দ্রপুর ২ ব্লক বিডিও বিজয় গিরিও।
এদিকে, এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার জন্য ট্রাকটির বেপরোয়া গতিকেই দায়ি করেছেন এলাকার বাসিন্দারা। পাশাপাশি এলাকার রাস্তা ছোট হওয়ার কারণেও এই দুর্ঘটনা বলেই অভিযোগ তাঁদের। ছোট রাস্তা দিয়েই বড় বড় লরি যাতায়াত করে। এদিন যে লরিটি দুর্ঘটনা মুখে পড়ে, সেটি বিহারের কাটিহার যাচ্ছিল। আচমকাই রাস্তা ছাড়িয়ে পাশে গিয়ে একটি বাড়ির সামনে উল্টে যায়।
সেখানেই একটি গাছের নিচে বসেছিল দুই শিশু-সহ ৫ জন। তাঁরা লরির নিচে চাপা পড়ে যান। তাঁদের দ্রুত উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে, তিনজনকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। মৃতদের মধ্যে ৫ বছরের লুসি মণ্ডল বলে এক শিশু রয়েছে। বাকি ২ জন হলেন, আরতি মণ্ডল (৪৫), লক্ষ্মী মণ্ডল (২৫)। পাশাপাশি আহত হয়েছেন বছর ৪৫-এর নির্মলা মণ্ডল এবং ১ বছরের প্রিয়াংশু মণ্ডল। দুর্ঘটনার পর পলাতক লরির চালক।
এদিন দুর্ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় যান বিধায়ক তথা রাজ্যের বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী তাজিমুল হোসেন ও জেলা পরিষদের শিশু নারী ত্রাণ কর্মাধ্যক্ষ মর্জিনা খাতুন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তোবারক হোসেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন মন্ত্রী তাজমুল হোসেন। এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী তাজমুল হোসেন বলেন, ‘অত্যন্ত মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। তিনজন মারা গেছে এবং দুই জন আহত। আমরা সবরকমভাবে পাশে আছি। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যে দুই লক্ষ টাকা দেওয়া হয় চেষ্টা করবো যাতে তাঁরা পায়।’
পুজোর প্রাক্কালে এই ধরনের মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় শোকের ছায়া এলাকায়। এলাকাবাসীর তরফে দাবি করা হয়েছে, সরকার যাতে সব রকমভাবে এই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়ায়। এর পাশাপাশি রাস্তা তৈরির জোড়ালো দাবিও তুলেছে স্থানীয় বাসিন্দারা। কারণ, এই রাস্তায় দুর্ঘটনা এই প্রথম নয়। আজকের দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু করছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ এবং লরি চালকের খোঁজে শুরু হয়েছে তল্লাশি।
আপনার মতামত লিখুন :