শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

কৃত্রিম হাত পাবেন! এদিকে অভিযুক্তদের জামিন হওয়ায় ফের হামলার আশঙ্কায় আতঙ্কিত কেতুগ্রামের রেণু

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: আগস্ট ২৮, ২০২২, ০৩:৩৩ পিএম | আপডেট: আগস্ট ২৮, ২০২২, ০৯:৪৫ পিএম

কৃত্রিম হাত পাবেন! এদিকে অভিযুক্তদের জামিন হওয়ায় ফের হামলার আশঙ্কায় আতঙ্কিত কেতুগ্রামের রেণু
কৃত্রিম হাত পাবেন! এদিকে অভিযুক্তদের জামিন হওয়ায় ফের হামলার আশঙ্কায় আতঙ্কিত কেতুগ্রামের রেণু

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ স্বাভাবিক জীবনে ফেরার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই তাঁর জারি রয়েছে। এরই মধ্যেই স্বাভাবিক জীবনযাপনের উদ্দেশ্যে রেণু খাতুনের জন্য কৃত্রিম হাতের ব্যবস্থা করেছে পূর্ব বর্ধমানের জেলাপরিষদ। এদিকে, ঠিক এমন সময় রেণু খাতুনের হাত কেটে নেওয়া অভিযুক্তদের মধ্যে ৩ জনের জামিনও মঞ্জুর হয়েছে। এর জেরে রীতিমতো আতঙ্কিত রেণু খাতুন।

এই প্রসঙ্গে রেণু জানিয়েছেন, ‘আমি আতঙ্কিত। পুলিশের তদন্তে গাফিলতি থাকতে পারে তার জন্যই হয়তো জামিন পেয়ে গেছে। জামিন হওয়ায় আমি খুব বিস্মৃত। আশঙ্কা করছি আমার উপর ফের হামলা হতে পারে।’

রেণু খাতুনের জন্য পূর্ব বর্ধমানের জেলা পরিষদের নিজস্ব তহবিল থেকে প্রায় ৪ লক্ষ টাকা ব্যয় করে কৃত্রিম হাত লাগানো হবে বলেই জানিয়েছেন জেলাপরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া। উল্লেখ্য, কেতুগ্রামের গৃহবধু রেণু খাতুনের ডান হাতের কব্জি থেকে বাদ যাওয়ার পর, তাঁর স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য কৃত্রিম হাতের উদ্যোগ নেয় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী কল্যাণ সমিতি। সমিতির চেয়ারম্যান মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের উপস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তারপরেই এই কৃত্রিম হাতের জন্য সমস্ত ব্যয় পূর্ববর্ধমান জেলাপরিষদ বহন করবে বলে জানিয়ে দেন সভাধিপতি শম্পা ধাড়া।

সভাধিপতি শম্পা ধাড়া আরও বলেছেন, ‘রেণুর লড়াইকে কুর্ণিশ জানিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী-সহ অনেকেই তাঁর প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই রেণুকে সরকারি চাকরিও দেওয়া হয়েছে। যেহেতু তার ডান হাত নিয়েই সমস্যা, তাই তাঁর নানাবিধ অসুবিধায় হচ্ছিল। সেই জন্য কৃত্রিম হাতের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

রোগী কল্যাণ সমিতি ও পূর্ববর্ধমান জেলা পরিষদের এই উদ্যোগে খুশি রেণু খাতুন। তিনি বলেছেন, ‘সকলকে আমার ও আমার পরিবারের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই। এর ফলে আগামীদিনে আমার কাজ করতে অনেক সুবিধা হবে।’ তবে, এর পাশাপাশি অভিযুক্তদের জামিনের খবরের ব্যাপারে রেণু বলেছেন, ‘অভিযুক্তদের আটক রেখে যাতে বিচারের ব্যবস্থা করা হয় তাহলে ভাল হবে। ওরা ছাড়া পাওয়ায় আমার ভয় হচ্ছে, আমার উপর হামলা করা হতে পারে।’

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কেতুগ্রামের কোজলসা গ্রামের গৃহবধু রেণু খাতুন নার্সিং-এ চাকরি পেয়েছিলেন। সেই চাকরি করতে দিতে রাজি ছিলেন না রেণুর স্বামী সেখ সরিফুল ওরফে সিরাজ। চাকরি যাতে রেণু না করতে পারেন, তার জন্য গত ৪ জুন রেণুর ডান হাতের কব্জি কেটে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে স্বামী সেখ সরিফুলের বিরুদ্ধে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় গোটা রাজ্য জুড়ে। এর পরই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে নার্সিং-এ চাকরিতে যোগ দেন রেণু। বর্তমানে রেণু খাতুন নার্সিং কলেজে কর্মরত।

কেতুগ্রামে স্ত্রীর কব্জি কাটা কাণ্ডে ধৃত ভাড়াটে দুষ্কৃতী-সহ তিনজনের জামিন মঞ্জুর করল কাটোয়া মহকুমা আদালতের অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক সুকুমার সুত্রধর। রেণু খাতুনের কব্জি কাটার ঘটনায় ভাড়াটে দুষ্কৃতী আসরাফ আলি সেখ ও হাবিবুর রহমান এবং প্রধান অভিযুক্তের তুতোভাই চাঁদ মহম্মদের ৮৪ দিন পর জামিন মঞ্জুর হল। এর জেরেই আতঙ্কিত রেণু।