বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ক্রমাগত আসা হুমকি ফোন এবং হোয়াটসঅ্যাপের সূত্র ধরে বারাকপুরে জনপ্রিয় বিরিয়ানির দোকানের গুলি চালানোর ঘটনায় অবশেষে পুলিশের জালে ১ জন। ইতিমধ্যেই ধৃত যুবককে হেফাজতে নিয়ে শুরু হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদ। কেন গুলি চালানো হল, কারা কারা রয়েছে ওই ঘটনার পিছনে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
বিরিয়ানির দোকানে গুলি চালানোর ঘটনায় ধৃত যুবকের নাম অভিষেক ঝা। তাঁকে গ্রেফতার করে এদিনই বারাকপুর মহকুমা আদালতে তোলে পুলিশ। বিচারক ওই যুবককে ১২ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ কুমার বর্মা বলেন, ‘ব্যারাকপুরে গুলি চালানোর ঘটনায় এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। তদন্ত এখন খুব গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে। কী কারণে গুলি চলেছে, কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তা আমরা জানতে পেরেছি। তবে এই মুহূর্তে তা প্রকাশ করা হবে না তদন্তের স্বার্থে।’
গত সোমবার ঘটনার দিন, দুপুরের ব্যস্ত সময়ে ভিড়ে ঠাসা মোহনপুর থানা এলাকার বারাকপুর-বারাসাত রোডের উপর একটি বিরিয়ানির দোকানে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় দুজন আহত হন। এর মধ্যে একজন দোকানের কর্মচারী এবং অন্যজন ক্রেতা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ওই দিন ঘটনার সময়, বিরিয়ানি দোকানের উল্টো দিকে একটি বাইকে করে তিন দুষ্কৃতী এসে পরপর গুলি চালায় এবং তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। তিনজনের মধ্যে একজনের মাথায় হেলমেট ছিল বলেও খবর।
এদিকে, পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার ঘটনার দিন বিরিয়ানির দোকানে আরও দু-তিনজন দুষ্কৃতী ছিল। তাঁরাই অন্যদের খবর দিচ্ছিল। তোলা আদায়ের জন্য ভয় দেখাতেই সম্ভবত দুষ্কৃতীরা গুলি চালায় বলেই পুলিশের পক্ষ থেকে অনুমান। সে বাইকে করে দুষ্কৃতীরা এসেছিল, সেটিকেও চিহ্নিত করা গিয়েছে বলেই জানা গিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বারাকপুর পুলিশ কমিশনারের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বারাকপুর-বারাসাত রোড সংলগ্ন অনেকগুলি সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়েছে। পাশাপাশি হুমকি ফোন এবং মেসেজ বিশ্লেষণ করা হয়েছিল। সেখান থেকেই অনেকগুলো সূত্র পাওয়া গিয়েছে। তার উপরে ভিত্তি করেই কয়েকজন সন্দেহভাজনের উপর নজরদারি চালানো হয় এবং একজনকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদকে জেরা করে বাকিদের খোঁজ চালানো হচ্ছে। এদিকে, এখন আতঙ্ক কাটেনি দোকানের মালিক এবং কর্মচারীদের। সোমবার থেকেই দোকানের সামনে বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেট।
এদিকে, ভিড় দোকানে গুলি চালানোর ঘটনায় বহু মানুষের প্রাণ যেতে পারত বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। উক্ত বিরিয়ানি দোকানের মালিকের স্ত্রী জানিয়েছেন, ‘সেই দিনটির কথা মনে করলেই গা শিউরে উঠছে। রাস্তার অন্য পাড় থেকে যেভাবে দুষ্কৃতীরা গুলি চালিয়েছিল তাতে পথচলতি মানুষ এবং দোকানে আসা ক্রেতা, কর্মচারী অনেকেরই মৃত্যু হতে পারত। এখনও ভয় কাটেনি আমাদের। তবে, ক্রেতারাই আমাদের মনের জোর বাড়াচ্ছেন। তারাই দোকানে এসে আমাদের ভরসা দিচ্ছেন। প্রথম দু’দিন যেভাবে বিরিয়ানি বিক্রি কমে গিয়েছিল, তাতে দুশ্চিন্তা ছিল। তবে এখন বিক্রি কিছুটা বেড়েছে।’
আপনার মতামত লিখুন :