ইতিহাস গড়ার পথে বাংলা। বিশ্বের বৃহত্তম ধর্মীয় স্মৃতিস্তম্ভের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের নাম। নদিয়ার মায়াপুরে তৈরি হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম মন্দির বৈদিক প্ল্যানেটোরিয়াম (Vedic Planetarium)। যা ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অফ কৃষ্ণ কনসায়নেস অর্থাৎ ইসকনের সদর দপ্তর হিসেবে কাজ করবে। আশা করা যাচ্ছে, পরের বছরের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে মন্দিরটির নির্মাণের কাজ।
বর্তমানে বিশ্বের সর্ববৃহৎ মন্দির হল কম্বোডিয়ার আঙ্কোরভাট। তাকেও টেক্কা দিতে চলেছে মায়াপুরের বৈদিক প্ল্যানেটোরিয়াম। এই মন্দিরে দেখা যাবে বিভিন্ন রকম মহাজাগতিক প্রদর্শনী। ভার্চুয়াল ভাবে শ্রীকৃষ্ণের দর্শনও করা যাবে। সবকিছু ঠিক থাকলে, আগামী ২০২৩-এর জুলাই বা অগাস্টেই দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হতে পারে এই মন্দির। ফলে মাত্র কয়েকদিনের অপেক্ষা! তারপরই বিশ্বের সর্ববৃহৎ মন্দির হতে চলেছে বাংলার অন্যতম প্রধান আকর্ষণ।
এবার এক নজরে দেখে নেওয়া যাক এই মন্দিরের কিছু অজানা তথ্য-
১. বৈদিক প্ল্যানেটেরিয়াম মন্দিরটি তৈরি ইসকনের প্রতিষ্ঠাতা শ্রীল প্রভুপাদের স্বপ্ন ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটাল ভবনের নকশায় অনুপ্রাণিত হয়ে শ্রীল প্রভুপাদ এই মন্দির তৈরি কথা বলেছিলেন। ১৯৭৬ সালে তিনি মন্দিরের বাহ্যিক কাঠামোর জন্য নিজের পছন্দের কথা জানিয়েছিলেন। তিনি যখন ওয়াশিংটনে ছিলেন, সেই সময় তিনি বিশাখা মাতাজি এবং যদুবরা প্রভুকে ক্যাপিটালের ছবি তুলতে বলেছিলেন। ইসকনের মন্দির হতে চলেছে এর হেড কোয়ার্টার।
২. বৈদিক প্ল্যানেটোরিয়াম তৈরির উদ্যোগের প্রধান অ্যালফ্রেড ফোর্ড। তিনি ধনকুবের হেনরি ফোর্ডের প্রপোত্র এবং ফোর্ড মোটর কোম্পানির ভবিষ্যত মালিক। ইসকনে যোগদানের পর ১৯৭৫ সালে তিনি নিজের নাম পরিবর্তন করে রাখেন অম্বরীশ দাস। বৈদিক প্ল্যানেটোরিয়ামের পরিকাঠামো নির্মাণে তিনি ৩০ মিলিয়ন ডলার অর্থ প্রদান করেন।
৩. ২০০৯ সাল থেকে নদিয়ার মায়াপুরে ইসকনের সদর দপ্তরে চলছে মন্দির নির্মাণের কাজ। ২০১৬-তেই প্রকল্প সম্পূর্ণ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কোভিডের জন্য পিছিয়ে গিয়েছে নির্মাণকার্য।
৪. ৭০০-একর জুড়ে নির্মিত এই কমপ্লেক্সটি হবে বিশ্বের বৃহত্তম মন্দির।
৫. বৈদিক প্ল্যানেটোরিয়ামে থাকছে ইনস্টিটিউট অফ বেদিক কসমোলজি বিভাগ। এখানে শ্রীকৃষ্ণের ভার্চুয়ালি দর্শনও করা যাবে। মহাজাগতিক সৃষ্টি নিয়ে নানান প্রদর্শনীও থাকবে।
৬. বিশ্বের অন্যান্য ধর্মীয় সৌধের থেকে বৃহত্তম চূড়া থাকবে এই মন্দিরে। আগ্রার তাজমহল বা ভ্যাটিকানের সেন্ট পলস ক্যাথিড্রালের থেকেও আয়তনে বড় হবে মন্দির।
৭. মায়াপুরের এই নবনির্মিত মন্দিরে একসঙ্গে দশ হাজার ভক্ত শ্রীকৃষ্ণের দর্শন নিতে পারবেন। মেঝেতে একসঙ্গে ১০ হাজার পুণ্যার্থী শ্রীকৃষ্ণের সামনে প্রার্থনা করতে পারবেন।
৮. ৩৫০ ফুট উঁচু এই মন্দিরে থাকছে ১৪টি লিফট।
৯. মন্দির সাজাতে রাজস্থানের ধোলপুরের পাশাপাশি ভিয়েতনাম, ফ্রান্স ও দক্ষিণ আমেরিকা থেকে টাইলস আনা হয়েছে।
১০. মন্দির নির্মাণে খরচ হচ্ছে প্রায় ১০ কোটি টাকা।
আপনার মতামত লিখুন :