শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

‘যতক্ষণ শীতবস্ত্র না আসছে, আপনারা বসুন, আমিও বসে রইলাম’! মঞ্চে বসে রইলেন ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৯, ২০২২, ০৩:৪৮ পিএম | আপডেট: নভেম্বর ২৯, ২০২২, ১০:৩২ পিএম

‘যতক্ষণ শীতবস্ত্র না আসছে, আপনারা বসুন, আমিও বসে রইলাম’! মঞ্চে বসে রইলেন ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী
‘যতক্ষণ শীতবস্ত্র না আসছে, আপনারা বসুন, আমিও বসে রইলাম’! মঞ্চে বসে রইলেন ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ মঙ্গলবার উত্তর ২৪ পরগণার হিঙ্গলগঞ্জে সমসেরনগরে এক জনসভায় স্থানীয় প্রশাসনের উপরে ক্ষোভ উগরে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই সভায় দুঃস্থ মানুষদের শীতবস্ত্র দেওয়ার কথা ছিল। মঞ্চ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, চাদর, কম্বল মিলিয়ে মোট ১৫ হাজার শীতবস্ত্র দুঃস্থদের মধ্যে দান করা হবে। কিন্তু তা দান করার সময় দেখা দিল সমস্যা। দেখা গেল, বিডিও অফিস থেকে সেই শীতবস্ত্র অনুষ্ঠান মঞ্চে এসেই পৌঁছায়নি। এই অব্যবস্থা দেখেই বেজায় চটে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী। মঞ্চ থেকেই তিনি ঘোষণা করে দেন যে, ‘যতক্ষণ না শীতবস্ত্র বিডিও অফিস থেকে না আসছে ততক্ষণ আপনারাও বসুন, আমিও বসে রইলাম।’

এই ঘোষণার পর হিঙ্গলগঞ্জের উক্ত সভায় কমপক্ষে ২০ মিনিট ভাষণ বন্ধ করে বসে মঞ্চেই ঠায় বসে রইলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর শীতবস্ত্র আসতে, ফের ভাষণ শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন বিষয়টি জানার পরেই মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চে থাকা প্রশাসনিক কর্তাদের উদ্দেশ্য প্রশ্ন করেন, ‘এগুলো কোথায়? ১৫ হাজার শীতবস্ত্র কোথায়?’ মঞ্চে তখন মুখ্যসচিব রয়েছেন। আধিকারিকরা আমতা আমতা করতেই, ‘আমিতো বলেছিলাম এখান থেকে ডাইরেক্ট বস্ত্র বিতরণ করব। বলা হয়েছিল তো শোনেনি কেন? ওইসব শীতবস্ত্র বিডিও অফিসে রাখার জন্য তো পাঠাইনি! কেন বিডিও অফিসে থাকবে? বলুন বিডিওকে নিয়ে আসতে। আমি অপেক্ষা করব এখানে।’

তিনি আরও বলেন যে, ‘যদি বিডিওরা ঠিকমতো কাজ না করেন, আইসিরা ঠিকমতো কাজ না করেন তাহলে আমাকে ব্যবস্থা নিতে হবে। ঠিক আছে ১৫ হাজার জিনিস হয়তো বিতরণ করতে অসুবিধে হয়, অনন্ত আমার এখান তো কিছু লোককে দেওয়া যেত! আমি তো বলেছিলাম ক্যাম্প করে বিতরণ করা হোক।’

এখানেই শেষ নয়, ক্ষোভ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি তো বিডিও অফিসে রাখার জন্য পাঠাইনি। এটা আশা করিনি। আমি আর মিটিং করে কী করব। আমি তো ওটাই দিতে এসেছিলাম। তোমরা যদি এইটুকু অনুষ্ঠান ঠিকমতো না করতে পার, তাহলে তো প্রয়োজনই নেই। ডিএম, আইসিরা যদি ঠিকমতো কাজ না করেন, দায়িত্ব পালন না করেন। তাহলে আমি ব্যবস্থা নেব।’

এরপরই ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন যে, ‘তাই আমি বলব, যতক্ষণ এটা না আসছে, আপনারা বসুন, আমিও বসে থাকব।’ মঞ্চেই বসে থাকেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতার ওই কথা শুনে মঞ্চের সামনে বসে থাকা জনতা হাততালিতে ফেটে পড়লে, বিপাকে পড়ে যান প্রশানসের আধিকারিকরা। মমতা বলেন, ‘বনদেবীর পুজো উপলক্ষ্যে আমি শীতবস্ত্র কিনে এনেছি। আমি কত কষ্ট করে তিন দিন ধরে এখানে আসব বলে আমি কম্বল, চাদর কিনে এনেছি। আর এসে দেখছি ভোঁ ভাঁ! জিনিস দিলে যদি ঠিকমতো না পৌঁছায় তাহলে আমার খুব গায়ে জ্বালা ধরে। পুলিশ একটা অন্য়ায় করলে দোষটা পড়ে আমাদের ঘাড়ে। সরকার একটা অন্যায় করলে গালাগালি খাই আমি। অথচ আমি জানিই না। আমার কোনও দোষই নেই।’ এরপর প্রায় ২০ মিনিট পরে শীতবস্ত্র এসে পৌঁছালে ভাষণ শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।