শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে, অনেককেই বাঁচানো যেত! দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: অক্টোবর ৬, ২০২২, ১০:৫৭ পিএম | আপডেট: অক্টোবর ৭, ২০২২, ০৫:১০ এএম

যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে, অনেককেই বাঁচানো যেত! দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের
যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে, অনেককেই বাঁচানো যেত! দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ প্রতিমা নিরঞ্জনের সময় ঘটল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা! বুধবার রাতে জলপাইগুড়ি জেলার মালবাজার এলাকার মাল নদীতে হড়পা বানে ভেসে গেলেন অনেকেই। এখনও পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। পাশাপাশি এখনও অনেকেই নিখোঁজ বলে জানা গিয়েছে। এছাড়াও আহত ১১ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। স্থানীয়দের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে যে, প্রশাসনিক গাফিলতির কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনার ভিডিও এখন ভাইরাল। এদিকে, এই ঘটনায় ইতিমধ্যে শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ঘটনায় রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেছেন বিজেপি বিধায়ক তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

কিন্তু এই ঘটনার জন্য দায়ী কে? এই ঘটনা শুধুই কি দুর্ঘটনা, নাকি প্রশাসনের তরফে তৎপরতা থাকলে, এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা এড়ানো যেত? কেমন ছিল দুর্ঘটনার সময় সেখানকার পরিস্থিতি? ঘাটের পরিস্থিতিই বা কেমন ছিল? কী জানাচ্ছেন স্থানীয়রা?

নদীতে আচমকা হড়পা বানে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনায় বেশ কিছু প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন যে, তেমন কোনও বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না প্রশাসনের তরফে। বিসর্জনের ঘাটে কয়েক হাজার মানুষ থাকলেও, সিভিল ডিফেন্স কর্মী ছিলেন মাত্র হাতেগোনা কয়েকজন। সংখ্যাটা ৮ থেকে ১০ জন। আবার কারও কারও কথায় আর একটু বেশি। এর পাশাপাশি ঘাটে ছিল না কোনও নৌকা, লাইফবোট। এমনকি পর্যাপ্ত দড়িও নিয়ে আসেননি কর্মীরা। ঘটনার পর, কেউ কেউ তার ছিঁড়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও, তা ভেসে যাওয়া মানুষের কাছ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেনি। স্থানীয়দের তরফে জানানো হয়েছে যে, শুধুমাত্র বালির বস্তা দিয়ে জলের ধারা পর্যন্ত পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু জলের তোড়ে মুহূর্তের মধ্যেই তা ভেসে যায়।

এদিকে আগেই এই এলাকায় হড়পা বান দেখা গিয়েছে, কিন্তু তারপরেও কেন এই হড়পা বান নিয়ে যেত? কেন সতর্কতা নেয়নি প্রশাসন। এই ঘটনায় আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বানের তোড়ে যাঁরা গুরুতর জখম হয়েছেন, এদিন তাঁদেরও শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন বিধায়ক। কিন্তু আহতদের পরিবারের তরফে অভিযোগ উঠছে, বিধায়ক এসে দেখে গেলেও, হাসপাতালের তরফে আহতদের সেভাবে দেখভাল করা হচ্ছে না। চিকিৎসা যথাযথ হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন পরিবারের সদস্যরা। মালবাজার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসা চলছে। মৃতদেরও সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে প্রশাসনিক সাহায্য না পাওয়ার অভিযোগে ভাঙচুর চালানো হয়।

অন্যদিকে, মালবাজারের ক্যালটেক্স মোড়ে মৃতদের পরিবারের পক্ষ থেকে পথ অবরোধও করা হয়। তাঁদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় যে, আগেও মাল নদীতে হড়পা বান হওয়ার পরেও কোনও সতর্কতা নেওয়া হয়নি প্রশাসনের তরফে। এদিন উদ্ধার কাজেও প্রশাসনের সাহায্য মেলেনি বলেও অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে অভিযোগ, নিরাপত্তার কোনও ব্যবস্থাই ছিল না ঘাটে। তাঁদের দাবি, উদ্ধারকাজে স্থানীয়রাই ঝাঁপিয়ে পড়েন। পাশাপাশি এও দাবি করা হচ্ছে যে, নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিকঠাক থাকলে, আরও অনেকজনকেই বাঁচানো সম্ভব হত।