শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪

নৃশংসভাবে স্ত্রীকে ‘খুন’! কংক্রিটের মেঝের নীচেই দেহ পুঁতে পলাতক স্বামী

চৈত্রী আদক | মলয় দে

প্রকাশিত: মার্চ ৪, ২০২২, ০৩:৫৪ পিএম | আপডেট: মার্চ ৪, ২০২২, ০৪:২৪ পিএম

নৃশংসভাবে স্ত্রীকে ‘খুন’! কংক্রিটের মেঝের নীচেই দেহ পুঁতে পলাতক স্বামী
নৃশংসভাবে স্ত্রীকে ‘খুন’! কংক্রিটের মেঝের নীচেই দেহ পুঁতে পলাতক স্বামী

বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ  তৃতীয় পক্ষের স্ত্রীকে নৃশংসভাবে খুনের অভিযোগ উঠল বছর চল্লিশের ব্যক্তি রবীন্দ্রনাথ রায়-এর বিরুদ্ধে। মৃতার নাম মাম্পি রায় (৩২)। এই ভয়াবহ ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার ধানতলা থানার অন্তর্গত শংকরপুর ত্রিনাথতলা এলাকায়। প্রথমে স্ত্রীকে খুন করে বাড়ির সিঁড়ির নীচে পুঁতে ঢালাই করে দেন তিনি। পরে তারই ওপরে নির্মাণ করেন শৌচালয়। ঘটনার কথা স্বীকার করেই পলাতক অভিযুক্ত। তাঁর খোঁজে জোর তল্লাশি চালাচ্ছে ধানতলা থানার পুলিশ।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে খবর, রবীন্দ্রনাথ রায় পেশায় একজন দিনমজুর ছিলেন। এর আগেও তাঁর দুই বউ ছিল। কিন্তু সারাদিন নেশাগ্রস্থ থাকা স্বামীর মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে তাঁকে ছেড়ে চলে যান তাঁর দুই প্রাক্তন স্ত্রী। পরে ফের বিয়ের পরিকল্পনা করেন রবীন্দ্রনাথ। পরিকল্পনা মতই উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুরের বাসিন্দা মাম্পি চক্রবর্তীর সঙ্গে তাঁর বিয়েও হয়। প্রতিবারের মত তৃতীয় পক্ষের স্ত্রীয়ের সঙ্গেও শুরু হয় রোজকার অশান্তি।

দিনমজুর রবীন্দ্রনাথ-এর যতটা আয় হত তার সবটাই তিনি ব্যায় করতেন নেশার দ্রব্যাদি কেনার পেছনে। সারাদিন নেশা করাই ছিল তাঁর একমাত্র কাজ। এমনকি আয় না থাকলে সঞ্চয়ের টাকা খরচ করতেও দুবার ভাবতেন না তিনি। আর এই নিয়েই যাবতীয় অশান্তির সূত্রপাত। নেশার ঘোরে এই অশান্তির জেরেই স্ত্রীকে খুন করেছেন তিনি, এমনটাই দাবি এলাকাবাসীর।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দিন পনেরো আগেই হঠাৎ নিরুদ্দেশ হয়ে যান মাম্পি। রবীন্দ্রনাথকে এই নিয়ে একাধিকবার প্রশ্ন করলেও কোনও সদুত্তর মেলেনি। কখনও কখনও আবার যুক্তিহীন কথাও বলতে শোনা গেছে রবীন্দ্রনাথকে। সেখান থেকেই ঘনীভূত হতে শুরু করে রহস্য।

এরই মধ্যে বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে নিজের বাড়িতেই নেশার আসর বসান রবীন্দ্রনাথ। আর সেখানেই ফাঁস হয় ঘটনার যাবতীয় রহস্য। নেশার ঘোরেই বন্ধুদের কাছে স্বীকার করেন যে তিনিই তাঁর স্ত্রীকে খুন করেছেন। কেবল খুন নয়, প্রমাণ লোপাট করতে স্ত্রীয়ের মরদেহ মাটির তলায় পুঁতে দিয়ে তার ওপর কংক্রিটের বাথরুমও বানিয়েছেন। প্রথমে বিশ্বাস না হলেও পরে সন্দেহ হওয়ায় তাঁর বন্ধুরাই খবর দেয় থানায়। খবর পেয়েই ধানতলা থানার পুলিশ ও রানাঘাট ২ নম্বর বিডিও ওই বাড়িতে তল্লাশি চালায়। পুলিশি তৎপরতায় কংক্রিটের ঢালাই ভেঙে নির্মীয়মান শৌচালয়ের মাটি খুঁড়ে উদ্ধার হয় মাম্পি রায়ের দেহ। দেহটি পরে মর্গে নিয়ে যাওয়া হয় ময়নাতদন্তের জন্য।

গোটা বিষয়টি জানাজানি হতেই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান রবীন্দ্রনাথ। ঘটনায় মুখ খোলেনিন তাঁর বাড়ির সদস্যরাও। খুনের বিষয়ে কিছুই জানতেননা তাঁরা, এমনটাই দাবি অভিযুক্তের বাবা ও কিশোর ছেলের। ঠিক কী কারণে খুন তা এখনও জানা যায়নি। নিখোঁজ অভিযুক্তের তল্লাশি চালাচ্ছে ধানতলা থানার পুলিশ।