বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশেষ সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পাওয়া নিয়ে বাংলায় কম চর্চা হয়নি। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার সামলানোর পাশাপাশি সাহিত্য সাধনাও চালিয়ে গিয়েছেন তিনি। এর মধ্যেই লিখে ফেলেছেন একাধিক কবিতা, গল্প। রাজ্য চালনার পাশাপাশি নিরলস সাহিত্য সাধনার জন্য এবার স্বীকৃতি পেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর লেখা ‘কবিতা বিতান’ বইটির জন্য তাঁকে বাংলা আকাদেমি পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
কবিগুরুর ১৬১ তম জন্মজয়ন্তীতে রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের আয়োজিত রবি প্রণাম অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর নাম এই পুরস্কারের জন্য ঘোষণা করা হয়। কিন্তু তিনি নিজে হাতে এই পুরস্কার গ্রহণ করেননি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে এই সম্মান গ্রহণ করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর এই পুরস্কার প্রাপ্তির পর থেকেই বিভিন্ন মহল থেকে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। এবার এ নিয়ে মুখ খুললেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ- সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর কথাতেও কটাক্ষের সুর। তিনি বলেন, ‘উনি তো নোবেল পাওয়ার ক্ষমতা, যোগ্যতা, প্রতিভা রাখেন। সাহিত্য অ্যাকাডেমি দিয়ে ওঁকে কেন অপমানিত করা হল?’ শুক্রবার পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় চায়ে-পে- চর্চায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তাঁদের প্রশ্নের জবাবে একথাই বললেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি।
উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে সংগঠনে কাজের সূত্রে পূর্ব মেদিনিপুরে রয়েছেন সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এদিন সকালে তিনি এগরায় প্রাতভ্রমণে পর চায়ে-পে-চর্চায় যোগ দেন। সেখানে সাংবাদিক্রা মুখ্যমন্ত্রীর বিশেষ সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার প্রাপ্তি নিয়ে প্রশ্ন করতেই তিনি জবাবে বলেন, ‘এ নিয়ে নতুন করে আর কী বলার আছে? বাংলায় এমনটা আগে হয়নি। এখানে শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতির একটা আভিজাত্য ছিল, মান ছিল। এখনকার সরকার নিজেদের লোকদেরই সমস্ত পুরস্কার পাইয়ে দেয়। শুধু তাই নয়, মুখ্যমন্ত্রী নিজেও পুরস্কার নেন। তো ওঁকে কেন সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার দিয়ে অপমানিত করা হল? ওটা তো ছোট পুরস্কার। উনি তো নোবেল পাওয়ার ক্ষমতা, যোগ্যতা, প্রতিভা রাখেন।’
প্রসঙ্গত এই প্রথম এই সম্মান পেলেন মুখ্যমন্ত্রী। শিক্ষামন্ত্রী এই পুরস্কারের প্রসঙ্গে অনুষ্ঠানে জানিয়েছিলেন যে, সমস্ত সাহিত্যকদের মতামত নিয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম নির্বাচন করা হয়েছে এই পুরস্কারের জন্য। এমন এক ব্যক্তিত্ব, যিনি বা যারা সরাসরি সাহিত্যের সঙ্গে যুক্ত নন, কিন্তু সাহিত্যে বিশেষ অবদান রেখেছেন, তাঁদের পুরস্কৃত করা হবে। তিনি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হতে পারেন, খেলাধুলার সঙ্গে যুক্ত কেউ হতে পারেন। এবছরই প্রথম এই বিশেষ পুরস্কার দেওয়া চালু হল। প্রথম বছর সাহিত্য চর্চায় বিশেষ অবদানের জন্যই এই পুরস্কার পেলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রতি তিন বছর অন্তর এই সম্মানে সম্মানিত করা হবে।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর আরও বলেছিলেন, ‘সমাজের অন্য ক্ষেত্রে অবদানের পাশাপাশি যারা নিরলস সাহিত্য সাধনা করে চলেছেন, তাঁদের সাহিত্য অ্যাকাডেমির পক্ষ থেকে বাংলা আকাদেমি পুরস্কারে সম্মানিত করা হচ্ছে। প্রারম্ভিক বর্ষে বাংলার সমস্ত সাহিত্যিকদের মতামত নিয়ে এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাঁর কবিতা বিতান কাব্যগ্রন্থকে মাথায় রেথে সামগ্রিকভাবে সাহিত্যচর্চার জন্য এই সম্মান দেওয়া হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের বাংলা আকাদেমির পক্ষ থেকে।’ কিন্তু, মঞ্চে উপস্থিত থাকলেও, এদিন নিজ হাতে পুরস্কার গ্রহণ করেননি মুখ্যমন্ত্রী।
এদিকে, এই মুখ্যমন্ত্রীর এই পুরস্কার পাওয়া নিয়ে এরপরে বিস্তর জল ঘোলা হয়েছে। নানা জনে নানা কথা বলেছেন। যদিও সেসবের জবাবও দিয়েছেন ব্রাত্য বসু থেকে সুবোধ সরকাররা। তারপরেও বিতর্ক থেমে নেই। এই পরিস্থিতিতে দিলীপ ঘোষের মন্তব্যেও ফের একবার কটাক্ষের সুর মুখ্যমন্ত্রীর এই বিশেষ সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার প্রাপ্তি নিয়ে।
আপনার মতামত লিখুন :