রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

‘সিঙ্গুর থেকে টাটাদের তাড়িয়েছে সিপিএম, আমরা বরং চাষীদের জমি ফেরত দিয়েছি’! দাবি মমতার

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২২, ০৪:৩১ পিএম | আপডেট: অক্টোবর ১৯, ২০২২, ১০:৩১ পিএম

‘সিঙ্গুর থেকে টাটাদের তাড়িয়েছে সিপিএম, আমরা বরং চাষীদের জমি ফেরত দিয়েছি’! দাবি মমতার
‘সিঙ্গুর থেকে টাটাদের তাড়িয়েছে সিপিএম, আমরা বরং চাষীদের জমি ফেরত দিয়েছি’! দাবি মমতার

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ফের রাজ্য রাজনীতিতে উঠে এল সিঙ্গুরের প্রসঙ্গ। রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সিঙ্গুরকে কেন্দ্র করে আবারও একবার সরগরম বাংলার রাজনীতি। বুধবার শিলিগুড়িতে বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠান থেকে শিল্প নিয়ে বলতে গিয়ে বিস্ফোরক দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘আমি টাটাকে তাড়াইনি। সিঙ্গুর থেকে টাটাদের তাড়িয়েছে সিপিএম। আমি চাই রাজ্যে বিনিয়োগ হোক।’

রাজ্যে শিল্পে বিনিয়োগ এবং শিল্পের পরিবেশ নিয়ে বিরোধীরা বারবার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করেছে। এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য নিয়ে শুরু হয়ে গেছে রাজনৈতিক তরজা। স্বাভাবিকভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যকে একযোগে মিথ্যে বলে উড়িয়ে দিয়েছে বাম-কংগ্রেস-বিজেপি। তাঁদের দাবি, ‘মুখ্যমন্ত্রী মিথ্যে বলছেন।’

এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ কেউ মিথ্যে কথা বলে বেড়াচ্ছে। বলছে, আমি টাটাকে তাড়িয়েছি। টাটাকে আমি তাড়াইনি, সিপিএম তাড়িয়েছে।’ তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, ‘জোর করে জমি নেওয়া হয়েছিল। সবার থেকে জোর করে জমি নিয়েছিল। আমি জমি ফিরিয়ে দিয়েছি। জায়গার তো অভাব নেই! কেন জোর করে জমি নেব? এত প্রজেক্ট তো আমরা করেছি, জোর করে তো জমি নিইনি! আমরা চাই সবাই বেঙ্গল ইনভেস্ট করুক। এখানে মানুষের চাকরি হোক।’ পাশাপাশি রাজ্যে শিল্প বিনিয়োগ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি চাই রাজ্যে শিল্প বিনিয়োগ হোক। এখানে শিল্পপতিদের মধ্যে কোনও বৈষম্য করতে চাই না। সবাই সমান সুযোগ পায়।’

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১১ সালে রাজনৈতিক পালাবদলের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা গ্রহণ করেছিল সিঙ্গুরের জমি আন্দোলন। অভিযোগ তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং রাজ্যের শাসকদল বামফ্রন্ট সিঙ্গুরের গ্রামবাসীদের কাছ থেকে জোর করে জমি নিয়েছিল। কারণ সেখানে টাটা গোষ্ঠীর ন্যানো গাড়ির কারখানা নির্মাণ হচ্ছিল। কিন্তু তৎকালীন বিরোধী দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্দোলনের জোরেই জমি চাষিদের জমি ফেরত দিতে বাধ্য হয় টাটারা। বাংলা ছেড়ে গুজরাটে চলে যায় টাটাদের ন্যানোর কারখানা। তারপর থেকেই বাম-কংগ্রেস এবং বিজেপির অভিযোগ একটাই, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্যই টাটারা এ রাজ্য থেকে চলে গিয়েছে। পাশাপাশি আরও অভিযোগ এ রাজ্যে শিল্পের পরিবেশ নষ্ট হয়েছে, শিল্পে বড় বিনিয়োগ হচ্ছে না। বারবার বিরোধী দলগুলি এই অভিযোগ তুলেছে। এদিন সেইসব পুরনো অভিযোগের জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তেমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

অন্যদিকে, এদিন বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাষ্ট্রসংঘ বাংলাকে পর্যটনের গন্তব্য হিসেবে পুরস্কার দিচ্ছে মার্চে আমি সেই সম্মান নিতে যাব। ফলে উত্তরবঙ্গে পর্যটনের উপরে জোর দিতে হবে। এর আগে কন্যাশ্রীর জন্য সম্মান পেয়েছি। আমার চাই উত্তরবঙ্গ নিজের পায়ে দাঁড়াক। মানুষ এখানে আসতে চায়। অনিকদের বলেছিলাম, শিলিগুড়ি, কালিম্পংয়ে সুযোগ সুবিধে বাড়াও। কোচবিহার এখন ভালো পর্যটন কেন্দ্র। আমরা চাই উত্তরবঙ্গের উন্নতি হোক। এখন সরকার অনেক সুয়োগ সুবিধে দিচ্ছে। বারো ক্লাস পাস করলেই ট্যাব পাওয়া যাচ্ছ। দুয়ারে সরকার ফের চালু হচ্ছে। ডিএম, এসপিদের বলব, মানুষ কোনও সমস্যা নিয়ে গেলে তার গুরুত্ব দিয়ে দেখুন। সাংবাদিক বন্ধুদেরও বলব আপনারা সহযোগিতা করুন।’