বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ এক সপ্তাহ আগেই সিবিআই এর আধিকারিকরা গিয়েছিলেন অনুব্রত মণ্ডলের বোলপুরের বাড়িতে। বৃহস্পতিবার বাড়ি থেকেই গ্রেফতার করা হয় বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতিকে। এবার এদিন ফের অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে গেলেন সিবিআই-এর আধিকারিকরা। বুধবার বেলা ১২ টা বেজে ১৭ মিনিট নাগাদ সিবিআইয়ের ৪ সদস্যের প্রতিনিধি দল পৌঁছান বীরভূমের ‘বেতাজ বাদশা’র বাড়িতে।
জানা গিয়েছে, এদিন একাধিক নথি নিয়ে বোলপুরের নিচুপট্টির বাড়িতে যান তদন্তকারীরা। কিন্তু কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের জেরার মুখোমুখি হতে রাজি হননি সুকন্যা। অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করার পরই তাঁর সম্পত্তির খোঁজে তল্লাশি শুরু করে সিবিআই। তদন্তে উঠে আসে অনুব্রত-কন্যা সুকন্যার নাম। পেশায় স্কুল শিক্ষিকা সুকন্যার সম্পত্তির পরিমাণ নিয়ে সিবিআই আধিকারিকদের মনে সন্দেহের উদ্রেক হয়েছে। সামান্য স্কুল শিক্ষিকার এতো সম্পত্তি কীভাবে হল? এই প্রশ্নই তদন্তকারী আধিকারিকদের ভাবাচ্ছে। সিবিআই সূত্রের খবর, সুকন্যা মণ্ডলের নামে এখনও পর্যন্ত বোলপুরেই দশটি সম্পত্তির খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। এই প্রতিটি সম্পত্তিই ২০১৪ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে। এই কারণেই সন্দেহ বেড়েছে তদন্তকারী আধিকারিকদের।
এদিন সুকন্যার এতো সম্পত্তি কীভাবে হল বা কোথা থেকে এল, তা জানতেই বোলপুরের বাড়িতে গিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সিদ্ধান্ত নেন সিবিআই-এর আধিকারিকরা। পাশাপাশি আজই সকালে প্রথমে অনুব্রতর চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। প্রায় ২ ঘণ্টা চলে এই জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব। এরপরই অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে হানির হন সিবিআই-এর আধিকারিকরা। সোজা উঠে যান দোতলায়। সেখানেই ছিলেন কেষ্ট-কন্যা সুকন্যা। কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদ করা যায়নি। মিনিট দশেকের মধ্যেই বেরিয়ে যান সিবিআই-এর তদন্তকারী আধিকারিকরা।
জানা গিয়েছে, সিবিআই-এর আধিকারিকদের জেরা করতে দিতে রাজি হননি সুকন্যা। সুকন্যা জানিয়েছেন, ‘আমি কথা বলার অবস্থায় নেই, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। সদ্য মা-কে হারিয়েছি। বাবা সিবিআই হেফাজতে।’ এই কারণেই ১০ মিনিট পরেই বেরিয়ে যান সিবিআই-এর আধিকারিকরা। এরপর সিবিআই কী পদক্ষেপ গ্রহণ করে সেটাই দেখার।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই সূত্রের খবর, বোলপুরের নীচুপট্টির এলাকায় সুকন্যার নামে ১০ টি সম্পত্তির হদিশ পাওয়া গিয়েছে। উল্লেখ্য, এএনএম অ্যাগ্রোকেম ফুড প্রাইভেট লিমিটেডের অন্যতম ডিরেক্টর সুকন্যা। কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ সালে তৈরি হয় সংস্থাটি। পাশাপাশি জানা গিয়েছে, নীচুপট্টির এলাকায় ১০ টি জমি অনুব্রত-কন্যার নামে রয়েছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি জমি কেনা হয়েছে ভোলে বোম রাইস মিলের নামে। সেই রাইস মিলের মালিক আবার অনুব্রত মণ্ডলের পরিবার। এর অন্যতম অংশীদার আবার সুকন্যা মণ্ডল।
এদিকে, অনুব্রত মণ্ডল এই সম্পত্তির ব্যাপারে কিছু বলছেন না। এমনকি তাঁর কন্যা, আত্মীয় এবং দেহরক্ষী সায়গলের সম্পত্তি নিয়ে জেরা করা হলেও, তিনি কিছুই বলছেন না। সূত্রের খবর, মেয়ের সম্পত্তি নিয়ে কিছু না বলার জন্যই এবার সরাসরি অনুব্রত মণ্ডলের মেয়েকেই জেরা করতে চাইছেন সিবিআই-এর আধিকারিকরা।
জানা গিয়েছে, অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর মেয়ের অ্যাকাউন্টের কাগজপত্র সহ সবকিছু দেখাশোনা করতেন এই মণীশ কোঠারিয়া। এদিকে, সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত অনুব্রত মণ্ডলের অ্যাকাউন্টে তেমন কোনও টাকাপয়সা পাওয়া যায়নি। কিন্তু তাঁর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলের নামে বিভিন্ন কোম্পানিতে বিপুল পরিমাণে টাকা লেনদেনের হদিশ মিলেছে।
আপনার মতামত লিখুন :