বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ লোকসভা নির্বাচনের আগেই ২০২৩-এ রয়েছে বাংলায় পঞ্চায়েত নির্বাচন। তাই ইতিমধ্যেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই ময়দানে নেমে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস, পায়ের তলার মাটি শক্ত করতে। রবিবার জলপাইগুড়ি জেলার মালবাজারে চা শ্রমিকদের সমাবেশে যোগ দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন চা বাগানের শ্রমিকেদের জন্য একাধিক ঘোষণা করেন তিনি। এর পাশাপাশি এদিন তিনি মালবাজারের সভা থেকে দলের রাজ্য থেকে বুথ স্তরের নেতাদের উদ্দেশ্যেও একাধিক বার্তা দিয়েছেন। এদিন তিনি বলেন, ‘রাজ্য নেতা থেকে বুথ নেতারা কেউ যদি ব্যক্তিস্বার্থে দলকে ব্যবহারকে করে তাহলে তার পাশে দল থাকবে না। তবে যারা ইডি সিবিআইযয়ের ভয়ে গিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।’
আজকের শ্রমিকদের সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন অভিষেক। এদিন অভিষেক আসার আগে মাদলের তালে কোমর দোলান মন্ত্রী বুলুচিক বড়াইক, বিধায়ক খগেশ্বর রায় ও ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়রা। উপস্থিত ছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ, আদিবাসী মন্ত্রী বুলুচিক বড়াইক, শ্রম মন্ত্রী মলয় ঘটক সহ জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং, উত্তরদিনাজপুর জেলার তৃণমূল নেতারা। মালবাজার কলোনির মাঠে সভায় উত্তরের চা বলয়ের শ্রমিক সংগঠনের সদস্যদের নিয়ে হয় এই সমাবেশ।
২ দিনের চা-শ্রমিক সম্মেলনে শনিবার রাতে উত্তরবঙ্গ গিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার মালবাজারে সমাবেশে যোগ দিয়েছেন। তার আগে তিনি একপ্রস্ত জনসংযোগ সেরেছেন। পাশাপাশি পুজো দিয়েছেন সেবক কালীবাড়িতে। এরপর দুপুর থেকে শুরু হওয়া সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে উঠে তিনি প্রথমেই সরব হন চা বাগানের শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে। বিশেষত, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তার কোনটাই রাখেনি বলে অভিযোগ তোলেন তিনি। এরপর শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে একগুচ্ছ দাবিদাওয়া তুলে ধরেন কেন্দ্রের মোদী সরকারের কাছে। এদিন তিনি বলেন, ‘চা শ্রমিকদের পাশে আসে তৃণমূল সরকার। শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত চা-শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আমরা সোচ্চার হব। শ্রমিকদের স্বার্থে যতদূর যেতে হয় যাব।’ এর সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ৩ মাসের মধ্যেই শ্রমিকদের হাতে আইডি কার্ড চলে আসবে। এছাড়াও ডিসেম্বরের শেষে উত্তরবঙ্গের বিজেপি বিধায়ক, সাংসদদের বাড়ি ঘেরাওয়ের ডাক দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরে দাবিপূরণ না হলে দিল্লির শ্রম মন্ত্রকে গিয়ে চলবে আন্দোলন, জানিয়েছেন তিনি।
সেই সভা থেকেই নতুন তৃণমূল ঠিক কেমন সেই ব্যাখ্যাও দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘১২ জুলাই নতুন তৃণমূলের কথা বলেছিলাম। সে নিয়ে অনেক জলঘোলা হয়েছে। নতুন তৃণমূল মানে মানুষ যেভাবে তৃণমূলকে দেখতে চাইছে তৃণমূলকে সেভাবেই তৈরি করা হবে। আর এখন দলে কাদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে তা আপনারা দেখতেই পারছেন। কাদের সভাপতি করা হয়েছে। আমরা চাই পঞ্চায়েতে শান্তিপূর্ণ ও অবাধ নির্বাচন হোক। যে তৃণমূল মানুষের জন্য কাজ করতে বদ্ধপরিকর, মানুষ সেই তৃণমূলকে দেখতে চায়। দল এতবড় একটা সংগঠন। চলার পথে কিছু ভুল ত্রুটি থাকতেই পারে। কিন্তু, ভুলের সংশোধন দল করছে কিনা সেটাই দেখতে হবে।’
এরপরই দলের নেতাদের সতর্ক করে এবং কড়া বার্তা দিয়ে অভিষেক বলেন, ‘রাজ্য নেতা থেকে শুরু করে বুথ স্তরে নেতারা কেউ যদি ব্যক্তিস্বার্থে দলকে ব্যবহার করেন তাহলে তাঁর পাশে দল থাকবে না। অভিযোগ প্রমাণ হলে তাঁর বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নেবে।’ এর সঙ্গে দলবদলুদের কটাক্ষও করেন দলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড। তিনি বলেন, ‘যাঁরা ইডি সিবিআইয়ের ভয়ে গিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা? কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি।’
আপনার মতামত লিখুন :