বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ রক্ষকই ভক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হল। লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধরের পর, শ্বাসরোধ করে স্ত্রীকে খুনের অভিযোগ উঠল এক পুলিশকর্মী স্বামীর বিরুদ্ধে। এখানেই শেষ নয়, খুনের পর, সকলের অজান্তে বাড়ি থেকে সামান্য দূরে একটি বাগানের মধ্যে গাছে স্ত্রীর দেহ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ।
শুক্রবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের পুকুরিয়া থানার পীরগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের খনিবাথান এলাকায়। এদিকে, এই ঘটনার কথা জানাজানি হতেই এবং বধূর দেহ দেখার পরই, ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন গ্রামবাসী। তাঁদের রোষের হাত থেকে রেহাই পেতে, থানায় আত্মসমর্পণ করে ওই পুলিশকর্মী। এদিকে, এই ঘটনার খবর পেয়েই ওই এলাকায় পৌঁছায় পুলিশ। মৃত গৃহবধূর দেহ উদ্ধারের পর, ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীর নাম জয়ন্ত মণ্ডল। ইতিমধ্যেই মৃত বধূর পরিবার জয়ন্তের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত গৃহবধূর নাম মাম্পি মণ্ডল, বয়স ২৫ বছর। তাঁর বাপের বাড়ি পুরাতন মালদহ থানার পোপরা এলাকায়। সাত বছর আগে খনিবাথান এলাকার বাসিন্দা, পেশায় পুলিশ কর্মী জয়ন্ত মণ্ডলের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। জয়ন্ত এবং মাম্পির ৪ ও ১ বছরের দুই নাবালক পুত্রসন্তান রয়েছে। মৃত গৃহবধূ মাম্পি মণ্ডলের দিদি জানিয়েছেন যে, ডিউটিতে যে লাঠি ব্যবহার করত জয়ন্ত, সেই লাঠি দিয়ে প্রায়ই বোনকে মারধর করত তাঁর স্বামী। মৃত বধূর দিদির আরও অভিযোগ, তাঁর বোন অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত, এমনটাই সন্দেহ ছিল জয়ন্তর। সেই কারণেই প্রতিনিয়ত তাঁর বোনের উপর অত্যাচার চালাত। সেই সন্দেহের বশেই এদিন মাম্পিকে খুন করে ঝুলিয়ে দেয় জয়ন্ত। এমনটাই অনুমান মাম্পির বাপের বাড়ির সদস্যদের।
এদিকে, এদিন অইভাবে ঝুলন্ত অবস্থায় বধূর দেহ দেখার পরই উত্তেজিত হয়ে ওঠে গ্রামের বাসিন্দারা। এরপর জনরোষ থেকে বাঁচতে কোনরকমে থানায় পৌঁছে আত্মসমর্পণ করে অভিযুক্ত। পুলিশ সূত্রে খবর, স্ত্রীকে খুনের কথা স্বীকার করেছে জয়ন্ত মণ্ডল। এই ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা।
এদিকে, এই ঘটনা প্রসঙ্গে পুলিশ জানিয়েছে, খুন করে যে দেহ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে তা স্পষ্ট। কারণ, হাঁটু ভাজ করে বসা অবস্থায় ওই বধূর দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ আরও জানিয়েছে যে, মৃতার পরিবারের করা অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। জয়ন্ত মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কেন সে তাঁর স্ত্রীকে নৃশংসভাবে খুন করল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গৃহবধূর ময়নাতদন্ত রিপোর্টের অপেক্ষায় তদন্তকারীরা।
আপনার মতামত লিখুন :