শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

লটারির টিকিট ঘুরিয়ে দিল ভাগ্যের চাকা! টিকিট কেটে কোটিপতি হরিশ্চন্দ্রপুরের পান বিক্রেতা

আত্রেয়ী সেন | তনুজ জৈন

প্রকাশিত: নভেম্বর ৩, ২০২২, ১১:২৫ এএম | আপডেট: নভেম্বর ৩, ২০২২, ০৫:২৫ পিএম

লটারির টিকিট ঘুরিয়ে দিল ভাগ্যের চাকা! টিকিট কেটে কোটিপতি হরিশ্চন্দ্রপুরের পান বিক্রেতা
লটারির টিকিট ঘুরিয়ে দিল ভাগ্যের চাকা! টিকিট কেটে কোটিপতি হরিশ্চন্দ্রপুরের পান বিক্রেতা

নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদাঃ বিতর্ক আছে, কিন্তু তাতে কী? লটারির টিকিট কেটে যদি রাতারাতি কোটিপতি হওয়া যায়, তাতে ক্ষতি কি? একবার কোটিপতি হতে পারলে, তখন আর কোনও বিতর্কই ধোপে টেকে না। তাই ডিয়ার লটারি নিয়ে বিতর্কের মাঝেই, কোটিপতি মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের বাসিন্দা। লটারির টিকিট রাতারাতি বদলে দিল ভাগ্য এক পান বিক্রেতার।

মাত্র ৩০ টাকার টিকিট কেটে কোটিপতি পিন্টু সাহা। এখন পরিবারে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস ও আনন্দ। রাজ্যব্যাপী ডিয়ার লটারি নিয়ে দুর্নীতিকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক তরজার মাঝেই লটারির টিকিট কেটে কোটি টাকা পুরস্কার জিতলেন মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুরের পিপলা গ্রামের বাসিন্দা পিন্টু সাহা। তবে, টিকিট একজন কিনলেও, ভগ্নিপতি এবং শ্যালক দুজনেই প্রাপ্য অর্থ ভাগ করে নেবেন। কেন?

হরিশ্চন্দ্রপুর থানার অন্তর্গত পিপলা গ্রামের বাসিন্দা পিন্টু সাহার একটি ছোট পানের দোকান আছে। সেই দোকানের বিক্রি থেকে অতি সামান্য আয় হত। সেই রোজগারেই কোনওরকমে চলত সংসার। তবে, জীবনের কঠিন সংগ্রামে কখনও হার মানেননি পিন্টু সাহা। আর তাঁর এই সংগ্রামে সবসময় তাঁর পাশে থাকত শ্যালক কৃষ্ণ দাস। আজ এতদিনের কষ্টের সুফল পাচ্ছেন পিন্টু সাহা। আসলে কথাতেই তো আছে, ‘কষ্ট করলে কেষ্ট মেলে।’ হরিশ্চন্দ্রপুরের এই শ্যালক এবং ভগ্নিপতির ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। রাতারাতি ভাগ্য বদলে গেল তাঁদের।

সন্ধের সময় চা খেতে খেতে একটি লটারির দোকান থেকে পিন্টু সাহা লটারির টিকিট কেনেন। প্রায় ৫.৫০-এর দিকে টিকিট কাটেন তিনি। ৬ পর্যস্ত দোকান খোলা থাকে। কিছুক্ষণ পরে খেলার ফলাফল বেরোতেই হতবাক হয়ে যান ভগ্নিপতি এবং শ্যালক। দুজনেই আনন্দে আত্মহারা। উল্লেখ্য, জানা গিয়েছে, পুরস্কারের এই অর্থ মূল্য সমান ভাগে ভাগ করে নেবে শ্যালক এবং ভগ্নিপতি। লটারি জেতার পরেও তাঁরা একসঙ্গেই থাকছেন তাঁরা, যেভাবে আগে থাকতেন।

এদিকে, এতো টাকা জেতার পরে স্বাভাবিকভাবেই খুশি পরিবারের সকলে। কারণ এক মধ্যবিত্ত পরিবারের কাছে আচমকা একসঙ্গে এতো বিপুল পরিমাণ টাকা এসে গেলে, আনন্দে তাঁদের আত্মহারা হওয়ারই কথা। জানা গিয়েছে, ফলাফল প্রকাশের পরেই, নিজেদের সুরক্ষার কথা ভেবে তাঁরা দৌড়ে যান হরিশ্চন্দ্রপুর থানায়। পুরস্কার পাওয়া পর্যন্ত তাদের সুরক্ষার সব দায়িত্ব হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশের। টিকিট বিক্রেতার নাম রমেন গুপ্তা। তিনি জানিয়েছেন যে, ‘এর আগে প্রথম পুরস্কার অবিক্রিত থেকে গিয়েছিল। সেই আক্ষেপ মিটে গেল।’ এর পাশাপাশি তিনি আরও জানিয়েছেন যে, ‘লটারির টিকিট খেলার মধ্যে কোন দুর্নীতি নেই। এটা ভাগ্যের ব্যাপার, যাদের পাওয়ার ঠিক পাবে। মানুষ কীভাবে কাটবে সেটা মানুষের কাছে। টিকিট কাটলে পুরস্কার পাওয়া যাবে সে রকম কোন কথা নেই।’

অন্যদিকে, যিনি কোটিপতি হলেন, সেই পান বিক্রেতা পিন্টু সাহা কী বলছেন? পিন্টু সাহার কথায়, ‘পানের দোকান করতাম। জীবনে অনেক কষ্ট করেছি। আমার শ্যালকসব সময় আমার পাশে থেকেছে। ভবিষ্যতেও আমরা এই ভাবে থাকবো। সকলকে এক সাথে নিয়ে চলবো।’