বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ বৈশাখের তীব্র দাবদাহ থেকে সদ্যই রেহাই পেয়েছে কলকাতা সহ সমগ্র দক্ষিণবঙ্গ। বৈশাখের শুরুতে দক্ষিণবঙ্গে কালবৈশাখীর দেখা না মিললেও গত শনিবার থেকে দক্ষিণের একাধিক জেলায় প্রবেশ করেছে কালবৈশাখী। পরপর দু’দিন বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টিপাতের দেখা মিলেছে। ফলে গুমোট গরম থেকে সাময়িকভাবে রেহাই পেয়েছে রাজ্যবাসী। তবে এরই মাঝে ফের দেখা দিয়েছে ঘূর্ণিঝড়ের অশনি সংকেত।
জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই দক্ষিণ আন্দামান সাগরে ঘূর্ণাবর্ত তৈরীর অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হলে তা যে কোনও মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই ঘূর্ণিঝড় ক্রমশই উত্তর বঙ্গোপসাগরের দিকে ধাবিত হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হলে তার নাম হবে ‘অশনি’। নামটি শ্রীলঙ্কার দেওয়া। দক্ষিণ আন্দামান সাগরে তৈরি ঘূর্ণাবর্ত পরবর্তীকালে নিম্নচাপে পরিণত হবে। এবং নিম্নচাপ শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড় হয়ে আছড়ে পড়তে পারে সুন্দরবন উপকূলে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আন্দামান সাগরের দক্ষিণ ভাগে আজকের মধ্যেই তৈরি হবে ঘূর্ণাবর্ত। এরপর এই ঘূর্ণাবর্তই শুক্রবারের মধ্যে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে শক্তি সঞ্চয় করে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। পরে এই নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগরে দিকে আসতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আবহাওয়াবিদরা।
তবে নিম্নচাপের অভিমুখ কোন দিকে থাকে তার দিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখছেন আবহবিদরা। আপাতত ঘূর্ণিঝড়ের অভিমুখ ওড়িশা উপকূলের দিকে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়বে বাংলার উপকূলবর্তী এলাকাতেও। এমনটাই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আবহাওয়া দফতর। নিম্নচাপের ফলে পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ইতিমধ্যেই দক্ষিণ আন্দামান সাগর ও বঙ্গোপসাগর অঞ্চলের মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
এর পাশাপাশি আগামী শনিবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। বুধবারও দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে রয়েছে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা। সঙ্গে বইবে ঝোড়ো হাওয়া। আজ সকাল থেকে কলকাতার আকাশ মেঘলা। তবে বাতাসে জলীয় বাষ্প বেশি থাকায় অস্বস্তিও থাকবে। আজ মহানগরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি থাকবে। বাতাসের আপেক্ষিক আদ্রতার পরিমাণ ৬০ থেকে ৯০ শতাংশ।
অন্যদিকে উত্তরপ্রদেশে তৈরি হয়েছে ঘূর্ণাবর্ত। পঞ্জাব থেকে বাংলাদেশে পর্যন্ত বিস্তৃত একটি অক্ষরেখা হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, বিহার উত্তরবঙ্গের উপর দিয়ে গিয়েছে। যার ফলে আগামী কয়েকদিন উত্তর-পূর্ব ভারত ও সিকিমে বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এর পাশাপাশি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে আসাম ও মেঘালয়েও। নাগাল্যান্ড, মনিপুর, মিজোরাম ও ত্রিপুরাতেও হতে পারে ভারী বৃষ্টি। উত্তরের পাশাপাশি কেরল, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা ও পুদুচেরিতেও বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :