বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪

বাবা রিক্সা চালক, বিরাট কৃতিত্ব ছেলের! জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে করলেন স্বপ্নপূরণ

মৌসুমী মোদক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০২২, ০৪:০৯ পিএম | আপডেট: নভেম্বর ১৯, ২০২২, ১১:০৮ এএম

বাবা রিক্সা চালক, বিরাট কৃতিত্ব ছেলের! জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে করলেন স্বপ্নপূরণ

বাবা রিক্সাচালক। অভাব-অনটন নিত্যসঙ্গী। সংসারের তাগিদে কখনও কুলির কাজ করেছেন বাবা। আর সেই সংসারে থেকেই দারিদ্র্যকে জয় করে অসম্ভব মনের জোর ও ইচ্ছেশক্তিতে ভর করে জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেন বিহারের কমলেশ কুমার। বাবা কষ্ট করে লেখাপড়া শিখিয়েছেন ছেলেকে। সেই মর্যাদা রেখে চলতি বছর বিহার জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষায় ৬৪ তম স্থান অর্জন করে সকলকে তাক লাগিয়েছেন বিহারের সিরহানা জেলার কমলেশ। 

কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যাবসায়ের জেরে এই অসাধ্যকে সাধন করেছে কমলেশ। জীবিকার সন্ধানে সপরিবারে দিল্লি চলে যান বাবা। তখন কমলেশ সবেমাত্র স্কুলে ভর্তি হয়েছে। সেই থেকে দিল্লিতেই বাস কমলেশের। লাল কেল্লার পিছনে একটি বস্তিতে পরিবারের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন তিনি। বস্তির ১০ বাই ১০ ঘরে থেকে চালিয়ে গিয়েছেন পড়াশুনা। পরে উচ্ছেদের পর ভাড়া বাড়িতে থাকতে শুরু করেন কমলেশের পরিবার। 

একবার চাঁদনী চক এলাকায় এক পুলিশকর্মী্র সঙ্গে কমলেশের বাবার কথা কাটাকাটি হয়। পুলিশকর্মী সকলের সামনেই বাবাকে চড় মারেন। সেদিন সঙ্গে ছিল ছোট্ট কমলেশ। সেই ঘটনার পরই বিচারক হওয়ার জেদ চাপে কমলেশের মনে। ভাবনা অনুযায়ী শুরু করেন কঠোর পরিশ্রম- অধ্যাবসায়। অবশেষে সাফল্য ছুঁয়ে স্বপ্ন সফল কমলেশের।

দ্বাদশ পাশ করে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন কমলেশ। ২০১৭ সালে, কমলেশ উত্তরপ্রদেশে এবং তারপরে বিহার জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষায় বসেন। অতিমারী পরিস্থিতিতে কমলেশের তিন বছর নষ্ট হলেও, চেষ্টায় কোন ছেদ পড়েনি কমলেশের। হাল না ছেড়েই পড়াশোনা এবং চেষ্টা চালিয়ে যান তিনি।

অবশেষে হল স্বপ্ন পূরণ! সম্প্রতি বিহার জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হতেই খুশির খবর পান কমলেশ। তিনি জানতে পারেন যে ৬৪ তম স্থান অর্জন করে পরীক্ষায় পাস করেছেন। আর বাবাকে এই আনন্দ সংবাদ জানাতেই গর্বে বুক ভরে ওঠে তাঁর। যে ছেলেকে এত কষ্ট করে লেখাপড়া শিখিয়েছেন আজ সে বাবার মুখ উজ্জ্বল করেছ। গর্ব তো হবেই! আর ছেলের সাফল্যের কাহিনী এখন ভাইরাল নেটদুনিয়ায়। তাঁর এই কাহিনী অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে বাকিদের।