বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ রাজ্য বিজেপির অন্দরে কোন্দল অব্যাহত। নেতৃত্ব, কমিটি গঠন নিয়ে, আগে বঙ্গ বিজেপির অন্দরে অশান্তি ছিলই, এবার বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা বর্তমান বিজেপির সর্বভারতীয়-সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষের মন্তব্যে তা আরও চরমে আকার নিল। এদিন তিনি বঙ্গ বিজেপির বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের নেতৃত্বদানের ক্ষমতা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিলেন।
গত বছরই বিধানসভা নির্বাচনের পরে দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে তাঁর জায়গায় বাংলার বিজেপির রাজ্য সভাপতি করা হয় সুকান্ত মজুমদারকে। এরপর থেকে নানা কমিটি গঠন করা হয়েছে। আর এইসব কমিটিতে স্থান পাওয়া নিয়েই শুরু পদ্ম শিবিরে লড়াই। প্রকাশ্যেই দলের সাংসদ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা মতুয়া নেতা শান্তনু ঠাকুর রাজ্য বিজেপির বর্তমান নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। এমনকি দলের বিক্ষুব্ধ নেতাদের নিয়ে বৈঠকও করেছিলেন। সুকান্ত মজুমদারদের জবাব দিয়ে শুরু হয় রাজ্য বিজেপিতে পিকনিক পলিটিক্সের জন্ম। পাল্টা শান্তনুদের বার্তা দিতে ওই শিবিরের দুই নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার এবং ও রীতেশ তিওয়ারিকে দলবিরোধী কাজের দায়ে বরখাস্ত করা হয়। এরপর অবশ্য জয়প্রকাশ মজুমদার তৃণমূলে যোগ দেন।
বিজেপির অন্দরে একদিকে যখন অশান্তি চলছে, সেই সময় বাংলায় একের পর এক উপনির্বাচন, পুরসভার ভোটে ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির। আর এই বিষয়ে দলের একাংশ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছে। এই হারের দায় রাজ্য নেতৃত্বের উপর চাপিয়েছেন দলের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ, আরেক নেতা অনুপম হাজরা। এখানেই শেষ নয়, অনেকে নেতা বিধায়করাই সাম্প্রতিকে দলের নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে চলেছেন। ভাঙনের সেই ধারা অব্যাহত। সৌমিত্র খাঁ, অনুপম হাজরাদের মতো বিজেপি নেতাদের দাবি, বর্তমান নেতৃত্বের সঠিক পরিকল্পনার অভাবেই দলের আজ এই অবস্থা। বারবার দল নির্বাচনে হারার পাশাপাশি ভাঙনের ধারা অব্যাহত।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত রবিবারই ফেসবুক লাইভ করে বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা জানিয়েছিলেন, বাংলায় বিজেপি-র পুরনো নেতাদের কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে। এমনকি রাজ্যে বিজেপির একের পর এক নেতার ইস্তফা দিতে চাওয়ার প্রসঙ্গের উত্থাপন করে বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা বলেছিলেন, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিষয়টি ভেবে দেখা উচিত। এ ব্যাপারে তাঁকে সমর্থন জানিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেছিলেন, ‘অনুপম বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা। তিনি রাজ্য-নেতাদের পরামর্শ দিতেই পারেন। তাঁর কথা রাজ্য-নেতাদের শোনা উচিত।’
কিন্তু এবার সরাসরি এর জন্য সুকান্ত মজুমদারের দিকেই আঙুল তুললেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা বর্তমানে বিজেপির সর্বভারতীয়-সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এদিন তিনি বলেন, ‘সুকান্ত মজুমদার সবে দায়িত্ব পেয়েছেন, ওনার অভিজ্ঞতা কম। যারা এতদিন আন্দোলন করেছেন তাদের গুরুত্ব দেওয়া উচিত। মনে রাখতে হবে যে, যাঁদের বিশ্বাস করে মানুষ রাস্তায় নেমেছেন, পতাকা ধরেছেন, তাদের গুরুত্ব দিতেই হবে। যোগ্য লোকেদের বাদ দিলে হবে না।’
যদিও, দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যের কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেছেন, ‘আমার দলের কোনও নেতার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে আমি কোনও কথা বলি না।’
আপনার মতামত লিখুন :