ছিলেন সাফাইকর্মী। সেখানে থেকে আজ স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার অ্যাসিট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার! কঠিন পরিশ্রম, অদম্য জেদ আর ইচ্ছেশক্তির জেরেই এমন অসাধ্যসাধন করে দেখিয়েছেন প্রতীক্ষা টন্ডওয়ালকার। রূপকথার গল্পকেও যেন হার মানাবে তাঁর এই লড়াইয়ের কাহিনী!
বয়স যখন মাত্র ১৭, তখনই বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়। স্বামী ছিলেন পেশায় এসবিআই কর্মী। বিয়ের এক বছর পরই পরিবারে আসে সন্তান। কিন্তু ভাগ্য সহায় ছিল না! মাত্র ২০ বছর বয়সেই স্বামীকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন প্রতীক্ষা। তারপর থেকেই অদম্য মনোবলকে সঙ্গী করে শুরু লড়াই।
তেমন পড়াশোনা জানতেন না। তাই প্রথমে স্বামীর ব্যাঙ্কে স্যুইপার হিসেবে কাজ পান প্রতীক্ষা। মাস গেলে তখন রোজগারও সামান্য। তাই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পড়াশোনার দিকে মন দেন প্রতীক্ষা। রোজ বাড়ির কাজকর্ম সামলে ব্যাঙ্কের কাজ সেরে বাড়ি ফিরে রাতে শুরু হত পড়াশোনা। আর এভাবেই তিনি পাশ করেন মাধ্যমিক। এরপর ব্যাঙ্ককর্মীদের সহায়তায় উচ্চমাধ্যমিকও পাশ করেন। এরপর ব্যাঙ্কের ক্লার্ক শিপ পরীক্ষাতেও বসেন৷ ১৯৯৫ সালে মনোবিজ্ঞানে স্নাতক হন প্রতীক্ষা। এরপরই সাফল্যের সিঁড়িতে চড়া শুরু।
স্নাতক হওয়ার পর ব্যাঙ্কের প্রবেশানরি অফিসার পদে পরীক্ষাতেও সাফল্য অর্জন করেন প্রতীক্ষা। প্রথমেই স্কেল ৪, এরপর ধাপে ধাপে পদোন্নতি হতে থাকে তাঁর। বিভিন্ন ছোটো-বড় পদ পেরিয়ে এরপর এজিএম পদে উন্নীত হন তিনি। ৫৮ বছর বয়সে এসে ব্যাঙ্কের সাফাইকর্মী থেকে প্রতীক্ষা হয়ে ওঠেন এজিএম।
তবে এরপরও কিন্তু তিনি থেমে থাকেননি৷ এখনও জারি তাঁর লড়াই৷ আর মাত্র বছর দুয়েক পরই অবসর নেবেন প্রতীক্ষা। তবে তার আগে ব্যাঙ্কের সর্বোচ্চ পদে বসতে চান তিনি। এই লক্ষ্যেই আপাতত এগিয়ে চলেছেন প্রতীক্ষা। তাঁর এই নিষ্ঠা এবং দৃঢ় সংকল্পের জেরে যে সাফল্য তার কারণে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়াও গর্বিত। প্রতীক্ষার এই কৃতিত্বকে, তাঁর হার না মানা লড়াইকে বিশেষ ভাবে সম্মানিত করেছে এসবিআই। এই কাহিনী যেন সমাজের কাছে এক অনুপ্রেরণার। এই ব্যতিক্রমী এবং অদম্য সাহসী মহিলাকে তাই কুর্নিশ জানিয়েছেন সকলেই।
আপনার মতামত লিখুন :