বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ এ রাজ্যে বাংলা ভাষার চলচ্চিত্রের থেকে বেশি প্রাধ্যান্য পাচ্ছে হিন্দি, দক্ষিণী, ইংরেজি ও অন্যান্যা ভাষার ছবি। অন্যান্য ভাষার ছবিই এখানকার হলগুলিতে বেশি দেখানো হচ্ছে। এই অভিযোগ অনেকদিন ধরেই উঠছিল। এবার রাজ্যের প্রেক্ষাগৃহগুলিতে গত তিন বছরে, বাংলা ছবি কতোগুলি দেখানো হয়েছে তার রিপোর্ট চেয়ে পাঠালো নবান্ন।
গত সোমবারই, সমস্ত মাল্টিপ্লেক্স এবং সিঙ্গল স্ক্রিন হলগুলিকে চিঠি পাঠানো হয়েছে রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের পক্ষ থেকে। জানানো হয়েছে আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যেই সমস্ত রিপোর্ট তৈরি করে পাঠাতে হবে সিনেমা হলগুলিকে। উল্লেখ্য, ১৯৫৪ সালের পশ্চিমবঙ্গ চলচ্চিত্র আইন অনুযায়ী, রাজ্যের প্রতি সিনেমা হলে বাংলা ছবি দেখানো বাধ্যতামূলক ছিল। এরপর বাংলা সিনেমাকে উৎসাহ দিতে ২০১৮ সালে সেই আইন সংশোধন করে একটি নতুন নির্দেশিকা জারি করে রাজ্য সরকার৷ সেই নির্দেশিকা অনুযায়ী, জিটিএ এলাকা বাদ দিয়ে রাজ্যের সর্বত্র প্রতিটি সিনেমা হল এবং মাল্টিপ্লেক্সকে দুপুর ১২টা থেকে রাত ৯টার মধ্যে বছরে অন্তত ১২০ দিন ন্যূনতম একটি শোয়ে বাংলা সিনেমা দেখানো বাধ্যতামূলক করা হয়৷
আর একথারই ফের উল্লেখ্য রয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে পাঠানো চিঠিতে। ১ এপ্রিল ২০১৯ থেকে ৩১ মার্চ ২০২০, ১ এপ্রিল ২০২০ থেকে ৩১ মার্চ ২০২১, ১ এপ্রিল ২০২১ থেকে ৩১ মার্চ ২০২২ পর্যন্ত তিন আর্থিক বছরের রিপোর্ট পাঠাতে হবে সিনেমা হল কর্তৃপক্ষকে। এমনটাই জানানো হয়েছে রাজ্য সরকারের পাঠানো চিঠিতে। এই চিঠিতে স্বাক্ষর রয়েছে তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের অতিরিক্ত অধিকর্তার।
রাজ্যের সব সিনেমা হল এবং মাল্টিপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ রাজ্য সরকারের এই নির্দেশ মানছে কি না, এবার সেটাই খতিয়ে দেখতে উদ্যোগী হল সরকার৷ শেষ তিন বছরে রাজ্যের সিনেমা হল এবং মাল্টিপ্লেক্সগুলিতে কতগুলি বাংলা সিনেমার শো দেখানো হয়েছেই শুধু নয়, সেই সঙ্গে তা কোন সময়ে তা দেখানো হয়েছে, চিঠি দিয়ে সেই তথ্যই জানতে চেয়েছে রাজ্য৷ আইনক্স, পিভিআর-এর মতো জনপ্রিয় মাল্টিপ্লেক্স চেনগুলিকে যেমন রাজ্য সরকারের এই চিঠি দেওয়া হয়েছে, তেমনই সব সিঙ্গল স্ক্রিন সিনেমা হল মালিকদেরকেও এই চিঠি পাঠানো হয়েছে৷ আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে এই তথ্য রাজ্য সরকারের কাছে জমা দিতে হবে৷
প্রসঙ্গত কিছুদিন ধরেই অভিযোগ উঠছিল যে, রাজ্যের সিনেমা হলগুলিতে বাংলা সিনেমাকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে না। এমনিতেই করোনা অতিমারির জেরে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে বিনোদন জগতে। দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল সিনেমা হলগুলি। কিন্তু এখন পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। মানুষ ফের হলমুখি হচ্ছে। যা ফের আশা যোগাচ্ছে। তাও অনেক ক্ষেত্রেই সুবিধা পাচ্ছেন না বাংলা ছবির নির্মাতারা। তাঁদের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে যে, বাংলা ছবি সেভাবে দেখাচ্ছেন না হল মালিকরা, যতোটা অন্যান্য ভাষার ছবি দেখানো হচ্ছে। এই সমস্যা এড়াতেই এবার রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে, এমনটাই মনে করা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :