নিজস্ব প্রতিবেদন, বর্ধমানঃ রাজ্যে একের পর এক বিদ্যুৎস্পৃষ্ট মৃত্যুর ঘটনা ঘটেই চলেছে। এবার আরও একবার রাজ্যে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। এবারের ঘটনাস্থল পূর্ব বর্ধমানের গলসি। এবার বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল খোদ বিদ্যুৎ দফতরের এক ঠিকা কর্মীর। পাশাপাশি আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও একজন ঠিকাকর্মী। জানা গিয়েছে, এদিন পূর্ব বর্ধমান জেলার গলসি থানা এলাকার খানোমোড়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
এই মর্মান্তিক খবর ছড়িয়ে পড়তেই শোকের ছায়া নামে গোটা এলাকায়। জানা গিয়েছে, গলসির খানোমোড়ের কাছে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে বিদ্যুৎ দফতরের ঠিকা কর্মী বছর ২৭ এর সনৎ বাগদির। সনৎ বাগদি গলসি ১ ব্লকের লোয়া কৃষ্ণরাম গ্রাম পঞ্চায়েতের মউ গ্রামের বাসিন্দা। অপর আহত ঠিকাকর্মীর নাম সুমন কুমার বাগদি। এই মুহূর্তে সুমন বাগদি বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাঁর অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার বিকেলের দিকে খানোমোড়ের কুলিগড়িয়ার ফিটারে ডিপিতে কাজ করছিলেন একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী সনৎ এবং ওই পঞ্চায়েত এলাকার ফতেপুরের বাসিন্দা সুমন কুমার বাগদি। দুজনেই বিদ্যুতের খুঁটিতে উঠে ১১ হাজার ভোল্টের তার রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করছিলেন। সেই সময়ই হঠাৎ করেই লাইনে বিদ্যুৎ চলে আসে। আর তার জেরেই সঙ্গে সঙ্গে ওই দুজন ঠিকাকর্মী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন এবং খুঁটিতে ঝুলে যান।
এরপর স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় পুলিশ দুই ঠিকাকর্মীকে উদ্ধার করে। সনৎ বাগদিকে গুরুতর অবস্থায় পুরষা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলেও, শেষরক্ষা করা সম্ভব হয়নি। চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। অন্যদিকে, সুমন কুমার বাগদির অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায়, তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতি করা হয়।
অন্যদিকে, বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে যে, দফতরের নির্দেশে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করেই কাজ করছিলেন ওই ঠিকাকর্মীরা, তারপরেও এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে গেল। তবে, কীভাবে এমন ঘটনা ঘটল, সেটা এখনও স্পষ্ট নয় বিদ্যুৎ দফতরের কাছে। বিদ্যুৎ দফতরের বর্ধমান নর্থ ডিভিশনের ডিভিশনাল ম্যানেজার ইমদাদুল মণ্ডল জানিয়েছেন, যে জায়গায় কাজ চলছিল, সেখানে একাধিক উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন লাইন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, কেউ বা কারা জেনারেটার চালানোর জন্যই হয়তো এই ঘটনা ঘটেছে৷ তবে, তদন্ত সম্পূর্ণ হওয়ার পরেই দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ বলা যাবে। পাশাপাশি কর্মীরা নিরাপত্তা সামগ্রী ব্যবহার করছিলেন কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিদ্যুৎ দফতরের পাশাপাশি কীভাবে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা, তা জানতে ইতিমধ্যেই গলসি থানার পুলিশও আলাদা করে তদন্ত শুরু করেছে।
আপনার মতামত লিখুন :