নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহঃ শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে জেরবার রাজ্য সরকার। এই দুর্নীতির অভিযোগকে কেন্দ্র করে বিরোধীরা বারবার রাজ্য সরকারকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করছে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই এই দুর্নীতির তদন্ত করছে। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে খোদ তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারী এবং তাঁর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর নামও। ইতিমধ্যেই হাইকোর্টের নির্দেশে অঙ্কিতা চাকরি থেকে বরখাস্ত হয়েছেন শুধু নয়, নিয়োগের দিন থেকে এপর্যন্ত যা বেতন পেয়েছেন, তা দুই কিস্তিতে ফেরত দেওয়ার নির্দেশও দেয় তাঁকে কোর্ট। যার মধ্যে প্রথম কিস্তির টাকা তিনি দিয়েও দিয়েছেন।
এদিকে, এই পরিস্থিতে ফের একবার আপার প্রাইমারিতে চাকরি দেওয়ার নাম করে আর্থিক প্রতারণার আরও একটি অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে মালদহ জেলার হরিশ্চন্দ্রপুরে। আপার প্রাইমারিতে শিক্ষকতার চাকরি দেওয়ার নাম করে সাড়ে ১৪ লক্ষ টাকা আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে হরিশ্চন্দ্রপুর-২ নং ব্লকের সুলতান নগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ডহরা গ্রামের বাসিন্দা মহিদুর রহমান ওরফে বাদল নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে।
অন্যদিকে প্রতারণার শিকার হয়েছেন খোদ এক তৃণমূল নেতা। জানা গিয়েছে, হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নং ব্লকের সাদলিচক গ্রাম পঞ্চায়েতের নতুন সাদলিচক গ্রামের বাসিন্দা তথা পঞ্চায়েতের তৃনমূলের যুব সভাপতি আরজাউল হক এই প্রতারণার শিকার হয়েছেন। ইতিমধ্যেই প্রতারিত তৃণমূল নেতার বাবা মহম্মদ সাজাহান হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন প্রতারক মহিদুর রহমান ওরফে বাদলের বিরুদ্ধে।
তৃণমূল নেতা আরজাউল হকের বাবা মহম্মদ সাজাহান জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে ২০১৯ সালে আপার প্রাইমারি টেট পরীক্ষায় পাশ করে এবং ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাক পায়। তবে, চাকরি পেতে তিনি সফল হননি। সেই সুযোগে প্রতারক বাদল চাকরি করিয়ে দেওয়ার নাম করে তাঁর ছেলের থেকে তিন কিস্তিতে সাড়ে ১৪ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। কিন্তু তাতেও চাকরি দিতে পারেনি। এরপর আরজাউল বঝতে পারেন যে, তিনি প্রতারিত হয়েছেন। এরপর টাকা চাইতে গেলে, ওই যুবক টালবাহানা শুরু করে। গ্রামে এই নিয়ে সালিশি সভাও বসানো হয়। এরপর দুই কিস্তিতে ২ লাখ টাকা ফেরত পেলেও, এখন বাকি সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা দিতে অস্বীকার করছে প্রতারক মহিদুর রহমান ওরফে বাদল। জানা গিয়েছে, বারবার চেষ্টা করেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। এমনকি তার সন্ধানও মিলছে না।
মহম্মদ সাজাহান আরও জানিয়েছেন যে, শুধুমাত্র তাঁর ছেলেই প্রতারিত হয়, হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকার বেশ কয়েকজন শিক্ষিত যুবক-যুবতীর থেকেও টাকা নিয়েছে ওই যুবক। কিন্তু তাঁরা ভয়ে অভিযোগ করতে পারছেন না। আবার এর আগেও বিভিন্ন দফতরে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে চাকরি করিয়ে দিয়েওছে সে। এখন বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীদের আশা, মহিদুর রহমান একা নয়, তবে সে গ্রেফতার হলেই আসল লোকের নাম এবং আরও যারা যারা এর নেপথ্যে আছে তাদের সকলের নাম সামনে আসবে। যারা টাকার বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অসাধু ব্যবসা করে।
আপনার মতামত লিখুন :