বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ সামনেই রয়েছে রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। এদিকে, পঞ্চায়েত নির্বাচন আসতেই তোলাবাজি নিয়ে জনমানসে ক্ষোভ মেটানোর চেষ্টা শুরু করছে তৃণমূল কংগ্রেস। এবার একই মঞ্চ থেকে তোলাবাজি কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না বলেই বার্তা দিলেন পুলিশ সুপার ও স্থানীয় বিধায়ক। এমনকি দলের নাম করে যে তোলাবাজি চলে, তাও ফাঁস করে দিলেন বর্ধমানের দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস।
শনিবার বর্ধমানের লোকসংস্কৃতি মঞ্চে টোটোচালকদের একটি সম্মেলনের আয়োজন করেছিল জেলা প্রশাসন। সেই সম্মেলনেই পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন প্রকাশ্যে তোলাবাজির বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিলেন। তিনি সম্মেলনে বলেন, ‘কোনও তোলাবাজি চলবে না। বার বার বললাম। আমি দেখতে চাইছি বর্ধমান শহরে কে কত বড় গুন্ডা আছে। আমার কাছে অভিযোগ ছিল স্টেশনের বাইরে কেউ তোলাবাজি করে। অ্যারেস্ট করা হয়েছে? আর যদি কাউকে দিয়েছেন, আপনাদের বিরুদ্ধে কেস করব। এক পয়সা কাউকে দেবেন না। কীসের জন্য তোলা দেবেন? কোনও তোলাবাজি চলবে না। এর পর যদি কেউ তোলা চায় আমার অফিসে আসবেন। এসে আমাকে বলবেন। কিন্তু এসব অপদার্থতা চলবে না।’ পুলিশ সুপারের এই মন্তব্যের সঙ্গে সঙ্গেই টোটো চালকদের মধ্যে হাততালির ধুম পড়ে যায়। এখানেই শেষ নয়, পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, ‘স্টেশন বাজারই হোক আর তেলিপুকুরই হোক, কোথাও তোলাবাজি চলবে না। এরপর কেউ তোলাবাজি করলে আমার অফিসে এসে সরাসরি আমাকে বলবেন।’
স্থানীয় বিধায়ক খোকন দাস শনিবারের সভায় তোলাবাজি প্রসঙ্গে বলেন, ‘কেন আপনারা টাকা দেবেন? কেউ কোথাও এক পয়সাও দেবেন না। কেউ টাকা চাইলে আপনারা থানায় অভিযোগ করবেন, প্রশাসন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’ বর্ধমান রেল স্টেশন চত্বরে প্রতিদিন টোটো পিছু ১০ টাকা করে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। টোটো ওয়েলফেয়ারের নামে সেই টাকা পরে এলাকার প্রভাবশালী নেতার পেকেটে যায় বলেই অভিযোগ। শনিবার বর্ধমান শহরে টোটো চলাচলে শৃঙ্খলা ফেরাতে সংস্কৃতি লোকমঞ্চে এক সভার আয়োজন করা হয়েছিল। এই সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। সভায় ছিলেন পরিবহন দফতরের আধিকারিকরাও। সেখানেই টোটো চালকদের উদ্দেশ্যে বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক বলেন যে, কোথাও কোনও টাকা দেবেন না। এরপরই এই প্রসঙ্গে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দেন পুলিশ সুপার।
এদিকে, পুলিশের সুপারের এই বক্তব্যকে ‘বিলম্বিত বোধদয়’ বলে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। এ প্রসঙ্গে স্থানীয় এক বিজেপি নেতা জানিয়েছেন, ‘সব ক্ষেত্রে তোলা দিতে দিতে মানুষের মনে যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে পাহাড়প্রমাণ ক্ষোভ জমেছে তা শাসকদলের নেতারা টের পাচ্ছেন। তাই এখন ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমেছেন তাঁরা। বর্ধমান স্টেশনে একটা টোটো নামাতে গেলে ২০ – ৫০ হাজার টাকা দিতে হয় ইউনিয়নকে। তবেই তার লিস্টে নাম ওঠে। এখন পুলিশ সুপার, বিধায়ক বলছেন টাকা দেবেন না। তোলাবাজি চলবে না। যে টাকা ইতিমধ্যে লুঠ হয়েছে সেটা আগে ফেরত দিন। শুধু তোলাবাজদের গ্রেফতার করলে চলবে না। ও তো আজ গ্রেফতার করেছে, ভোট মিটলে ছেড়ে দেবে।’
আপনার মতামত লিখুন :