বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন পাহাড়ের আর্থিক উন্নয়নের রূপরেখা তৈরি করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পর্যটকদের কাছে ‘পাহাড়ের রানি’কে কীভাবে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা যায় তার উপায় বলে দেওয়ার পাশাপাশি কর্মসংস্থানের রাস্তারও হদিশ দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সমতলের সিলিকন ভ্যালির মতোই পাহাড়েও আইটি হাব তৈরির প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। দরকার পড়লে আইটি সংস্থাগুলির সঙ্গে রাজ্যের পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হবে। মঙ্গলবার জিটিএ-এর নির্বাচিত প্রতিনিধিদের শপথগ্রহণের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন প্রথমেই জিটিএ-এর চেয়ারম্যান পদে শপথ নেন অনীত থাপা। পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই নির্বাচন হয়েছে বলে জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘এত শান্তির ভোট এর আগে কখনও পাহাড়ে হয়নি। পাহাড়ে শান্তির জন্যই GTA ভোট। গত ১০ বছরে GTA-কে ৭ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।’
সেই মঞ্চ থেকে পাহাড়ের যানজট, খাওয়ার জলের সমস্যার সমাধান থেকে শুরু করে কর্মসংস্থান নিয়েও একাধিক ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন পাহাড়কে ঢেলে সাজানোর কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে এক নতুন দার্জিলিং গড়ার স্বপ্ন দেখালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এবার দেখা নেওয়া যাক, মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণায় কী কী বললেন। এদিন মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, ২০০ একর জমিতে নতুন শিল্পনগরী গড়ে তোলা হবে। সেই শিল্প নগরীতে থাকবে হোম স্টে, শপিং মল, ওয়্যার হাউজ এবং দার্জিলিং- এ আসা পর্যটকদের জন্য থাকার জায়গা। সেই সঙ্গে আইটি হাব হবে উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, কার্শিয়াং ও কালিম্পংয়ে।
অন্যদিকে, এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যারা পাহাড়ে ফুটপাতে দোকান দেন, তাঁদের জন্য তৈরি হবে বড় দোকান। এর ফলে কমবে যানজটের সমস্যা। পাশাপাশি জীবিকার সুরক্ষাও পাবেন ওই দোকানদাররা। মংপুতে হবে হিল ইউনিভার্সিটি। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়া ক্যাম্পাস হবে পাহাড়বাসীর জন্য। আবার ডাওহিলে হবে এডুকেশন হাব। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, দার্জিলিংয়ে হর্টিকালচারের হাব তৈরি হতে পারে। সেই সঙ্গে হবে মাল্টি-লেভেল কার পার্কিং।
এদিকে, কার্শিয়াং থেকে রোহিনী পর্যন্ত তৈরি হচ্ছে রোপওয়ে। অন্যদিকে, চা-বাগানের ভিতর পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে পাহাড়ে আরও বেশি করে পর্যটক টানতে তৈরি হবে হোম স্টে। পাহাড়ে ভূমিকম্পের কারণে ক্ষতি ঠেকাতে বিশেষ পরিকল্পনা করছে তৃণমূলশাসিত রাজ্য সরকার।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পাহাড়ে পানীয় জলের সমস্যা একটা বড় সমস্যা। রিজার্ভার তৈরি করে ঝর্ণার জল সংরক্ষণের ভাবনা-চিন্তা চলছে। সেক্ষেত্রে ছোট ছোট ট্যাঙ্ক কিনে ঝর্নার জল সংরক্ষণ করা যেতে পারে বলে মত মুখ্যমন্ত্রীর। তিনি এও জানিয়েছন যে, পাহাড়ে জলের প্লান্ট তৈরি হবে। এখানেই শেষ নয়, মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, পাহাড়ে মহিলারা গাড়ি চালাতে চাইলে, গাড়ি কেনার জন্য ঋণ দেবে সরকার। বক্তব্যের শেষে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সুস্থ থাকুন। বিশ্বাস রাখুন আমি আপনাদের দখল নিতে আসব না, আমি ভালবাসতে আসব।’
আপনার মতামত লিখুন :