বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়। একথা আরও একবার প্রমাণ করে দেখালো বীরভূমের এক যুবক। তাঁর উপরই সংসারের দায়িত্ব। এই গুরুদায়িত্বের মধ্যেও পড়াশোনার কথা ভুলে যায়নি সে। সকালে মাছ বিক্রি করে সংসারের অন্নের জোগাড় করার পর, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছে দেবাশীষ দাস।
বীরভূমের সিউড়ি এক নম্বর ব্লকের অন্তর্গত কড়িধ্যা গ্রাম পঞ্চায়েতের কালিপুর গ্রামের বাসিন্দা দেবাশীষ দাস। বাবা-মা নেই। তাই ছোট থেকেই দিদার কাছেই মানুষ দেবাশীষ। তবে, সেই দিদার এখন অনেক বয়স হয়েছে। এই বয়সে এখন আর ভারী করার কাজ করার মতো শারীরিক ক্ষমতা নেই তাঁর। এই পরিস্থিতিতে লকডাউনের সময় থেকেই দেবাশীষ মাছ বিক্রি করে সংসারের হাল ধরে। আবার বাড়তি অর্থের টানে মাছ বিক্রির পাশাপাশি ক্যাটারিংয়ের কাজেও ছুটে যায় উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী দেবাশীষ। কষ্টের মধ্যেও পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে সে। এই বছর সে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে।
দেবাশীষ নিজের এলাকার কড়িধ্যা যদুরায় মেমোরিয়াল পাবলিক এন্ড ইনস্টিটিউশন উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র। ২০২০ সালে করোনা সংক্রমণ এবং লকডাউন জারি হতেই, শুরু হয় অর্থসঙ্কট। তখন থেকেই দেবাশীষ মাছ বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেয়। আর্থিক সমস্যার কারণে সে সময় লেখাপড়া বন্ধ করে দেবে বলেই ভেবেছিল দেবাশীষ। কিন্তু স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সাহায্যে এবং তাঁদের অনুপ্রেরণায় পুনরায় স্কুলে ফিরে আসে সে। পড়াশোনা না ছাড়ার ব্যাপারে কথা দেয়।
এরপর থেকেই প্রতিদিন খুব সকালে সিউড়ি থেকে মাছ কিনে নিয়ে এসে পাড়ায় পাড়ায় বিক্রি করার পর স্কুলে গিয়ে পড়াশোনা করে সে। এভাবেই সে উচ্চমাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষায় বসে পাশ করে এবারে উচ্চমাধ্যমিক দিচ্ছে সে। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী দেবাশীষ দাসের এমন অদম্য লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা থেকে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। প্রত্যেকেই চান দেবাশীষ ভালো রেজাল্ট করে নিজের পায়ে দাঁড়াক। অনেকের অনুপ্রেরণা বীরভূমের দেবাশীষ।
আপনার মতামত লিখুন :