বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ অদম্য জেদ। আর সেই জেদ থেকে শেষ পর্যন্ত সরে আসেনি বলেই অবশেষে লড়াইয়ে জিততে পারল আরামবাগের ছাত্রী রূপসা রুইদাস। এবারের মাধ্যমিকের পরিক্ষার্থী সে। কিন্তু পরীক্ষা দিতে বাধার সম্মুখীন হয় সে। রূপসার বাড়ি আরামবাগের বলাইচকে। পুলিশ পাশে এসে না দাঁড়ালে, হয়ত এ বছরটা নষ্টই হত। কিন্তু রূপসার লড়াইকে কুর্নিশ না জানিয়ে উপায় নেই। সে হাল ছাড়েনি।
আরামবাগের বলাইচকে রূপসার বাড়ি। সেখানে সে ঠাকুমা, দাদু, কাকা, কাকিমারা থাকেন। তবে, রূপসার বাবা মারা গিয়েছেন মাত্র ছয় মাস আগেই। এরপরই সমস্যার সূত্রপাত। অভিযোগ, রূপসার মা রুমাদেবীকে হেনস্থা করা শুরু করে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। সেই জন্যই একসময় ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে২ বেরিয়ে আসেন রুমাদেবী।
নিজেরা চলে এলেও, ছেলে-মেয়ের বহু প্রয়োজনীয় নথি থেকে যায় বলাইচকের বাড়িতেই। এইসব প্রয়োজনীয় নথির মধ্যে ছিল রূপসার মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড, রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট ইত্যাদি। রূপসার অভিযোগ, পরীক্ষার দিন সকাল অবধি তাকে অ্যাডমিট কার্ড দিতে রাজি হননি তার ঠাকুমা ও অন্যান্যরা। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছায় যে, রূপসার পরীক্ষায় বসাটাই একপ্রকার অনিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। এরপরই রূপসা সমস্যার সমাধান করতে আরামবাগ থানায় হাজির হয়।
সমস্ত বিষয়টি খুলে জানায় রূপসা। এরপর পুলিশ তৎপর হতে বিন্দুমাত্র সময় নেয়নি। আরামবাগ থানার প্রচুর পুলিশ বলাইচক গ্রামে পৌঁছায়। সঙ্গে ছিল মাধ্যমিক পরিক্ষার্থী রূপসাও। সেখানে পৌঁছেই বাড়িতে তল্লাশি চালায় পুলিশ। তাতেই উদ্ধার হয় অ্যাডমিট কার্ড। পুলিশ অ্যাডমিট কার্ড উদ্ধার করেই ওই পরীক্ষার্থীকে জয়রামপুর হাইস্কুলে নিয়ে যায়। জয়রামপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ। এরপরই রূপসা পরীক্ষায় বসে।
অন্যদিকে, রূপসার কথায়, ‘আমার অ্যাডমিট কার্ড পাচ্ছিলাম না। পুলিশের সহযোগিতায় আমি তা ফিরে পেয়েছি। আমি আবার পরীক্ষা দিতে পারব। আমি তাতেই খুব খুশি। বাড়ি থেকেই অ্যাডমিট কার্ড বের করতে দিচ্ছিল না। এর থেকে খারাপ লাগার আর কী থাকতে পারে। তবে, সব শেষে পরীক্ষায় বসব, তাতেই খুশি আমি।’ আবার রূপসার মা রুমা দেবীর কথায়, ‘আমার মেয়ে এখন পরীক্ষা দিচ্ছে। পুলিশ গিয়ে তালা ভেঙে রেজিস্ট্রেশন কার্ড, অ্যাডমিট কার্ড উদ্ধার করেছে। পুলিশ নিয়ে এসে আমার মেয়েকে পরীক্ষার ব্যবস্থা করে দিয়েছে।’
আপনার মতামত লিখুন :