স্বামী স্ত্রীর দাম্পত্য কলহের জেরে চরমতর মর্মান্তিক নিদর্শন! সাত বছরের শিশুকন্যাকে মেরে আত্মঘাতী হলেন পেশায় এএসআই বাবা। ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়া জেলার চাকদহ থানার বিষ্ণুপুর এলাকায়। আজ দুপুর ১টা নাগাদ সোশ্যাল মিডিয়ায় `স্যরি মা` বলে দুঃখ প্রকাশ করে একটি ভিডিও আপলোড করে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়া সাত বছরের একমাত্র শিশু কন্যাকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে দেন বাবা। এরপর তাকে কোলে নিয়েই নিজেও গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হন। ঘটনার জেরে এলাকা জুড়ে ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য।
জানা গিয়েছে, আত্মঘাতী ব্যক্তির নাম, জয়ন্ত সরদার। বয়স আনুমানিক ৩৭ বছর। পেশায় বেলঘড়িয়া জিআরপি এএসআই হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি। এলাকাবাসীর দাবী, বছর দশেক আগে বিয়ে হন জয়ন্ত সরদার নামে ওই যুবকের। তবে বিয়ের পর থেকে স্ত্রী মৌসুমী সরদারের সঙ্গে পারিবারিক অশান্তি লেগেই থাকত। অভিযোগ, স্ত্রী তাঁর ওপর পরকীয়ার সন্দেহ করতেন। স্বামীকে মিথ্যা বদনাম দিতেন। তাই নিয়ে মাঝেমধ্যেই বিবাদ চরমে উঠত। সেই কারণেই দীর্ঘদিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন জয়ন্ত সরদার।
স্থানীয় সূত্রে খবর, এদিন সকাল থেকেই স্ত্রী বাড়িতে ছিলেন না। পাশের বাড়িতে দুই দাদাকে খেতে দেওয়ার পর বড় বৌদি মোবাইলে জয়ন্তের সেই স্ট্যাটাস দেখে ছুটে যান দেওরের ঘরে। সেখানেই দুজনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেন তিনি। এরপর দুই দাদা এসে দড়ি কেটে নামানোর চেষ্টা করলেও ততক্ষণে সবশেষ! খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে চাকদহ থানার পুলিশ। তারাই মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
পুলিশের অনুমান, প্রথমে একমাত্র মেয়েকে ফাঁস লাগিয়ে মেরে ফেলেন বাবা। এরপরে নিজেও গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। আজ ডিউটি থেকে ফেরার পর, মেয়েকে নিয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটান ওই পুলিশকর্মী। প্রতিবেশীরা জানান, জয়ন্ত সরদারকে সন্দেহবশত প্রতিনিয়ত অপমান করতেন স্ত্রী। এমনকি বাচ্চা মেয়েটিকে পর্যন্ত কোনও প্রতিবেশীর বাড়িতে যেতে দিত না ওই গৃহবধূ।
অনেকের সন্দেহ, আজ স্ত্রীর বাড়িতে না থাকায় হয়তো তিনি কিছু জানতে পেরেছিলেন যা হয়তো ব্যক্ত করতে পারেননি। তার জেরেই এই মর্মান্তিক কাণ্ডটি ঘটান তিনি। গোটা ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা এলাকা জুড়ে। এলাকাবাসীর দাবী, পুলিসকর্মীর স্ত্রীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। এদিকে, গোটা ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আপনার মতামত লিখুন :