বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ দুজনেই তৃণমূলের নেতা। একজন জেলা সভাপতি আর অপরজন রাজ্যের মন্ত্রী। একজন এই মুহূর্তে গরু পাচার মামলায় জেলবন্দি আর অপরজনের তিন-তিনটি বাড়িতে আজই সিবিআই হানা দেয়। গরু পাচার মামলায় বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল সিবিআই-এর হাতে গ্রেফতার হয়ে এই মুহূর্তে আদালতের নির্দেশে জেলবন্দি। এদিকে, কয়লা পাচারকাণ্ডে বুধবার সকাল থেকেই রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটকের তিনটি বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালায় সিবিআই- এর আধিকারিকেরা।
এদিন এই প্রসঙ্গেই কড়া প্রতিক্রিয়া দিলেন প্রথমজন অর্থাৎ অনুব্রত মণ্ডল। মন্ত্রী মলয় ঘটকের বাড়িতে তল্লাশি অভিযানের কড়া সমালোচনা করেন এদিন কেষ্ট। এমনকি তিনি মন্ত্রীর বাড়িতে তল্লাশি ‘অন্যায়’ বলে মন্তব্য করেছেন। এদিন আসানসোল বিশেষ সংশোধনাগারে ঢোকার আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এমনটাই বলেন কেষ্ট। তিনি অল্প কথায় তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘অন্যায় হয়েছে।’
উল্লেখ্য, এদিন ফের অনুব্রত মণ্ডলের জামিনের আর্জি খারিজ হয়ে যায়। গরু পাচার মামলায় ফের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে। আগামী ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আসানসোলের বিশেষ সংশোধনাগারেই থাকবেন অনুব্রত। ওই দিন ফের তাঁকে আসানসোলের সিবিআই আদালতে তোলা হবে। প্রসঙ্গত, এদিন ফের অনুব্রত মণ্ডলের জামিনের আবেদন নাকচ করে দেয় বিশেষ সিবিআই আদালত। কোনোভাবেই গ্রাহ্য হল না অসুস্থতার তত্ত্ব। ফলে আগামী ১৪ দিন জেল হেফাজতেই থাকছেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি। গোরুপাচার মামলায় টানা ১৪ দিন জেল হেফাজতে থাকার সময় অনুব্রত মণ্ডল ও ঘনিষ্ঠদের সম্পর্কে বহু তথ্য জোগাড় করেছে সিবিআই। সূত্রের খবর, তদন্তে উঠে এসেছে নামে অথবা বেনামে বিপুল সম্পত্তির মালিক অনুব্রত মণ্ডল। ওইসব তথ্যের উপরে ভিত্তি করেই এদিন অনুব্রতর জামিনের আবেদন নাকচ করে দেয় বিশেষ সিবিআই আদালত।
অন্যদিকে, এদিন সাতসকালেই কয়লা পাচারকাণ্ডে মন্ত্রী মলয় ঘটকের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালায় সিবিআই। বুধবার সকালেই আসানসোলে তাঁর বাড়িতে যান সিবিআই আধিকারিকরা। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ঘিরে ফেলা হয় বাড়ি। এরপরই খানা তল্লাশি শুরু করেন তদন্তকারী অফিসাররা। আপকার গার্ডেনের ২ টি বাড়ির পাশাপাশি চেলিডাঙার পৈত্রিক বাড়ি-সহ মন্ত্রী মলয় ঘটকের মোট তিনটি বাড়িতে তল্লাশি চালান কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তকারী আধিকারিকরা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কয়লা পাচারকাণ্ডে সিবিআই-এর পাশাপাশি অপর কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডিও তদন্ত করছে। মলয় ঘটককে এই মামলায় ইতিমধ্যেই তলব করেছে ইডি। চলতি মাসের ১৪ তারিখ মন্ত্রী মলয় ঘটককে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে ইডি-র তরফে। এর আগে জুলাই মাসেও একবার মলয় ঘটককে ডেকে পাঠিয়েছিল ইডি। কিন্তু সে সময় তিনি ইডি দফতরে হাজিরা দেননি। তারপর এবার ১৪ সেপ্টেম্বর ইডি দফতরে হাজিরা দেওয়ার আগেই তাঁর তিনটি বাড়িতে সিবিআই হানা দিল।
এদিন, সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টে ২০ পর্যন্ত চলে মন্ত্রী মলয় ঘটকের তিনটি বাড়িতে এই তল্লাশি অভিযান। এদিন সিবিআই তল্লাশি নিয়ে মলয়ের ভাই অভিজিৎ ঘটক অভিযোগ করেন, ‘আমাদের সার্চ ওয়ারেন্ট দেখানো হয়নি। অভিযোগপত্রও দেখানো হয়নি। ওঁরা বললেন, সিবিআই থেকে এসেছি, তল্লাশি করতে। আমাদের কোনও জিজ্ঞাসাবাদও করেননি। কোনও কাগজপত্রও নিয়ে যাননি ওঁরা।’ সিবিআই তল্লাশি নিয়ে মন্ত্রীর ভাইয়ের আরও প্রতিক্রিয়া, ‘আমাদের বাড়িতে অনেকেই আইনজীবী। আমি ২৩ বছর ধরে আসানসোল এবং জেলায় ওকালতি করি। আমার স্ত্রী উকিল। আমার পরিবারের দাদু থেকে শুরু করে আমার বাবা স্বনামধন্য উকিল। আমরা সচ্ছল-মধ্যবিত্ত পরিবার। এমন একটা পরিবারে যা থাকার তাই আছে।’
আপনার মতামত লিখুন :