বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ বয়স কী! বয়স তো শুধু সংখ্যা। আসল হল মনের জোর। মনের জোর যদি থাকে, তাহলে যেকোনো বয়সেই অসাধ্যসাধন করা যায়। সেকথাই প্রমাণ করে দেখালেন বছর ৯২-এর এক বৃদ্ধ।
বয়স ৯২, কিন্তু এই বয়সেও, মনে তিনি একজন তরতাজা যুবক। নাম অমলেন্দু সুর। শিলিগুড়ির এই অমলেন্দু সুর এই বয়সে এক ছিনতাইবাজের কলার ধরে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দিলেন। তাঁর এই কাণ্ডে হতবাক খোদ শিলিগুড়ি থানার পুলিশ আধিকারিকরা। অবাক হওয়ারই কথা। এই বয়সে কিনা তিনি এক ছিনতাইবাজকে ধাওয়া করে, তাঁকে ধরলেন, ভাবা যায়! যে কাজ পুলিশের করার কথা, সেই কাজ তিনি করে দেখালেন।
স্ত্রীকে উপহার দেওয়া সোনার হার ছিনতাই হয়ে গিয়েছে বলে কথা, চোরকে তো ধরতেই হবে। হারও ফিরিয়ে আনতে হবে। ভেঙে পড়া শরীর সঙ্গ না দিলেও, মনের যে প্রবল জোর, মন যে ঠকায় না। তাই সময় নষ্ট না করে ছিনতাইবাজকে ধাওয়া করলেন। পরনে ধুতির কোঁচা সামলে, দুষ্কৃতীর পিছনে ছুটলেন। কিছুটা দূরে গিয়ে, ধরেও ফেললেন চোরকে। চোরের কলার ধরে টেনে নিয়েও গেলেন পুলিশের কাছে। বৃদ্ধের এই সাহসিকতাকে কুর্নিশ জানাল শিলিগুড়ি পুলিশ। পরে থানায় অভিযোগ জানাতে এলে, থানার ঘরে বসিয়ে ওই দম্পতিকে মধ্যাহ্নভোজন করিয়ে, গাড়িতে করে তাঁদের বাড়িতে ছেড়ে আসে পুলিশ।
ঠিক কী ঘটেছিল? জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে কাছারি রোডে প্যান কার্ড আনতে গিয়েছিলেন শিলিগুড়ির ডাঙ্গিপাড়ার বাসিন্দা অমলেন্দু সুর ও তাঁর স্ত্রী শিল্পীরানি সুর। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের কাছে শৌচালয়ে গিয়েছিলেন অমলেন্দুবাবু। সেই সময় বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁর স্ত্রী শিল্পীদেবী। অভিযোগ, ওই সময় এক যুবক এসে একথা- সেকথার মধ্যেই তাঁর সোনার হার ছিনতাই করে নিয়ে যায়। শৌচালয় থেকে বেরিয়ে হার ছিনতাইয়ের কথা জানতে পেরেই চোরের খোঁজে ছুট লাগান বৃদ্ধ। ধাওয়া করে হাশমি চকের কাছে ধরে ফেলেন সেই চোরকে। এরপর সেখানেই পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় চোরকে।
পরে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ জানাতে, থানায় হাজির হন বৃদ্ধ দম্পতি। এদিকে, তাঁরা থানায় আসার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ আধিকারিকেরা ঘরে বসান তাঁদের। ধৃত দুষ্কৃতীর কাছ থেকে সোনার হার উদ্ধার করা হয়। এরপর ওই বৃদ্ধ দম্পতির বিভিন্ন অসুবিধার কথাও শোনেন থানার আইসি সুদীপ চক্রবর্তী। তাঁদের ওষুধের প্রয়োজন, সেকথা জানার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁদের জন্য ওষুধও আনিয়ে দেন আইসি।
এরপর দুপুর হয়ে যাওয়ায়, তাঁদের থানার ক্যান্টিনে নিয়ে গিয়ে মধ্যাহ্নভোজন করান এবং থানার গাড়িতেই দম্পতিকে বাড়ি ছেড়ে আসা হয়। এদিন থানায় বসে অমলেন্দু সুর বলেন, ‘স্ত্রীয়ের সোনার হার ছিনতাই হয়েছে জানার পর পিছু নিয়েছিলাম দুষ্কৃতীর। কিছু দূর যেতেই ধরে ফেলি। অনেকেই মারতে গিয়েছিল। কিন্তু পুলিশ ডেকে তাঁকে ধরিয়ে দিই। পুলিশ যেটা ঠিক বুঝবে সেটাই করবে।’
আপনার মতামত লিখুন :