বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ মনের গহনে যে কী চলে, তা বোঝাই দায়! ঠিক যেমন দ্বাদশ শ্রেণির এই ছাত্রের পরিবারের লোক ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি, সামান্য অঙ্ক না মেলার কারণে নিজের জীবন শেষ করে দিতে পারে সে।
হোয়াইট বোর্ডে রয়েছে অমাপ্ত অঙ্ক। দেখে বুঝতে অসুবিধা নেই যে, অঙ্কতি ধাপে ধাপে কষছিল সে। কিন্তু মাঝপথেই আটকে যায়। তাই অসমাপ্ত রয়ে গেছে। এরপরই বোর্ডে লেখা, ‘মা আই কুইট’। এরপরই চরম সিদ্ধান্ত। আর ঘরে ঝুলছে ছেলের ঝুলন্ত দেহ। নিজের বাড়ি থেকেই দ্বাদশ শ্রেণির স্কুলছাত্রের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় শিলিগুড়ির জ্যোতিনগরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পড়াশোনা নিয়ে অত্যাধিক মানসিক চাপ নাকি অন্য কোনও কারণে এমন সিদ্ধান্ত মেধাবী ছাত্রের? কারণ নিয়ে ধোঁয়াশায় পুলিশ। ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে তদন্ত।
পুলিশ সূত্রে খবর, শিলিগুড়ির জ্যোতিনগর এলাকার বাসিন্দা আত্মঘাতী ছাত্র সোমনাথ সাহা। শিলিগুড়ি শিলিগুড়ি বয়েজ স্কুলে দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়ত সোমনাথ। শুরু থেকেই পড়াশোনায় ভাল ছিল সোমনাথ। মাধ্যমিকে সে ৯৩ শতাংশ নম্বর নিয়ে পাশ করেছিল। পদার্থবিদ্যা নিয়ে পড়ে ইচ্ছে ছিল অ্যাস্ট্রোনমি নিয়ে এগনোর। কিন্তু সব স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল। বাড়ি থেকে সোমনাথের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ময়নাতদন্তে পাঠায়।
ময়নাতদন্তের পর বুধবার দুপুরে ওই ছাত্রের দেহ বাড়িতে আসে। তার মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা এলাকা। ছেলেকে হারিয়ে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছেন সোমনাথের মা। অঝোরে কেঁদে চলেছেন বাবা। সোমনাথের বাবা সুবীর সাহা জানিয়েছেন, ‘ছেলে সবসময় উচ্চশিক্ষা নিয়ে খুব চিন্তিত ছিল। মঙ্গলবার দুপুরেও বাড়িতে সবার সঙ্গে সময় কাটায়। এরপর নিজের ঘরে পড়াশোনা করছিল। তারপর বিকেল নাগাদ ওর ঘরে উঁকি দিয়ে দেখি দেহ ঝুলছে। জানিনা কেন এই ঘটনা ঘটাল।’
অন্যদিকে, শিলিগুড়ির ওই ছাত্রের বন্ধুদের দাবি, ছোটখাট বিষয়ে খুব দুশ্চিন্তা করত সোমনাথ। পড়াশোনায় অত্যন্ত মনোযোগী ছিল। অঙ্ক বা অন্য কোনও বিষয়ে পড়াশোনায় সামান্য ঘাটতি হলেও মন খারাপ হত সোমনাথের। ছোট থেকেই কোনও প্রতিযোগিতায় হারলেও, মানসিক অবসাদে ভুগত সে। ওই মেধাবী ছাত্রের সঙ্গে মায়ের সম্পর্ক অত্যন্ত ভাল ছিল। তাই হোয়াইট বোর্ডে মাকে উদ্দেশ্য করে লিখেই আত্মহত্যা বলে মনে করা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :