বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ বৈশাখের তীব্র দাবদাহ থেকে সদ্যই রেহাই পেয়েছে কলকাতা সহ সমগ্র দক্ষিণবঙ্গ। বৈশাখের শুরুতে দক্ষিণবঙ্গে কালবৈশাখীর দেখা না মিললেও গত শনিবার থেকে দক্ষিণের একাধিক জেলায় প্রবেশ করেছে কালবৈশাখী। পরপর দু’দিন বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টিপাতের দেখা মিলেছে। ফলে গুমোট গরম থেকে সাময়িকভাবে রেহাই পেয়েছে রাজ্যবাসী। তবে এরই মাঝে ফের দেখা দিয়েছে ঘূর্ণিঝড়ের অশনি সংকেত। দিল্লির মৌসুম ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি মাসেই ঘূর্ণিঝড়ের মুখোমুখি হতে পারে রাজ্য।
ইন্ডিয়া মেটারোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট বা IMD সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ৫ মে আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে বিচ্ছিন্নভাবে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এর পাশাপাশি ঘন্টায় ৪০-৫০ কিলোমিটার বেগে বইতে পারে ঝড়। এছাড়াও চলতি মাসেই দক্ষিণ-আন্দামান সাগর ও সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে একটি গভীর নিম্নচাপের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যা আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে আরও স্পষ্ট হবে।
এই প্রসঙ্গে IMD-র ডিরেক্টর জেনারেল মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র জানিয়েছেন, বছরে সাধারণত দুটি সময়ে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়। একটা বর্ষা ঢোকার আগে অর্থাৎ মার্চ-এপ্রিল-মে মাস নাগাদ আর অপরটি বর্ষা চলে যাওয়ার পর অর্থাৎ অক্টোবর-নভেম্বর-ডিসেম্বর নাগাদ। তাই মে মাসে রাজ্যে ঘূর্ণিঝড় আসার সম্ভাবনাকে পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। প্রসঙ্গত, গত দু’বছরেই মে মাসে দুটি ঘূর্ণিঝড় তান্ডব চালায় বাংলায়। ২০২০ সালে আম্ফানের তান্ডবে রীতিমতো তছনছ হয়ে যায় রাজ্যের একাংশ। এরপর ২০২১ সালেও ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের দাপটে বিপুল ক্ষতির মুখে পড়ে রাজ্যবাসী।
যদিও বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণাবর্ত পরবর্তীকালে নিম্নচাপে রূপান্তরিত হবে কিনা তা আগে থেকে জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না। কারণ একটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হতে প্রয়োজন সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতা ও অনুকূল পরিবেশ। তাই সবটাই আশঙ্কা করা হচ্ছে। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, কোনও কারণে যদি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয় তবে তা পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকার দিকে যে কোনও সময় ধাবিত হতে পারে।
IMD ছাড়াও একাধিক বেসরকারি আবহাওয়া দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী ১০ মের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকায় একটি ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বাংলায় দুর্যোগের আশঙ্কা সত্যি হলেও হতে পারে। তবে আবহাওয়া দফতরের রিপোর্ট যে সবসময় ঠিক হয় এমনটাও নয়। পরিস্থিতির সঙ্গে তাদের রিপোর্টও পরিবর্তিত হতে থাকে।
তবে দিল্লির মৌসুম ভবনের পূর্বাভাস অনুযায়ী দক্ষিণ আন্দামান সাগর ও দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের ওপর যদি নিম্নচাপ তৈরি হয় তবে তা পরবর্তীকালে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। এরপর পূর্ব বঙ্গোপসাগরে আসার পর ওই নিম্নচাপের অভিমুখ ক্রমশই উত্তর ও উত্তর পূর্ব দিকে এগোতে থাকবে। এরপরই তা শক্তি বাড়িয়ে গভীর নিম্নচাপ ও পরবর্তীকালে ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হয়ে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় এলাকায় আছে পড়তে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :