কথায় বলে, বাঙালির পায়ের তলায় সর্ষে। ঘুরতে যেতে পছন্দ করেন না, এমন মানুষের সংখ্যা হয়তো হাতে গোনা। সুযোগ পেলেই ব্যাগপত্র গুছিয়ে অজানার সন্ধানে বেরিয়ে পড়েন ভ্রমণপ্রেমীরা। একইসঙ্গে বহু মানুষেরই মনে সুপ্ত বাসনা থাকে বিদেশ যাত্রার। জীবনে একবার হলেও বিদেশের কোনও জনপ্রিয় স্থানে ঘুরতে যেতে চান অনেকেই। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সামর্থ্য না থাকায় তা আর হয়ে ওঠে না। পকেট সঙ্গ না দেওয়ায় ইচ্ছেতে কার্যত জল ঢালতে হয়।
তবে জানেন কি আমাদের দেশেও এমন অনেক জায়গা রয়েছে যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হার মানাবে বিদেশকেও। তাই সাধ্যের মধ্যে সাধপূরণ করতে গেলে এই জায়গাগুলোয় ভ্রমণ করতেই পারেন। সেই যে রবি ঠাকুর লিখে গিয়েছেন, "দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া, ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া, একটি ধানের শিষের উপর, একটি শিশিরবিন্দু।" সত্যিই তাই! আমাদের এই দেশে, ঘরের কাছেই এমন সব স্থান রয়েছে যা বিদেশের নামী দামী ট্যুরিস্ট স্পটকেও টেক্কা দিতে পারে। আজ এই প্রতিবেদনে তুলে ধরব তেমনই ৫টি জায়গার কথা, যা আপনাকে সুইজারল্যান্ডকেও ভুলতে বাধ্য করবে!
১. কাশ্মীরের অপর নাম ভূস্বর্গ। পৃথিবীর বুকে স্বর্গ যেন এখানেই নেমে এসেছে। এখানকার হ্রদ, সবুজ তৃণভূমি, বরফে ঢাকা পর্বত, নানা রকম ফুল, প্রাকৃতিক পরিবেশ আপনাকে মুগ্ধ করবেই। এক একটি ঋতুতে কাশ্মীরের রূপ এক এক রকম। যে সৌন্দর্য অনির্বচনীয়, সুইজারল্যান্ডকেও হার মানাতে বাধ্য তা!
২. উত্তরাখণ্ডের এক অতীব সুন্দর জায়গা কৌশানী। যাকে ডাকা হয় `মিনি সুইজারল্যান্ড` নামে। উত্তরাখণ্ডের বাগেশ্বর জেলায় অবস্থিত এই ছোট্ট গ্রামটি নন্দা দেবী, পাঁচচুলা এবং হিমালয় পর্বতের জন্য বিশেষ বিখ্যাত। এক সময় স্বয়ং মহাত্মা গান্ধী এই জায়গাটিকে সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য চোখে লেগে থাকার মত। জীবনের যেকোনো সময়কে চিরস্মরণীয় করে তুলতে একবার কৌশানি থেকে ঘুরে আসতে পারেন।
৩. ভারতের উত্তরাখণ্ডের চামেলী জেলায় অবস্থিত একটি সুন্দর পাহাড়ি গ্রাম আছে। যার নাম আউলি। ভারতের সবথেকে শীর্ষস্থানীয় স্কিইং গন্তব্যগুলির মধ্যে একটি হলো এই আউলি গ্রাম। খাঁড়া পাহাড়, নির্মল বাতাস ও শীতকালে বরফ দেখার শ্রেষ্ঠ জায়গা এটি। দেখে মনে হয় ঠিক যেন এক চিলতে সুইজারল্যান্ড নেমে এসেছে এখানে।
৪. হিমাচল প্রদেশে বারোট নামের একটি উপত্যকা আছে। যার সৌন্দর্যকে স্বর্গীয় বললে কোন ভুল হবে না। এই জায়গাটিকেও তার অপার সৌন্দর্যের জন্য সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে তুলনা করা হয়ে থাকে। যারা উপত্যকা ভালোবাসেন তারা এখানে একবার ঘুরেই আসতে পারেন। এখানে পর্যটকরা ট্রেকিং করতে পারেন, মাছ ধরতে পারেন, ক্যাম্পিং, র্যাপেলিংও উপভোগ করতে পারেন। তাই একখণ্ড সুইজারল্যান্ডের দেখতে একবার চলে যেতে পারেন এই বারোট ভ্যালিতে।
৫. হিমাচল প্রদেশের আরেকটি ভীষণ সুন্দর শৈল শহর হল খাজ্জিয়ার। এখানে গেলে দেখতে পাবেন খাজ্জিয়ার হ্রদ, খাজ্জি নাগ মন্দির। যেটি প্রায় ৮০০ বছরের পুরনো মন্দির। ট্রেকিংও করতে পারেন এখানে, পায়ে হেঁটে বা গাড়িতে চড়ে অনায়াসে ঘুরে দেখতে পারেন এখানকার মনোরম পরিবেশ। এখান থেকে কৈলাস পর্বত দেখা যায় ভীষণ স্পষ্ট। তুষারপাতের সময় খাজ্জিয়ারের সৌন্দর্য হার মানায় সুইজারল্যান্ডের সৌন্দর্য্যকেও।
আপনার মতামত লিখুন :