বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ আজ নজরুল মঞ্চে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যস্তরের বৈঠক থেকেই যেমন তৃণমূলে যোগ দিলেন বিক্ষুব্ধ এবং বিজেপি থেকে বহিষ্কৃত নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার, ঠিক তেমনই এদিন এই মঞ্চেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেকের পাশে থাকলেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। তাহলে কি ‘দূরত্ব’ ঘুচে গেল? আসলে সাম্প্রতিকে প্রশান্ত কিশোর এবং তৃণমূলের পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে অনেক কথাই শোনা যাচ্ছিল। উভয়ের সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে এমনও শোনা গিয়েছে। সেই সব গুঞ্জনেই আজকের পর ইতি পড়ল বলে মনে করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার নজরুল মঞ্চে মমতার সঙ্গে একই মঞ্চে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সী এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রশান্ত কিশোর। এদিন প্রশান্ত কিশোরকে বৈঠক শেষে আলাদা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কুশল বিনিময় করতেও দেখা গিয়েছে।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তৃতীয়বার ক্ষমতায় এসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেস। নির্বাচনের আগে, তৃণমূলের প্রচারে প্রশান্ত কিশোর এবং তাঁর সংস্থা আইপ্যাকের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। এরপর আগরতলা, গোয়ায় তৃণমূলের হয়ে প্রচারের দায়িত্বও সামলাতে দেখা গিয়েছে আইপ্যাককে। কিন্তু ছন্দপতন হয় রাজ্য পুরভোটের আগে। আইপ্যাক ও প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে সম্পর্ককে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে বেশ কিছুদিন ধরেই নানা জল্পনা চলছিল। এনিয়ে তৃণমূলের অন্দরেও বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। বিভ্রান্তি এমন জায়গায় পৌঁছায় যে, আইপ্যাকের ভূমিকা এবং কাজের পদ্ধতি নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। বিশেষ করে রাজ্যের ১০৮ পুরসভার প্রার্থী ঘোষণার সময় সেই বিভ্রান্তি চরমে ওঠে। এমনকি আইপ্যাকের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদের কথাও ওঠে। যদিও এ প্রসঙ্গে সরাসরি কেউ কোনও মন্তব্য করেনি। তবে, সংবাদমাধ্যমে তৃণমূল এবং আইপ্যাক একসঙ্গে কাজ করবে কিনা, তা নিয়েও লেখালেখি হতে শুরু করে। বিশেষ করে দলের বর্ষীয়ান নেতাদের একাংশের সঙ্গে আইপ্যাকের বিবাদ নিয়ে অনেক কথাই হয়েছে। এও গুঞ্জন ওঠে যে, তৃণমূল সুপ্রিমো পিকের সংস্থার কাজ ঠিক পছন্দ করছেন না। আজ সেইসব জল্পনাকে মিথ্যে প্রমাণিত করে ফের এক মঞ্চে দেখা গেল মমতা ও পিকেকে।
তাছাড়া কিছুদিন আগেই সংবাদমাধ্যমে পিকে পাল্টা দাবি করেছিলেন যে, তাঁর এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্কের কোনও অবনতি হয়নি। যা গুঞ্জন উঠছে, তা সবই সংবাদমাধ্যমের নিজের মস্তিষ্কপ্রসূত। প্রসঙ্গত গত মাসে একটি সাক্ষাৎকারে পিকে বলেছিলেন, ‘ওই সব খবর দেখে আমি শুধু হেসেছি। আমার সঙ্গে দিদির সম্পর্ক যেমন ছিল, তেমনই আছে। কিন্তু সংবাদমাধ্যমকে তো কিছু করতে হবে। তাই হয়ত এই সব করছে। সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে বলা হল, দিদি এবং আমার মধ্যে সমস্যা দেখা দিয়েছে। আবার বলা হল, দিদি আর অভিষেকের মধ্যে সমস্যা তৈরি হয়েছে। তার পর বলা হল, অভিষেক ও আমার সঙ্গেই দিদির দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। তিনি দলের সর্বোচ্চ নেত্রী হিসাবে দলের সংগঠনকে নতুন করে সাজাচ্ছেন। আর সংবাদমাধ্যমে গল্প তৈরি করল।’ আজকে নজরুল মঞ্চে পিকের উপস্থিতি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তাছাড়া আজ মমতার পাশে পিকের উপস্থিতি যে তাঁর সাক্ষাৎকারে বলা প্রতিটা কথাকেই যেন মান্যতা দিল। এর সঙ্গে আইপ্যাক-পিকের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্ক নিয়ে যা জল্পনা তৈরি হয়েছিল, সেসবের অবসান হল। পাশাপাশি এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের অন্দরে তৈরি হওয়া জাবতিয় বিভ্রান্তিও দূর হল বলেই মনে করা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :