বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ রাজ্যে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতে ইডি-র হাতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারিতে উত্তাল রাজ্য-রাজনীতি। দফায় দফায় জেরা চলছে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে। এই পরিস্থিতিতে এক নয়া জল্পনা উস্কে দিলেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। পুরনো একটি ঘটনার কথা তুলে ধরে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারি নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলে দিলেন তিনি।
রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ‘দেখে নেব’ বলে প্রকাশ্যেই হুমকি দিয়েছিলেন রাজ্যের সদ্য প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতারির পর সেই কথাই ফের একবার মনে করিয়ে দিলেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি বললেন যে, একসময় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে দেখে নেব বলেছিলেন ধনখড়। বুধবার তৃণমূলের মুখপত্র জাগো বাংলায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে তিনি উস্কে দিলেন, তাহলে কি শিল্পমন্ত্রীর গ্রেফতারির নেপথ্যে রয়েছে বিদায়ী রাজ্যপালের হাত? রাজ্যের শাসকদল কি সেদিকেই ইঙ্গিত করছে?
এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারি নিয়ে বারবার বলেছেন যে, যদি দোষ প্রমাণিত হয়, উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর সঙ্গে তিনি সিপিএম-বিজেপিকেও আক্রমণ করতে ছাড়েননি। উল্লেখ্য, তৃণমূলের প্রতিনিধি দল গত ২৮ জুন রাজভবনে স্মারকলিপি জমা দিতে গেলে শাসকদলের প্রতিনিধি দলের কাছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন ধনখড়।
বুধবার প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার আগে, মঙ্গলবার এক টিভি চ্যানেলের বিতর্কে অংশ নিয়ে কুণাল ঘোষ বিদায়ী রাজ্যপালের সেই হুমকির কথা তুলে ধরে নয়া জল্পনা তৈরি করেন। অবশ্য তার পাশাপাশি তিনি এও বলেন যে, ‘একবারের জন্যও বলছি না, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেপ্তার ও ইডি-র এই অভিযানের নেপথ্যে প্রাক্তন রাজ্যপালের সরাসরি কোনও ভূমিকা আছে। কাকতালীয় হলেও এটা ঠিক, উনি চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ২২ জুলাই ইডি-র অভিযান হয়, তাই ওঁর হুঁশিয়ারি নিয়ে একটা খটকা থেকেই যাচ্ছে।’
ঠিক কি ঘটেছিল সেদিন? জাগো বাংলায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২৮ জুন রাজভবনে গিয়েছিলেন শাসকদলের প্রতিনিধি দল। দুপক্ষের মধ্যে যখন কথা চলছে, অভাব-অভিযোগ জানানো হচ্ছে, ঠিক সেই সময় হুঁশিয়ারি দেন ধনখড় পার্থর উদ্দেশে সকলের সামনেই। তেমনটাই বলা হয়েছে প্রতিবেদনে। রাজ্যপাল ধনখড় বলেছিলেন, ‘পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে আমি দেখে নেব।’ কেন এমন বলছেন? তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের তরফে প্রশ্ন করলে, তিনি বলেন, ‘রাজনীতিবিদরা আমাকে আক্রমণ করতেই পারেন। তবে পার্থ চট্টোপাধ্যায় আমার স্ত্রী-কে আক্রমণ করেছেন। আমার স্ত্রী কোনও দিন কোনও রকম রাজনীতি নিয়ে মুখ খোলেননি। তা সত্ত্বেও কেন আক্রমণ? আমি ওনাকে ছাড়ব না।’
এই খবর প্রকাশ্যে এনে কুণাল ঘোষ এও জানিয়েছিলেন যে, সেদিন তাঁরা প্রত্যেকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন রাজ্যপালকে। কিন্তু তিনি একপ্রকার অনড় ছিলেন। এর পাশাপাশি কুণাল ঘোষ আরও একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে এনেছেন। ইডি-র অভিযানের অনুমতিতে ইঙ্গিত করে কুণাল ঘোষ জানিয়েছেন, ‘তৃণমূল প্রতিনিধিদের সেদিন ধনকড় জানান, আমার কাছে কয়েকটি ‘প্রেয়ার ফর প্রসিকিউশন’-এর ফাইল রয়েছে, সেগুলি নিয়ে শীঘ্রই ব্যবস্থা নেব।’
এইসব চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে আনার সঙ্গে সঙ্গে কুণাল ঘোষ বারবার কিন্তু বলেছেন যে, তিনি একবারও এটা বলছেন না যে, শিল্পমন্ত্রীর গ্রেফতারিতে জগদীপ ধনখড়ের সরাসরি হাত রয়েছে। কিন্তু তিনি যাই বলুন না কেন, তাঁর এই বিস্ফোরক তথ্যে নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :