বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ লড়াইটা শুরু থেকেই অসম ছিল। তবুও দাঁতে দাঁত চেপে লড়ছিলেন তরুণ সাংবাদিক স্বর্ণেন্দু দাস। নিজের অফুরান জীবনীশক্তি এবং কাজের প্রতি নিষ্ঠা তাঁকে শুরু থেকে এই অসম লড়াইয়ে সাহস জুগিয়েছে। কিন্তু শেষপর্যন্ত এই লড়াইয়ে তাঁকে হার মানতেই হল। অকালেই থেমে গেল এক প্রতিভাবান তরুণ সাংবাদিকের জীবন। মঙ্গলবার সকালেই যুদ্ধের সমাপ্তি হল। মাত্র ৩৫-এই থামল জীবনদীপ। ক্যানসার কেড়ে নিল তরুণ সাংবাদিক স্বর্ণেন্দু দাসের জীবন।
এক বেসরকারি টিভি চ্যানেলের সাংবাদিকের অকাল প্রয়াণে টুইটে শোক জ্ঞাপন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তরুণ সাংবাদিক স্বর্ণেন্দু দাসের মৃত্যু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও ভীষণভাবে নাড়া দিয়েছে। টুইটে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, দক্ষ ও বুদ্ধিদীপ্ত এক ব্যক্তিত্বকে হারাল সাংবাদিক জগত।
২০১৪ সালে দুরারোগ্য ক্যানসারে আক্রান্ত হন স্বর্ণেন্দু। তারপর থেকেই চিকিৎসা চলছি। হুগলির সিঙ্গুরের বাসিন্দা এই সাংবাদিকের চিকিৎসার খরচ জোগাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছিল পরিবার। নিম্নবিত্ত কৃষক পরিবারের ছেলে কলকাতায় সংবাদমাধ্যমে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছিলেন। এরপর ২০২১ সালে এক বেসরকারি নিউজ চ্যানেলে যোগ দেন স্বর্ণেন্দু।
এদিকে, গত বছর নভেম্বর মাস থেকে শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে তাঁর। মুম্বইয়ে টাটা ক্যানসার রিসার্চ সেন্টারে চিকিৎসা করা চলছিল তখন স্বর্ণেন্দু। কিন্তু চিকিৎসার বিপুল ব্যয় বহন করা তাঁর পরিবারের পক্ষে কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়ছিল। মাত্র দু-মাস আগের কথা। রাজ্যের এক বেসরকারি টিভি চ্যানেলের তরুণ সাংবাদিক স্বর্ণেন্দু দাসের ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়েছিল। তখন এই তরুণ সাংবাদিকের চিকিৎসার জন্য সাহায্যে এগিয়ে এসেছিলেন তাঁর বন্ধু, সহকর্মী এবং শুভাকাঙ্খীরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় সাহায্যের আবেদন জানিয়েছিলেন তাঁরা। ‘ক্রাউড ফান্ডিং’য়ের মাধ্যমে বন্ধুকে বাঁচানোর আবেদন জানানো হয়।
আবার এরই মধ্যে একদিন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক চলাকালীন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্বর্ণেন্দু দাসের বিষয়টি তোলা হয়। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন তাঁরই কোনও এক সতীর্থ। সেসময় মুম্বইতে চিকিৎসা চলার কথাও জানতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই তিনি স্বর্ণেন্দুর যাবতীয় চিকিৎসার দায়িত্ব নেন।
মুখ্যমন্ত্রী প্রথমেই এসএসকেএমের কথা বলেছিলেন। তারপর স্বর্ণেন্দুর চিকিৎসা চলছিল সেখানে। মঙ্গলবার ভোরে সব শেষ। কলকাতার শুম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে সকাল ৬ টা নাগাদ প্রয়াত হন এই তরুণ সাংবাদিক। রেখে গেলেন বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী এবং বছর তিন-এর ছোট্ট শিশুকন্যাকে। তাঁর অকাল প্রয়াণে পরিবারের পাশাপাশি সহকর্মীরাও শোকাহত। স্বর্ণেন্দুর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী টুইটে লিখেছেন, “অত্যন্ত বেদনাদায়ক খবর। স্বর্ণেন্দু দাস, কলকাতার একজন তরুণ সাংবাদিকের মৃত্যুতে আহত। সংবাদ দুনিয়া একজন অত্যন্ত দক্ষ প্রতিভা হারাল। তাঁর পরিবার, প্রিয়জন এবং সহকর্মীদের প্রতি গভীর সমবেদনা।”
আপনার মতামত লিখুন :