বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ মদন মিত্র মানেই কিছুটা বিতর্ক, একটু মজা, আবার কখনও করা কথা। এহেন মদন মিত্রই নাকি এখন থেকে আর সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলবেন না। এককথায়, তাহলে কি তিনি মিডিয়াকে ‘বয়কট’ করলেন? সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ না খুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের বক্তব্য তুলে ধরবেন। ফেসবুকে এক ভিডিও প্রকাশ করে, নিজের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র।
কিন্তু মদন মিত্রের এই সিদ্ধান্তের কারণ কী? দলের নির্দেশেই কি তিনি এই সিদ্ধান্ত নিলেন? এদিন মদন মিত্র বলেন, ‘আমি আমার রাজনৈতিক দলের নামে শপথ করছি, কোনও কর্মসূচির বিষয় ছাড়া অন্য কোনও বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলব না। আমায় যদি সাংবাদিকরা জিজ্ঞাসা করেন কেমন আছেন? তবে তার উত্তর দেব। কিন্তু কোনও নির্দিষ্ট বিষয়ে আমি মন্তব্য করব না। যা বলার ফেসবুক, ইউটিউব এবং ইনস্টাগ্রামেই বলব।’ সংবাদমাধ্যমের কাছে তাঁর কাতর আবেদন, ‘আপনারা আমায় ভুল বুঝবেন না। আপনাদের সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব অটুট থাকবে। শুধু আমার কাছে এসে বুম ধরে বলবেন না এই বিষয় নিয়ে কিছু বলুন।’
কিন্তু কেন এই সিদ্ধান্ত? কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক ফেসবুক ভিডিওতে দাবি করেছেন যে, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশীর্বাদে অনেক প্রচার পেয়েছেন। তাই কিছু না করলেও, বাংলার মানুষ তাঁকে আগামী ৫ বছর এমনিতেই মনে রাখবে। তাই তাঁর আর প্রচারের প্রয়োজন নেই। এবার তিনি শুধুমাত্র দলের নির্দেশ মেনেই চলবেন।
এখানেই শেষ নয়, মদন মিত্র বলেন, ‘প্রথমেই আসি পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অনুব্রত মণ্ডলের কথায়। এদের বিরুদ্ধে কী হবে, কী হবে না তা বিচার ব্যবস্থাই বলবে। এনিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। তবে এটুকু বলব, এদের সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে আমার সম্পর্ক ও ভালো সম্পর্ক ছিল। আমার কোনও মন্তব্যে এদের আঘাত করার মানসিকতা ছিল না। কিন্তু একটি বিবৃতিকে কেন্দ্রে করে এমনভাবে কিছু কথা বেরিয়েছে যাতে বোঝা যাচ্ছে ব্যক্তিগতভাবে আমি পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় কিংবা অনুব্রতকে বা আমার পার্টিকে বিড়ম্ববনায় ফেলে আঘাত করার চেষ্টা করেছি। সংবাদমাধ্যমের বন্ধুদের বলব, কিছুদিন অন্তত আপনারা আমাকে আপনাদের সংবাদমাধ্যমের বাইরে থাকতে দিন। আমি যেসব প্রোগ্রাম করি সেইসব প্রোগ্রামে আপনারা আসবেন, কভার করবেন। সংবাদমাধ্যমে মন্তব্যের জন্য দল যদি অস্বস্তি ও বিপাকে পড়ে তাহলে তার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী।’
শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি এবং গরুপাচার মামলায় বর্তমানে জেলবন্দি তৃণমূলের দুই তাবড় নেতা পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় ও অনুব্রত মণ্ডল। পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে দল সেভাবে সরব না হলেও, বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত নিয়ে মুখ খুলেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পর, দলের পক্ষ থেকেই বেশ কিছু কটাক্ষও শোনা গিয়েছিল। সম্ভবত, সেই জায়গা থেকেই দল এই বিষয়ে কোনও কড়া অবস্থান নিয়েছে। তার জেরেই মদন মিত্রের গলায় অন্য সুর। তাছাড়া এমনিতেই মদন মিত্র কখন কী বলেন, তার কোনও ঠিক থাকে না। এই পরিস্থিতিতে মদন মিত্রের কোনও আলটপকা মন্তব্য সংবাদের শিরোনামে জায়গা করে নেওয়ার পাশাপাশি দলকেও বিড়ম্বনায় ফেলতে পারে। তা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি হতেও পারে। আগেও অবশ্য মদন মিত্রের মন্তব্যের জন্য তাঁকে সতর্ক করা হয়েছে একাধিকবার।
আপনার মতামত লিখুন :