1. প্রথম পাতা
  2. কলকাতা
  3. রাজ্য
  4. রাজনীতি
  5. অপরাধ
  6. দেশ
  7. আন্তর্জাতিক
  8. খেলা
  9. কর্ম সন্ধান
  10. বিনোদন
  11. ব্যবসা বাণিজ্য
  12. টেক নিউজ
  13. লাইফস্টাইল
  14. ভাইরাল
  15. আবহাওয়া
  16. রাশিফল

বহু বছরের নিরলস পরিশ্রমের সুফল! দুর্গাপুজোকে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি, নেপথ্যে এই বাঙালি গবেষক

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১, ২০২২, ১০:১৮ পিএম

বহু বছরের নিরলস পরিশ্রমের সুফল! দুর্গাপুজোকে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি, নেপথ্যে এই বাঙালি গবেষক
বহু বছরের নিরলস পরিশ্রমের সুফল! দুর্গাপুজোকে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি, নেপথ্যে এই বাঙালি গবেষক

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ধর্ম যার যার উৎসব সবার। এই কথা বাঙালির সবথেকে বড় এবং প্রাণের উৎসব দুর্গাপুজোর ক্ষেত্রে ভীষণভাবে প্রযোজ্য। এই উৎসবের বিস্তার এতোটাই যে, এই উৎসব সবার। এমনকি দুর্গাপুজোকে ‘ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অফ হিউম্যানিটি’ স্বীকৃতি দিয়ে ইউনেস্কোও জানিয়েছে, ধর্মীয় উৎসবের ঊর্ধ্বে উঠে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উৎসবে পরিণত হয়েছে বাঙালির এই প্রাণের উৎসব।

আজ এই উৎসবের আগাম সূচনা হয়ে গেল রেড রোডে। আর মাত্র এক মাস পরেই রয়েছে দুর্গাপুজো। শহর কলকাতা বরাবরই উৎসববিলাসী। উৎসবে মাততে কলকাতার জুড়ি মেলা ভার। আর বাঙালির সবথেকে বড় উৎসব দুর্গাপুজো। সারা বাংলার পাশাপাশি কলকাতার দুর্গাপুজো মানেই একদম জমজমাট ব্যাপার। তবে, পুজোর এখনও একমাস বাকি। এদিকে, তার আগেই উৎসবে মাতল কলকাতা। এদিন জোড়াসাঁকো থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা হয়। এই শোভাযাত্রার অগ্রভাগে অবশ্যই ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন এই শোভাযাত্রা দেখতে আজ অগণিত মানুষ রাস্তায় নামেন। মানুষের ভিড় চোখে পড়ার মতো। ইউনেস্কোর হেরিটেজ স্বীকৃতিকে ধন্যবাদ জানিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই পদযাত্রার ডাক দিয়েছেন। আজ এই শোভাযাত্রার মধ্যে দিয়ে পুজোর গন্ধ এসে গেল বাংলায়।

উল্লেখ্য, ইউনেস্কোর এই স্বীকৃতি কিন্তু একদিনে মেলেনি। বহু বছরের গবেষণা, পরিশ্রমের ফলেই বাংলার দুর্গাপুজো বিশ্বজয় করেছে। এর নেপথ্যে রয়েছেন বাঙালি, তাও আবার কলকাতারই এক কৃতী সন্তান, গবেষক তপতী গুহঠাকুরতা। তাঁরই অক্লান্ত পরিশ্রম, সাধনা, গবেষণার জোরেই দুর্গাপুজোকে ‘ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অফ হিউম্যানিটি’-এর তকমা দেয় ইউনেস্কো। এই স্বীকৃতি দেওয়ার বাইরে কার্যত ইউনেস্কোর আর কোনও উপায় ছিল না। কিন্তু কে এই তপতী গুহঠাকুরতা?

তপতী গুহঠাকুরতা প্রেসিডেন্সির কলেজের প্রাক্তনী, আবার পেশায় একজন অধ্যাপিকা এবং গবেষকও। বছর পঁয়ষট্টির তপতীদেবী ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সায়েন্সের সঙ্গেও যুক্ত। তাঁর লেখা বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপুজো নিয়ে বই হয়ত অনেকেই পড়ে ফেলেছেন এতদিনে। কিন্তু বাঙালির প্রাণের উৎসব দুর্গাপুজো নিয়ে তপতীদেবীর গবেষণা যে আরও অনেক গভীরে, তা বোধহয় কেউ জানতেন না।

অধ্যাপিকা তপতী গুহঠাকুরতা নিজেই জানিয়েছেন, দুর্গাপুজোকে ইউনেস্কোর স্বীকৃতির জন্য ২০১২ সালে আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই সময় তা গ্রাহ্য করা হয়নি। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে দুর্গাপুজো নিয়ে তাঁর লেখা বই প্রকাশিত হয়। তা পড়ার পর, ২০১৮ সালে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে কেন্দ্রের সংস্কৃতি মন্ত্রক। ইউনেস্কোর কাছে জমা দেওয়ার জন্য তাঁকে একটি ডসিয়ের বা তথ্য সম্বলিত গবেষণা পত্র তৈরি করতে বলা হয়। তপতীদেবী প্রথমে এই কাজ করতে রাজি হননি। কিন্তু তাঁর দুই ছাত্র-ছাত্রী সন্দীপন মিত্র ও দেবী চক্রবর্তী তাঁকে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিলে, অধ্যাপিকা তপতী গুহঠাকুরতা এই কর্মযজ্ঞে ঝাঁপিয়ে পড়েন। মাত্র ৭ মাসের মধ্যে তিনি তথ্য সম্বলিত গবেষণা পত্র তৈরি করে ফেলেন। ভারত সরকার সেই পুস্তিকা পাঠিয়ে দুর্গাপুজোকে ‘ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ অফ হিউম্যানিটি’-এর স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য ইউনেস্কোর কাছে আবেদন জানায়।

এর পরেরটা সকলেরই জানা। এ বছরই বাংলার দুর্গাপুজোকে মানবতা-সংস্কৃতির ঐতিহ্যবাহী উৎসবের তকমা দিয়েছে ইউনেস্কো। এদিন অনুষ্ঠানের পর তপতী দেবী সংবাদমাধ্যমের সামনে বলেন, ‘যে যে ফ্যাক্টরের উপর ভিত্তি করে ইউনেস্কো এ ধরনের স্বীকৃতি দিয়ে থাকে, তার সবকটাই দুর্গাপুজোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আমার গবেষণায় আমি দেখিয়েছি, কীভাবে এই উৎসব ধর্মের ঊর্ধ্বে উঠে সকলের উৎসবে পরিণত হয়েছে। বড় একটা ডসিয়ের আমি দিয়েছিলাম। আপনারা ওয়েবসাইটে গিয়ে সেই ডসিয়েরটি দেখতে পারেন। ইউনেস্কো সব দেখে মেনে নিয়েছে যে এটি একটি সামাজিক-সাংস্কৃতিক উৎসব।’ এদিন রেড রোডের অনুষ্ঠানে তপতীদেবীকে সংবর্ধনা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন অধ্যাপিকা তপতী গুহঠাকুরতাকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং, আর উপহার হিসেবে অধ্যাপিকার হাতে তুলে দেন ডোকরার দুর্গামূর্তি।

 

আরও পড়ুন