বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ অতি সম্প্রতি বাজেট অধিবেশের শুরুতেই উত্তাল হয়ে উঠেছিল বিধানসভা। রাজ্যপাল ভাষণ শেষ করতে পারেননি। প্রথম এবং শেষ অংশ পড়ে বিধানসভা কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যান। সেই ঘটনায় শাসকদলের বিধায়কদের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তোলেন বিরোধীরা। এবার সেই ঘটনার সূত্র ধরেই বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনদিনের মধ্যে দেখা করার নির্দেশ দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।
এদিকে, সেই চিঠি পাওয়ার পরই বিধানসভার অধ্যক্ষ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর পক্ষে দেখা করা সম্ভব নয়। এখানেই শেষ নয়, দেখা করার নির্দেশ দিয়ে রাজ্যপালের দেওয়া চিঠিকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত’ বলেও উল্লেখ করেছেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবারই তিনি তাঁর উত্তরে জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি দেখা করবেন না। তিনি জানিয়েছেন, বিধানসভার অধিবেশনের কাজে এই মুহূর্তে তিনি ব্যস্ত থাকবেন। এদিকে, তিনি রাজ্যপালের চিঠির ব্যাপারে দাবি করেছেন যে, রাজ্যপালের পাঠানো চিঠি সম্পূর্ণ পক্ষপাতমূলক।
বিধানসভা স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘এই চিঠি পেয়ে আমি অবাক।’ পাশাপাশি তিনি দাবি করেছেন, ঘটনার প্রসঙ্গ রাজ্যপাল অন্যদিকে নিতে চাইছেন। তিনি আরও বলেছেন যে, ‘রাজ্যপাল তিনদিনের মধ্যে দেখা করার কথা বলেছেন। আমি জানিয়েছি, কোনও মতে দেখা করা সম্ভব নয়।’
অন্যদিকে, রাজ্যপালের অভিযোগ প্রসঙ্গে অধ্যক্ষ জানিয়েছেন যে, রাজ্যপাল যেসব বিধায়কদের সম্পর্কে অভিযোগ করেছেন, তাঁদের কাউকেই রাজ্যপাল চেনেন না। নাম না করে তিনি বলেন, ‘সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশে এটা করেছেন তিনি। নামগুলো কে দিয়েছেন, তা বোঝাই যাচ্ছে। আমি চ্যালেঞ্জ করছি, রাজ্যপাল এত বিধায়কের মধ্যে কাউকে চেনেন না।’
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সোমবার নিয়ম অনুযায়ী, ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল রাজ্যপালের। কিন্তু বিরোধীদের বিক্ষোভে তুমুল বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয় বিধানসভা কক্ষে। ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা। এতে ক্ষুব্ধ হন রাজ্যপাল। ভাষণ না দিয়েই বেরিয়ে যেতে চেষ্টা করেন। সে সময় তাঁকে বাধা দিতে তাঁর পথ আটকে ঘিরে ধরে দাঁড়িয়ে পড়েন শাসকদলের মহিলা বিধায়করা। রাজ্যপাল ওই ঘটনা প্রসঙ্গে টুইট করে বলেন যে, ‘এই ধরনের ঘটনাকে সংবিধান কখনওই মান্যতা দেয় না। এই ধরনের বিশৃঙ্খলা শালীনতার সীমা লঙ্ঘনের সামিল।’
অন্যদিকে, এই ঘটনার পর, বিজেপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয় যে, রাজ্যের শাসকদল মহিলা বিধায়কদের দিয়ে রাজ্যপালকে শারীরিকভাবে হেনস্থা করেছেন। যদিও, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন যে, বিধায়কেরা যা করেছে, তা গণতন্ত্রকে বাঁচাতেই করেছেন। এদিকে, সোমবারের এই ঘটনার পর রাজ্য এবং রাজ্যপালের মধ্যে সংঘাত আরও তীব্র হল বলেই মনে করা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :