বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ তিনি অনেকদিন ধরেই লেখালিখি করেন। কবিতা লিখতে ভালোবাসেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা বইয়ের বিক্রিও নেহাত কম নয়। তাই বই লেখায় উৎসাহও হারান না তিনি। কিন্তু তাঁর লেখা কবিতা নিয়ে সমালোচনা, ব্যঙ্গ- বিদ্রূপও হয় ভালোই।
সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর কবিতা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় মিমে ছেড়ে যায়। তবে, তা নিয়ে কখনও সমালোচকদের জবাব দেননি তিনি। সমালোচনার জবাব না দিলেও, তাঁর নজর কোনও কিছুই এড়ায় না। এবার সেকথাই তিনি বুঝিয়ে দিলেন। সব সমালোচনা এবং বিদ্রুপের-বিদ্রূপের জবাবে বললেন, ছোটদের জন্য কবিতা লিখতে গেলে, ছোট হয়ে যেতে হয়।’ বৃহস্পতিবার এমনটাই বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দূর নিয়ন্ত্রণ ব্য়বস্থার মাধ্যমে NSATI-এর সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর সিভিল সার্ভিসেস স্টাডি সেন্টারের অধীনে রাজ্যের মধ্যে ২২ টি জেলায়, ২৬ টি সিভিল সার্ভিসেস কোচিং সেন্টারের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড বিতরণও করেন। এদিকে, এদিনের অনুষ্ঠানে পড়াশোনা, কবিতার কথা উঠে আসে তাঁর কথায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিদ্যা, বই আর ঘরের বউ কাউকে ধার দিতে নেই সবাই বলে। কারণ নিজের বিদ্যা, বুদ্ধি দিয়ে যে কাজ করতে আপনি করতে পারেন, তার ভালটা সবাই নিক, কারও খারাপ না হোক।’
পাশাপাশি এদিন সমাজে নেতিবাচক ভাবনারও নিন্দা করেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ভাল চিন্তা মানুষকে বিকশিত করে। আমি যখন ছোট ছিলাম, ছোট ছোট কবিতা পড়তাম। `আয় বৃষ্টি ঝেঁপে, ধান দেব মেপে`, ‘কাঠবেড়ালি কাঠবেড়ালি,` এ সব নিয়ে কেউ কখনও প্রশ্ন করেনি। এখন দেখি, এরা কোন গ্রুপ জানি না। হয়ত সমাজের বড় অংশ হবেন। তাঁদের সম্মান করি। তবে ভাবতে বলব। আপনি যখন বাচ্চার জন্য কিছু তৈরি করবেন, তখন আপনাকেও প্রথমে বাচ্চা সাজতে হবে। মনটা হতে হবে বাচ্চার মতো। তবেই বাচ্চাকে তার মতো করে শিক্ষা দিতে পারবেন।”
উল্লেখ্য, ছোটদের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর লেখা কবিতার বই ঘিরে নানা সময়ে সমালোচনা হয়েছে। সম্প্রতি ‘কবিতা বিতান’ কাব্যগ্রন্থের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে বাংলা আকাদেমি বিশেষ পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়েছে। যা অনেকেই মেনে নিতে পারেননি। তীব্র সমালোচনায় সরব হয়েছেন বিশিষ্ট জনেদের একাংশ। সেই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে ছোটদের কবিতার প্রসঙ্গ তুলে ধরে মন্তব্য করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন সমালোচকদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রীর সাফ জবাব, ‘কেউ কেউ পুরোটা না দেখে চিৎকার শুরু করে দেয়, একেবারে হরে করে কমবার মতো। আমি বলেল আবার বলবে, দেখেছেন! হরে করে কমবার আবার কোনও মানে হয় নাকি! নিশ্চয়ই হয়। পুরনো কবিতার বইগুলি দেখে নিন। আগেকার দিনের বইগুলিতে চোখ রাখুন, অনেক কিছু দেখতে পাবেন। নদী নিয়েও পড়বে, শিক্ষা নিয়েও পড়বে, প্রকৃতি নিয়েও পড়বে...’। এখানেই শেষ নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেছেন যে, ‘সবসময় নেতিবাচক কথা নিয়ে কীভাবে বিতর্ক তৈরি করা যায়, সে দিকে দৃষ্টি দিই। নেতিবাচক কথা নিয়ে বেশি আলোচনা হয়।’ তাই তিনি সকলকে ইতিবাচক চিন্তা করার পরামর্শ দেন।
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী আকাদেমি পুরস্কার পাওয়ার পর তাঁকে বিদ্রূপ করতে ‘আজব ছড়া’ নামাঙ্কিত বই থেকে ‘হরে করে কমবা’ লাইনটি নিয়ে তুমুল ব্যঙ্গ শুরু হয়। সেই সময় দলের যুবনেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য অন্নদাশঙ্কর রায়ের `পিং পিং, কালিম্পং` ছড়াটি সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরেন। যুক্তি হিসেবে বলেন যে, মমতার লেখা বলেই এত বিদ্রূপ করা হচ্ছে। আর এবার খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ খুললেন এবং সমালোচনার জবাব দিলেন। এমনটাই মনে করা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :