বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ রবিবার জোকা ইএসআই হাসপাতালে ফের নিয়ে যাওয়া হয় রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং মন্ত্রী-ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে। এদিন তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়। সকাল ১১ টা নাগাদ সিজিও কমপ্লেক্স থেকে ইডি আধিকারিকদের গাড়ি বের হয়। কেন্দ্রীয় বাহিনীর কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিন হাসপাতালে ঢোকার মুখে ফের মৌনতা ভেঙে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, উদ্ধার হওয়া কোটি কোটি টাকা তাঁর নয়। পাশাপাশি আগে যে বলেছিলেন তিনি ‘ষড়যন্ত্রের শিকার’ তার পরিপ্রেক্ষিতে এও জানিয়েছেন যে, কারা এর নেপথ্যে রয়েছেন তাও সময় এলেই জানা যাবে।
রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর এই মন্তব্যে নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। নানা প্রশ্ন উঠছে। তাহলে এই বিপুল পরিমাণ টাকা কার? এদিকে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আজকের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কুণাল ঘোষ প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, ‘এখন আর এসব বলার সময় নয়। উনি কোনও অপরাধ যদি নাই করেন তাহলে গ্রেফতারের পর কেন কিছু বললেন না? তিনি তো ষড়যন্ত্রের কথা আগেই বলতে পারতেন। এখন দল একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর বলার কিছু নেই। আইনের মাধ্যমে সব কিছু প্রমাণ হবে।’
এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র বলেন যে, ‘পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে দলের একটা সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে। প্রথম যখন সুযোগ পেলেন, তখন চক্রান্ত, নির্দোষ বললেন না। হঠাৎ গত দু’দিন ধরে তিনি চক্রান্ত, আমার টাকা নয়- এ সব বলছেন। যেখানে দলের সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে, সেখানে পার্থদা কবে কী বলছেন, সে নিয়ে বলব না কিছু। দল ব্যবস্থা নেওয়ার পর ওঁর মনে হচ্ছে এটা ষড়যন্ত্র, টাকা ওঁনার নয়। দুদিন বাদে এও বলতে পারেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে উনি চেনেন না। ওঁর যা বক্তব্য আদালতে বলুন। টাকা উদ্ধার হচ্ছে, অপার ছবি, আঙুলের ছাপ, দলিল বেরোচ্ছে, দুনিয়ার জিনিস বেরোচ্ছে। উনি প্রথম দিন কেন বলেননি?’
তিনি এও বলেন যে, ‘উনি কাকে চেনেন, কার টাকা, কার বাড়িতে যেতেন,কার সঙ্গে মিলে সম্পত্তি কিনেছেন এসব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলতে পারবেন। প্রথমে কেন বলেননি সেটা ওঁর ব্যাপারে। এখন কেন বলছেন সেটাও ওঁর ব্যাপার। অভিযুক্ত হিসেবে কোর্টে তাঁর অনেক কিছুই বলা অধিকার রয়েছে। এনিয়ে আমার বা তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও বক্তব্য নেই।’
প্রসঙ্গত, এদিন হাসপাতালে ঢোকার মুখে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, ‘আমার কোনও টাকা নেই।’ উল্লেখ্য, গত শুক্রবারই পার্থ-অর্পিতাকে জোকা ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য। সেদিনই সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে প্রাক্তন মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, তিনি ‘ষড়যন্ত্রের শিকার’। এদিন ফের একবার মুখ খোলেন তিনি উদ্ধার হওয়া টাকার প্রসঙ্গে।
এদিনও হুইল চেয়ারে করে হাসপাতালে ঢোকানো হয় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। প্রাক্তন মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ অর্পিতার দুটি ফ্ল্যাট থেকে ইতিমধ্যেই প্রায় ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। যা নিয়েই তোলপাড় রাজ্য। এই টাকার মালিক কে? তা নিয়ে আলোচনার অন্ত নেই। এদিকে, ইতিমধ্যেই অর্পিতা দাবি করেছেন যে, এই টাকা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। প্রাক্তন মন্ত্রীর লোকেরাই এই টাকা তাঁর ফ্ল্যাটে রেখে যেত। এই পরিস্থিতিতে রবিবার জোকা ইএসআই হাসপাতালে ঢোকার সময় সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে প্রাক্তন মন্ত্রীর আগের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্ন করা হয় যে, ‘পার্থবাবু আপনি কার ষড়যন্ত্রের শিকার?’ উত্তরে তিনি জানিয়েছেন, ‘কে ষড়যন্ত্র করেছে, সময় আসলেই বুঝবেন’। পাশাপাশি টাকার প্রসঙ্গেও তিনি জানিয়েছেন, ‘আমার কোনও টাকা নেই।’ এছাড়াও তাঁকে শরীর কেমন আছে জানতে চাওয়া হলে, বুকে হাত রেখে জানান যে, তিনি ভালো নেই।
এরপরই দ্রুত হাসপাতালের ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। অন্যদিকে, এদিন হেঁটেই হাসপাতালে যান অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। তবে, এদিন কার্যত তাঁকে বিধ্বস্ত দেখাচ্ছিল। এদিকে, পার্থর নয়া মন্তব্যে ফের বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। এখন প্রশ্ন একটাই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের টাকা নয় তো, এতো বিপুল পরিমাণ টাকা কার?
আপনার মতামত লিখুন :