কানে তীব্র যন্ত্রণা! ব্যথায় ছটফট করতে করতে ডাক্তারের কাছে এসেছিলেন এক ব্যক্তি। তিনি জানতেনও না যে তাঁর কানের ভিতর ঢুকে আস্ত এক তেঁতুল বিছে। তাও আবার জ্যান্ত অবস্থায়। অবশেষে অভিনব পদ্ধতিতে কোনও যন্ত্রপাতি ছাড়াই বের হল সেই তেঁতুল বিছে। কলকাতা মেডিকেল কলেজের ( Kolkata Medical College ) নাক-কান-গলা (ENT ) বিভাগের ঘটনা
শুক্রবার দুপুরে কানের যন্ত্রণা নিয়ে, কলকাতা মেডিকেল কলেজের ইএনটি বিভাগ এর আউটডোরে দেখাতে আসেন পেশায় সেলসম্যান মহম্মদ আফতাব। ইনি জোড়াসাঁকো এলাকার বাসিন্দা। সকালে বাইকে চড়ে কাজে যান। বাইকের উপর রাখা ছিল হেলমেট। তার মধ্যেই ছিল তেঁতুল বিছেটি। মাথায় হেলমেট চাপাতেই বুঝতে পারেন, কানের মধ্যে কিছু একটা ঢুকে গেল। কী ঢুকেছে, বুঝতে পারেননি, কিন্তু সময় নষ্ট না করে তখনই চলে আসেব কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের আউটডোর বিভাগে।
বছর ৪৮ এর ওই ব্যক্তি যন্ত্রণায় ছটফট করছিলেন। চিকিৎসকেরা প্রথমে অটোস্কোপ দিয়ে পরীক্ষা করে দেখেন ভেতরে কিছু একটা নড়াচড়া করছে। সেটি ছিল একটি তেঁতুল বিছে ! কীভাবে রোগীর কান থেকে বের হল জ্যান্ত তেতুল বিছে ? সেটাই আরও আশ্চর্যের বিষয়। জ্যান্ত প্রাণিটিকে বের করতে কোনও অস্ত্রোপচার তো করলেনই না ডাক্তাররা। বরং সিরিঞ্জের সাহায্যে স্টেরাইল ওয়াটার দেয়া হয়। তাতেই বেরিয়ে আসে বিছেটি !
চিকিৎসকরা এক অভিনব পদ্ধতিতে বের করে আনলেন বিছে। ছুরি, কাঁচি, চিমটে নয়। কোনও চিকিৎসা সরঞ্জাম ছাড়াও সেই জ্যান্ত তেঁতুল বিছেকে বের করলেন চিকিৎসক। যন্ত্রের সাহায্যে বিছে বের করার চেষ্টা না করে তরল রোগীর কানে স্প্রে করেন চিকিৎসকেরা। এরপরই জ্যান্ত তেতুল বিছে বেরিয়ে আসে কান থেকে ।
এই প্রসঙ্গে ডা. দীপ্তাংশু মুখোপাধ্যায় জানালেন, কোনও কিছু দিয়ে যদি বিছেটি বের করে আনার চেষ্টা করা হত, তবে বিপদ বাড়ত। বিছেটি হয়ত কানের ভেতরে আরও কোনও ক্ষতি করতে পারত। বরং স্টেরাইল ওয়াটার দেওয়ায় বিছেটি কানের ভেতর অক্সিজেনের অভাব বোধ করে, তাতেই বেরিয়ে আসে।
চিকিৎসকরা জানান, কানের পর্দায় বিছে কামড়ায়নি। তবে নড়াচড়ার দরুণ কিছু ক্ষতিও হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন ডাক্তাররা। তেঁতুল বিছের নড়াচড়ার দরুন যা ক্ষতি হয়েছে, তা ওষুধের সাহায্যে সেরে যাবে বলে মনে করছেন মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকেরা । তবে আপাতত ফাঁড়া মুক্ত তিনি। শ্রবণশক্তির কোনও ক্ষতি হবে না , বলেই মনে করা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :