বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে পাঁচিল টপকে ঢুকে পড়া যুবকের উদ্দেশ্য নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। এবার পুলিশি তদন্তে মিলল চাঞ্চল্যকর তথ্য। হাসনাবাদের বাসিন্দা হাফিজুল মোল্লা নামের ওই যুবককে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আদালতে তোলা হলে, তাঁকে ৭ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে, পুলিশ সূত্রে খবর, শুধুমাত্র লুকিয়ে থাকাই নয়, জামার নিচে লোহার রড লুকিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ঢুকেছিল হাফিজুল। এখানেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি নাশকতার উদ্দেশ্য নিয়েই সে ঢুকেছিল মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে? যার উত্তর খুঁজছে পুলিশ।
মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন যে, শনিবার রাত ১ টা ২০ নাগাদ গার্ড রেল টপকে মুখ্যমন্ত্রীর হরিশ মুখার্জি রোডের বাড়িতে ঢুকে পড়েন হাফিজুল। সেখানেই কনফারেন্স রুমের পিছনে ৭ ঘণ্টা লুকিয়ে ছিলেন তিনি। সকালে তাঁকে দেখতে পান নিরাপত্তারক্ষীরা। এরপরই তাঁকে আটক করে কালীঘাট থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
সোমবার তাঁকে আদালতে তোলা হলে, কেন হাফিজুল লোহার রড নিয়ে ঢুকেছিলেন, তা জানতেই তাঁকে পুলিশি হেফাজতে পাঠায় আদালত। এদিকে, তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে হাফিজুলের মাথার ঠিক নেই। আর তাঁর আইনজীবীর দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িকে লালবাজার ভেবেই হাফিজুল ঢুকে পড়েছিলেন।
যদিও মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার ঘটনাকে সম্পূর্ণ সাজানো বলেই দাবি করেছেন বিরোধীরা। তাঁদের প্রশ্ন, মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তায় এত বড় গাফিলতি থাকলে, কেন তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না? এরপরই জানা যায়, যে হাফিজুলের থেকে লোহার রড পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে যে, এই লোহার রড পাওয়ার তথ্যকে এতো দেরিতে জানাল কেন পুলিশ? গ্রেফতারির সময় কেন জানালো হল না এই খবর? রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান হওয়ার সুবাদে জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পান তিনি। সেই নিরাপত্তা বলয় পেরিয়ে কীভাবে এক অপরিচিত যুবক সারারাত মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে প্রবেশ করে লুকিয়ে থাকতে সক্ষম হল? এই প্রশ্নই ভাবাচ্ছে। এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা শুরু থেকেই প্রশ্নের মুখে।
অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তায় গাফিলতি নিয়ে পুলিশকেই দুষছে বিরোধীরা। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে লোক ঢুকে পড়ল, পুলিশ কি নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছিল। আমাদের মিটিং-মিছিলে পুলিশ সক্রিয় হয়ে ওঠে, আটকে দেয়। আর মুখ্যমন্ত্রীর বেলায় দেখা নেই। আর মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে একজন ঢুকে পড়েছে, তা নিয়ে এত হল্লা করার কী আছে?’
আবার সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর দাবি, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী যখনই কোনও বিপাকে পড়েন, তখনই এই ধরনের ঘটনা ঘটে বা খবর হয়। এখানেই শেষ নয়, তিনি আরও বলেছেন যে, ‘একজন মুখ্যমন্ত্রী সড়কপথে যাতায়াত করেন না, কীসের ভয়ে! আমাদের সময় তো এরকম হয়নি। আর ওঁর বাড়িতে নিরাপত্তাবলয় ভাঙছেন একজন। পুলিশ কী করছিল? পুলিশ যেখানে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা দিতে পারে না, সেখানে তাহলে রাজ্যের সাধারণ মানুষ কাকে ভরসা করবেন?’
আপনার মতামত লিখুন :