শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ড নিয়ে আপাতত গোটা রাজ্য জুড়েই শোরগোল।এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই নগদ প্রায় ৫০ কোটি টাকা ও কয়েক কোটি টাকার সোনা-রুপো উদ্ধার করেছে ইডি। গত ২২ জুলাই, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে সকালেই হানা দেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরের (ED) আধিকারিকরা। এরপর পার্থ ‘ঘনিষ্ঠ’ মডেল তথা অভিনেত্রী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের হরিদেবপুরের ফ্ল্যাটেও তল্লাশি চালানো হয়। সেখান থেকে উদ্ধার হয় ২১ কোটিরও বেশি টাকা। এই ঘটনার রেশ না কাটতেই অর্পিতার বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয় আরও ২৭ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা।
এই ঘটনার জেরে ইতিমধ্যেই পার্থ-অর্পিতাকে গ্রেপ্তার করেছে ইডি। এই মুহূর্তে তাঁরা রয়েছেন ইডি হেফাজতেই। এর মধ্যেই আবার তদন্তে এও উঠে এসেছে যে, অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া কোটি কোটি নগদ টাকা এবং সোনা-দানা, সব তাঁর একার নয়। মোটা অঙ্কের কমিশনের বিনিময়েই নাকি নিজের ফ্ল্যাটে এই টাকা রাখতেন অর্পিতা। ফ্ল্যাটের একদিকে রাখা থাকত কমিশনের টাকা , অন্যদিকে থাকত কমিশন বাদ দিয়ে রাখা মূল টাকা।
সূত্রের খবর।, এই কমিশন নিয়ে রীতিমতো দর কষাকষি নাকি চলত। সম্প্রতি একটি বাংলা দৈনিকে প্রকাশিত খবর থেকে জানা গিয়েছে ২০১২ সালে প্রতি লাখে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা কমিশন পেতেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। তবে একাধিকবার কমিশন বৃদ্ধি নিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে চাপ দিয়েছেন অর্পিতা। এমনকি কমিশন বৃদ্ধি না করলে সমস্ত কিছু সবার সামনে ফাঁস করে দেওয়ার হুমকিও দিতেন।
জানা যায়, কমিশন নিয়ে ঝামেলার জেরে ২০১২ সালে অর্পিতা একবার ১০ কোটি নগদ টাকা নিয়ে পালিয়ে যান। মোবাইলও সুইচড অফ করে দিয়েছিলেন। সেই ঘটনার পর স্বাভাবিকভাবেই প্রচন্ড চাপে পড়ে গিয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পরে অর্পিতাকে মুম্বইতে খুঁজে পাওয়া যায়। আর পার্থও শেষমেশ কমিশন বৃদ্ধি করে ৩০ শতাংশ কমিশন দিতে থাকেন অর্পিতাকে।
অর্থাৎ, ওই বাংলা দৈনিকে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, নিজের ফ্ল্যাটে দুর্নীতির টাকা রাখার জন্য লাখে ৩০ হাজার টাকা কমিশন পেতেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। এদিকে তাঁর ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া প্রায় ৫০ কোটি টাকার হিসেবে ধরলে তাঁর কমিশন হয় মোট ১৫ কোটি টাকা। আর এত টাকা তিনি কামিয়েছিলেন শুধুমাত্র দুর্নীতির ধন আগলে।
আপনার মতামত লিখুন :