বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ সম্প্রতি রাজ্যে একের পর এক ঘটে যাওয়া হিংসার ঘটনায় রাজ্য-রাজনীতি উত্তপ্ত। রাজ্যজুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। রামপুরহাটের বগটুই কাণ্ড, আনিস খানের হত্যা আবার পূর্ব বর্ধমানের তুহিনা খাতুনের আত্মহত্যা-সহ একাধিক ঘটনায় উদ্বেগে রাজ্যবাসী।
রাজ্যের এই পরিস্থিতিতে এবার এইসব হিংসার ঘটায় উদ্বেগ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খোলা চিঠি লিখলেন রাজ্যের বিশিষ্টজনেরা। এই বিশিষ্টজনেদের তালিকায় রয়েছেন অপর্ণা সেন, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, শ্রীজাত বন্দ্যোপাধ্যায়, কৌশিক সেন, রূপম ইসলাম, অনির্বাণ চক্রবর্তী-সহ ২২ জন। শনিবার লেখা ওই চিঠিতে এঁদের প্রত্যেকের স্বাক্ষর রয়েছে ওই চিঠিতে।
চিঠিতে প্রথমেই রামপুরহাট হত্যাকাণ্ড নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশিষ্টজনেরা। এছাড়াও চিঠিতে হাওড়ার আমতার ছাত্রনেতা আনিস খানের হত্যাকাণ্ড, পূর্ব বর্ধমানের তুহিনা খাতুনের আত্মহত্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করার পাশাপাশি ঝালদা-পানিহাটিতে কাউন্সিলর খুনের ঘটনা প্রসঙ্গেও একইভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন চিঠিতে বিশিষ্টজনেরা। অন্যদিকে, পুরভোটে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছাপ্পাভোট, রিগিং, বুথ দখলের যে অভিযোগ উঠেছিল, সে প্রসঙ্গেও চিঠিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের এই বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
চিঠিতে রামপুরহাটে অগ্নিদগ্ধ হয়ে ৯ জনের মৃত্যুর ঘটনার কথা উল্লেখ করে তাঁরা লিখেছেন যে, ‘রামপুরহাটে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডটিকে যেকোনো শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ দ্ব্যর্থহীন ভাষায় পৈশাচিক আখ্যা দেবেন। আমরাও তার ব্যতিক্রম নই। ঘটনা পরবর্তীতে আপনার তত্ত্বাবধানে প্রশাসন, অনুসন্ধান এবং ক্ষতিপূরণ দানে তৎপর হয়েছে এবং এই পদক্ষেপকে নিঃসন্দেহে স্বাগত৷ কিন্তু তাও প্রশ্ন থেকে যায়, এরকম একটি ঘটনার আগে পুলিশ প্রশাসন তৎপর হল না কেন?’ মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে লেখা ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘রাজ্যের ভিতরে ভুল ত্রুটি গুলি শোধরানো প্রয়োজন, না হলে সাম্প্রদায়িক বিভেদকামী রাজনীতি আমাদের অভ্যন্তরীণ গাফিলতির সুবিধা নিতে চেষ্টা করবে।’
চিঠিতে বিশিষ্টজনেরা মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে লিখেছেন, ‘এই চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের কোনও ক্ষুদ্র দলীয় বা রাজনৈতিক স্বার্থ নেই। ভারতের অধিকাংশ প্রান্তে এই মুহূর্তে গরিষ্ঠতাবাদী বিভাজন সৃষ্টিকারী রাজনীতির আস্ফালন। ২০২১-এর সেই রাজনীতি আমাদের বাংলাতে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়ে সর্বশক্তি প্রয়োগ করেছিল। দলমত নির্বিশেষে আমরা মনে করি আপনার জন্যই তা হতে পারেনি। আপনার এই সংগ্রামকে আমরা সম্মান করি এবং ভারতবর্ষে অতি-দক্ষিণপন্থী রাজনীতির অন্যতম প্রধান বিরোধী মুখ হয়ে ওঠার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাই।’
এখানেই শেষ নয়, তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়ে আরও লিখেছেন যে, ‘গণতন্ত্র ও সুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশপ্রেমী নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে আমাদের আশা কিংবা আপনার কাছে দাবি বলেত পারেন, বাংলার রাজনীতির এই দীর্ঘ ও কদর্য ঐতিহ্য বন্ধ হোক, আপনি আপনার প্রশাসনের মধ্যে দিয়ে তা সুনিশ্চিত করুন৷’
আপনার মতামত লিখুন :