বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ অত্যাধিক দাবদাহের দাপটে এবার কি তবে রাজ্যের স্কুলগুলিতে সময়ের আগেই পড়তে চলেছে গরমের ছুটি? এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই ভাবনাচিন্তা শুরু করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। জানা গিয়েছে, এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কয়েকদিন সময় নিল রাজ্য সরকার। সম্ভবত আগামী সপ্তাহেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। এদিন এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এদিন তিনি বলেন, ‘আগামী সোম অথবা মঙ্গলবার নাগাদ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।’ তবে, এর মধ্যে বৃষ্টি হলে, অন্য সিদ্ধান্ত নিতেও পারে রাজ্য সরকার।
প্রসঙ্গত, দক্ষিণবঙ্গে ক্রমশ বেড়েই চলেছে তাপমাত্রার পারদ। উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি হলেও, দক্ষিণবঙ্গে কালবৈশাখী বা বৃষ্টির দেখা নেই। রবিবারই কলকাতার তাপমাত্রা প্রায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছেই ছিল। মানুষ গরমে নাজেহাল। হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, চলতি সপ্তাহে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে শুষ্ক আবহাওয়া থাকবে। সেই সঙ্গে গরম আরও বাড়বে। এই হাওয়া বদলের কারণে অস্বস্তি আরও বাড়ার সম্ভবনা রয়েছে। চড়া রোদের পাশাপাশি আপেক্ষিক আদ্রতার পরিমাণও বাড়বে শহর ও শহরতলী এলাকায়। গরমে কাহিল মানুষ। এর সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি চলছে। রাজ্যের একাধিক জেলায় তাপপ্রবাহের সম্ভবনা রয়েছে। বইবে ‘লু’। পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম প্রভৃতি জেলায় তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছে হাওয়া অফিস।
এদিকে, এর মধ্যেই পঠন-পাঠন চালাতে মানতে হবে নিয়ম। পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের শারীরিক সুস্থতার দিকেও নজর রাখাও জরুরি। তাই আগামী সপ্তাহেই নেওয়াহতে পারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। বর্তমানে রাজ্যে এই অত্যাধিক গরম এবং তাপপ্রবাহের দিকে নজর রেখে স্কুল পরিচালনার জন্য একাধিক নির্দেশ জারি করেছে শিক্ষা দফতর। যেমন- মর্নিং স্কুল চালু করার বিষয়টিতে জোর দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে স্কুলের সময় এগিয়ে আনারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারপরেও যেভাবে বাড়ছে তাপমাত্রা, তাতে গরমের ছুটি এগিয়ে আনা হবে কিনা, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে এদিনই বিকাশ ভবনে জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী। বিকাশ ভবনের পক্ষ থেকে প্রাথমিক, এসএসকে, এমএসকে থেকে শুরু করে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত স্কুলগুলোকে মর্নিং স্কুল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এমনকি, যে স্কুলগুলো মর্নিং স্কুল করাতে পারবে না, তাদের ক্ষেত্রে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, ছাত্রছাত্রীদের শারীরিক স্বাস্থ্য রক্ষার দিকে নজর দিয়ে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।
উল্লেখ্য, এদিন বৈঠক শেষে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন যে, `আগামী সোমবার, মঙ্গলবার পর্যন্ত আমরা দেখে নিতে চাইছি৷ গরম একইরকম থাকলে ছুটি এগিয়ে আনা হতে পারে৷ তবে একটা বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন, এত দিন স্কুল বন্ধ ছিল, স্বাভাবিক পঠন পাঠন বন্ধ ছিল। সবটাই মুখ্যমন্ত্রী কে জানানো হয়েছে। আজকেও নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। আগামী সোম, মঙ্গল বার বৃষ্টি সম্ভাবনা আছে।`
গোটা রাজ্যজুড়ে এই অত্যাধিক গরমের কারণে ইতিমধ্যেই নানা জায়গা থেকে অসুস্থতার খবরও আসছে। সেই কারণেই ছাত্র-ছাত্রীদের শারীরিক সুস্থতাকে অগ্রাধিকার দিয়েই মর্নিং স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। এবার এটাই দেখার যে, গরমের ছুটি এগিয়ে আনার ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আবার সপ্তাহের শেষের দিকে দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলার বৃষ্টির সম্ভবনা রয়েছে। তাই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে তাড়াহুড়োয় করতে চাইছে না সরকার। উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই পূর্ব বর্ধমান জেলার প্রাথমিক স্কুলগুলিতে এক ঘণ্টা আগে ছুটি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷
আপনার মতামত লিখুন :