বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ব্লাদিমির পুতিনের ইউক্রেনে ‘সেনা অভিজান’-এর সিদ্ধান্তকে কোনও দেশই সমর্থন জানায়নি। বারবার এই আগ্রাসন নীতি থেকে সরে আসার কথা বলা হয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের কথা বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে বলা হলেও, তাতে বিন্দুমাত্র কর্ণপাত করেনি রাশিয়া। তাই অন্যদিক থেকে রাশিয়াকে জব্দ করার, কোণঠাসা করার চেষ্টা চলছে।
বর্তমানে ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতি ভয়াবহ। গতকালই ইউক্রেনের খেরসন শহরের দখল নিয়েছে রুশ সেনা। ক্রমাগত হামলা হয়েই চলেছে কিয়েভ এবং খারকিভের উপর। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভকে ইতিমধ্যেই চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেছে রুশ সেনা। পাশাপাশি খারকিভের উপরও লাগাতার বোমা বর্ষণ করা হচ্ছে। পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল ও ভয়ঙ্কর হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে গোটা বিশ্ব রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। এই আবহে রাশিয়ার বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিল বিশ্ব ব্যাঙ্ক। বিশ্ব ব্যাঙ্ক এক বিবৃতি জারি করে জানিয়েছে, ইউক্রেনের বাসিন্দাদের প্রতি যে আগ্রাসী মনোভাব দেখিয়েছে রুশ সেনা, সেই জন্য রাশিয়া এবং বেলারুশে বিশ্ব ব্যাঙ্কের যাবতীয় প্রকল্প অবিলম্বে বন্ধ করা হবে। এদিকে, মঙ্গলবার ইউক্রেনকে আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেছিল বিশ্ব ব্যাঙ্ক।
অন্যদিকে, পুতিনের সমালোচনা করে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, ‘আমাদের নিসেধাজ্ঞাগুলির জন্য রাশিয়াকে কষ্ট ভোগ করতে হবে। রুশ অর্থনীতিতে এর ধাক্কা ভুগতে হবে। বিশ্ব শান্তি চায়। রাশিয়ার স্বৈরাচারীতা গোটা বিশ্বকে অশান্ত করে তুলেছে।’
রুশ ও ইউক্রেনের যুদ্ধের পর, রাশিয়ার বিরুদ্ধে একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, SWIFT নামক একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা একাধিক রুশ ব্যাঙ্ককে পেমেন্ট সিস্টেম থেকে সরিয়ে দিয়েছে। এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার মতো দেশ। এছাড়াও আর্থিক এবং বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। এইসব সিদ্ধান্তের জেরে রাশিয়ার উপর যে অর্থনৈতিক দিক থেকে চাপ পড়তে চলেছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। এই পদক্ষেপের জেরে অর্থনৈতিক দিক ক্ষতির মুখে পড়তে চলেছে রাশিয়া। এমনটাই সূত্রের খবর।
আবার, এই যুদ্ধের সিদ্ধান্তের কারণে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হলে, আগামীতে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক তৈরির ক্ষেত্রেও সমস্যা পড়তে পারে রাশিয়া। এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের। জানা গিয়েছে, আর্থিক নিষেধাজ্ঞা এবং বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার মুদ্রার দর কমেছে। পাশপাশি প্রতিদিন যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হচ্ছে। সব মিলিয়ে রুশ প্রেসিডেন্টের সেনা অভিযানের সিদ্ধান্তে রাশিয়ার অর্থনীতি গভীর সংকটের মুখে। তবে, এতো কিছুর পরেও নিজের সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটতে নারাজ পুতিন। শান্তি বৈঠক বসলেও, তাতে কোনও সমাধানের পথ বেরিয়ে আসেনি। রুশ সেনা- অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :