বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ স্ত্রী সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না লাগালেন, তারপর সেই ওড়না গলায় লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন। এদিকে, স্ত্রীকে আত্মহত্যার চেষ্টা করা থেকে বিরত করা বা বাঁচানো তো দূর, উল্টে পুরো ঘটনার ভিডিও করলেন স্বামী। এখানেই শেষ নয়, স্ত্রীর মৃত্যু হলে, চিকিৎসক না ডেকে নিজেকেই বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন স্বামী। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে কানপুরে। জানা গিয়েছে, ওই মহিলার মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, এই ঘটনা রীতিমতো হতবাক করেছে মৃতার পরিবারকে। গৃহবধূর মৃত্যু কীভাবে হল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে, স্ত্রীকে আত্মহত্যার চেষ্টা করতে দেখেও, কেন চুপ রইলেন স্বামী, কেন তাঁকে না বাঁচিয়ে, ভিডিও করলেন? তা ভেবেই শিউরে উঠছেন প্রত্যেকে। জানা গিয়েছে, মৃতা গৃহবধূর নাম সবিতা গুপ্তা, স্বামীর নাম সঞ্জীব। ৫ বছর আগে সবিতার সঙ্গে সঞ্জীবের বিয়ে হয়। গত মঙ্গলবারই মৃত্যু হয়েছে সবিতার।
জানা গিয়েছে, তাঁর সঙ্গে স্বামীর বচসা চলছিল। প্রথমবার আত্মহত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। দ্বিতীয়বার গলায় ওড়নার ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হন সবিতা। এই পুরো বিষয়টি ঘটে যায় স্বামী সঞ্জীবের সামনেই। স্ত্রীকে না বাঁচিয়ে, তিনি পুরো ঘটনার ভিডিও রেকর্ডিং করেছেন। মোবাইল ফোনে রেকর্ড করা ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, তিনি নিজের গলায় ফাঁস লাগানোর চেষ্টা করছেন। গলায় ওড়না জড়িয়ে নিচ্ছেন। তাঁর স্বামী সামনে দাঁড়িয়ে দেখছেন। স্ত্রী যখন ওড়নায় ঝুলতে যাচ্ছেন, সেই সময় তাঁর স্বামী বলছেন, ‘খুব ভাল। এটাই ছিল তোমার মনে? খুব খারাপ ভাবনা-চিন্তা।’ সবিতা স্বামীর দিকে তাকিয়ে আছেন। এখানেই ভিডিওটা শেষ হয়ে যায়।
এদিকে, সবিতার মৃত্যুর পর তাঁর পরিবারকে খবর দেন স্বামী সঞ্জীব। মৃতার বাবা রাজকিশোর জানান, জামাই তাঁকে ফোন করে তাঁর মেয়ের মৃত্যুর খবর জানান। মঙ্গলবার বিকেলে ওই ফোন পেয়ে ছুটে যান সবিতার পরিবার পরিজন। গিয়ে দেখেন, সবিতার দেহ পড়ে রয়েছে বিছানার ওপর। আর ডাক্তার না ডেকে তাঁর বুকে চাপ দিয়ে শ্বাস ফেরানোর চেষ্টা করছেন জামাই সঞ্জয়। এরপর সবিতাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং এর পাশাপাশি সবিতার পরিবারের তরফে পুলিশেও খবর দেওয়া হয়। এদিকে, সবিতাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
মৃতার বাবা আরও জানিয়েছেন যে, জামাই তাঁদের একটি ভিডিও দেখান, যেখানে দেখা যায়, সবিতা গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করছে। সঞ্জীবের দাবি, সবিতা আগেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে।
অন্যদিকে, খবর পেয়ে ছুটে আসে কানপুরের পুলিশ। এ প্রসঙ্গে কানপুরের এসিপি অনুপ সিং জানান, পুলিশ তদন্ত করছে। ভিডিওর বিষয়টিও দেখা হচ্ছে, প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, দাম্পত্য অশান্তির জেরেই আত্মহত্যা। তবে, স্বামী কেন বাঁচানোর চেষ্টা না করে ভি়ডিও করল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এদিকে মৃতার বাড়ি থেকে কোনও লিখিত অভিযোগ না করায়, এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। তবে, সবিতার পরিবারের দাবি, মেয়ের জন্য ন্যায়বিচার চাই তাঁদের।
আপনার মতামত লিখুন :