বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ জন্ম দিয়েছিলেন দু’টি কন্যা সন্তানের। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের কাছে এটাই ছিল তাঁর গুরুতর ‘অপরাধ’। তাই আদর-যত্নের পরিবর্তে কপালে জুটল মার। মহিলাকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করেন তাঁর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। সম্প্রতি এই ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। বাড়ির বউয়ের প্রতি নির্মম অত্যাচারের ভিডিও দেখে হতবাক নেটদুনিয়া।
এই অমানবিক ঘটনার সাক্ষী উত্তরপ্রদেশের মাহোবা জেলা। ভাইরাল ভিডিওটিতে দেখা গিয়েছে, মাটিতে ফেলে লাথি, ঘুঁষি মারা হচ্ছে বাড়ি গৃহবধূকে। চলছে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ। মহিলা হাত জোড় করে তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য মিনতি করলেও তা কানে তুলছেন না কেউ। রাস্তায় ঘিরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন পথচারীরা। অথচ কেউ এগিয়ে আসছেন না, প্রতিবাদও করছেন না। মহিলার ওপর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের এহেন অকথ্য অত্যাচারের দৃশ্য দেখে শিউরে উঠেছেন নেটিজেনরা। ইতিমধ্যেই গার্হস্থ্য হিংসার ঘটনায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
নির্যাতিতার অভিযোগ, প্রথমবার একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তিনি। ছেলে না হওয়ায় শ্বশুরবাড়ির লোকেরা শুরু করেন অত্যাচার। দ্বিতীয়বার পুনরায় মেয়ে হয়। এরপর ক্রমশই বাড়তে থাকে অত্যাচারের মাত্রা। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের পাশাপাশি তাঁকে দিনের পর দিন না খাইয়ে রাখতেন শশুরবাড়ির সদস্যরা। তাই পেট চালাতে মজুরের কাজ শুরু করেন তিনি। কিন্তু সম্প্রতি রাস্তায় ফেলে মারধরের ঘটনা সমস্ত সীমা অতিক্রম করে।
এই প্রসঙ্গে মাহোবার পুলিশ সুপার সুধা সিং জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই গার্হস্থ্য হিংসার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুরু হয়েছে তদন্ত। খুব শীঘ্রই অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে। অন্যদিকে ওই নির্যাতিতা মহিলাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
একুশের দশকে দাঁড়িয়ে আজও বহু পরিবারে কন্যাসন্তানদের অবাঞ্ছিত রূপে বিবেচনা করা হয়। বাড়িতে মেয়ে হলে মুখ ভার হয় পরিবারের সদস্যদের। সন্তান ছেলে হবে না মেয়ে তা সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করে বাবার ক্রোমোজোমের ওপর। এতে মায়ের কোনও হাত থাকে না। যদিও এই ন্যূনতম ধারণা ভারতের মতো দেশে অনেকেরই নেই। তাই কন্যাসন্তান জন্ম দেওয়ার ‘অপরাধে’ দিনের পর দিন অত্যাচারিত হতে হয় গৃহবধূদের। এই অত্যাচারের শেষ ঠিক কোথায় তা কারুরই জানা নেই!
আপনার মতামত লিখুন :