বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ এককথায় মর্মান্তিক এবং হৃদয় বিদারক ঘটনার সাক্ষী হল গোটা দেশ। সন্তান-সহ আত্মঘাতী হলেন তিন বোন। মৃত্যুর আগে হোয়াটসঅ্যাপে স্ট্যাটাসে লিখে গেলেন ‘এভাবে রোজ মরার থেকে একেবারে মরে যাওয়া ভাল’!
বুধবার থেকেই নিখোঁজ ছিলেন তিন বোন এবং বড় বোনের দুই সন্তান। শনিবার শ্বশুরবাড়ির কাছের একটি কুয়ো থেকে উদ্ধার হয়েছে তিন বোন-সহ দুই শিশুর দেহ। ঘটনাটি ঘটেছে রাজস্থানে। জানা গিয়েছে অন্য দুই তরুণীও গর্ভবতী ছিলেন। এই ঘটনায় শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এদিকে, মৃত তিন তরুণীর বাবার অভিযোগ, পণের দাবিতে অত্যাচার চালাত তাঁর তিন মেয়ের স্বামীরা এবং তাঁদের শ্বশুরবাড়ির পরিবারের অন্য সদস্যরা। মৃত তিন তরুণীর বাবার দাবি, তাঁর তিন মেয়েকে পরিকল্পনা করেই খুন করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি জয়পুর জেলার দাদু এলাকার। শনিবারই উদ্ধার হয় মৃত তিন বোন কালু মীনা (২৫), মমতা মীনা (২৩) এবং কমলেশ মীনার (২০) দেহ। একই পরিবারে তাঁদের বিয়ে হয়েছিল। মৃত তিন তরুণীর বাবার অভিযোগ, পণের দাবিতে তিন মেয়ের উপরেই নিয়মিত অত্যাচার চালাত শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। কিছুদিন আগেই ছোট মেয়ে কমলেশ বাবাকে ফোনে জানিয়েছিলেন যে, তাঁদের উপর মারধরের কথা। প্রাণহানির আশঙ্কার কথাও জানিয়েছিলেন তিনি। এরপর ওই ব্যক্তি মেয়েদের শ্বশুরবাড়িতে যান, কিন্তু তাঁকে মেয়েদের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি, উল্টে তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বের করে দেওয়া হয়। তাঁকে এও বলা হয় যে, তাঁর মেয়েরা মারা গিয়েছে।
এরপরই ওই ব্যক্তি থানায় অভিযোগ জানান। স্থানীয় থানায় তাঁর দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিশ তদন্ত শুরু করে। এরপর শ্বশুরবাড়ির কাছে একটি কুয়ো থেকে উদ্ধার হয় তিন বোন এবং দুই শিশুর দেহ। দুই শিশু বড় বোন কালুর সন্তান। দুই শিশুর মধ্যে একজনের বয়স ৪ বছর অন্যজনের বয়স মাত্র ২২ দিন। আর কালুর অন্য দুই বোন যথাক্রমে ৭ ও ৮ মাসের গর্ভবতী ছিলেন।
মর্মান্তিক এই ঘটনায় কেঁপে উঠেছে গোটা দেশ। বাক্রুদ্ধ মানুষ। মাত্র প্রায় একমাস আগেই দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। অন্য দুই বোনও গর্ভবতী ছিলেন। প্রতিদিনের অত্যাচারে তাঁদের জীবন নরক হয়ে উঠেছিল। তাই তো মৃত্যুর আগে হোয়াটসঅ্যাপে স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘এভাবে রোজ মরার থেকে একেবারে মরে যাওয়া ভাল’!
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন বোনের উপরই অত্যাচার করত তাঁদের স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। প্রতিবেশীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, কালুদেবীকে তাঁর শশুড়বাড়ির লোকজন এতটাই অত্যাচার করত যে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল। তাঁর চোখ ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বলেও জানা গিয়েছে। কিছুদিন আগেই তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান।
উল্লেখ্য, মৃত তিন বোন পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের সেই স্বপ্নের অকালেই মৃত্যু তো হলই সেইসঙ্গে তাঁরাও চলে গেলেন অসময়ে। জানা গিয়েছে, পুলিশ কনস্টেবলের চাকরির পরীক্ষায় পাশ করেছিলেন মমতা, কালু বিএ তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন এবং কমলেশ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :