বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ সুপ্রিম কোর্টে বড় ধাক্কা। কলকাতা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়কে দ্বিতীয়বার নিয়োগের ক্ষেত্রে হাইকোর্টের রায়ই বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট। স্বাভাবিকভাবেই শীর্ষ আদালতে ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার।
মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সোনালি চক্রবর্তীকে আবারও নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত খারিজের নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ।
পরবর্তীকালে কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানায় রাজ্য সরকার। কিন্তু শুনানি শেষে হাইকোর্টের নির্দেশকেই বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি হিমা কোহলির ডিভিশন বেঞ্চ সেই আবেদন খারিজ করে দেয় ।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে সোনালি চক্রবর্তীর মেয়াদ শেষ হয়েছিল গত ২৭ অগস্ট। ওইদিনই নবান্নের পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সেই বিজ্ঞপ্তিতে সোনালি চক্রবর্তীকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদেই পুনর্বহাল করা হয়। উল্লেখ্য, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ আইন মেনেই রাজ্য সরকার এই সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু কীভাবে কোনও রকম বাছাই ছাড়াই সোনালি চক্রবর্তীকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে পুনর্বহাল করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। অভিযোগ, রাজভবনের সিলমোহর ছাড়াই মোট ২৫ টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করে রাজ্য। কিন্তু রাজভবনের অনুমোদন ছাড়া এই নিয়োগ করা যায় না।
উল্লেখ্য, সোনালী চক্রবর্তীর ক্ষেত্রে বিশেষ কারণ দেখিয়ে রাজভবনে পুনর্নিয়োগের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। এদিকে, এই বিষয়ে তৎকালীন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় কিছু ব্যাখ্যা চেয়েছিলেন। যদিও সেই ব্যাখ্যা রাজ্যের তরফে দেওয়া হয়নি বলেই অভিযোগ। উল্টে আগামী ৪ বছরের জন্য উপাচার্য পদে সোনালি চক্রবর্তীর কাজের মেয়াদ বাড়িয়ে দেওয়া হয়।
রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত ক্ষমতার অপব্যবহার বলে উল্লেখ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন এক আইনজীবী। সেই মামলায় উচ্চ আদালত জানায়, নিয়োগকারী সমস্ত কর্তৃপক্ষকে এড়িয়ে একতরফাভাবে সোনালি চক্রবর্তীর পুনর্নিয়োগের সিদ্ধান্ত সঠিক নয়, তা খারিজ করতে হবে। এর অর্থ সোনালি চক্রবর্তীকে আর উপাচার্য পদে রাখা যাবে না। হাইকোর্টের এই রায়কেই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য সরকার এবং সোনালি চক্রবর্তী। বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি হিমা কোহলির ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি হয়। সেই মামলায় এদিন হাইকোর্টের রায়ই বহাল রাখা হয়।
শীর্ষ আদালতের বিচারপতিরা জানান, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে যে ‘সমস্যার অপসারণে’র ধারা রয়েছে, তার অপব্যবহার করে সোনালি চক্রবর্তীকে নিয়োগ করা হয়েছে। এখানেই শেষ নয়, শীর্ষ আদালতের তরফে আরও বলা হয়েছে যে, এই সিদ্ধান্তে আচার্য অর্থাৎ রাজ্যপালের ক্ষমতায় হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। তাই সোনালি চক্রবর্তীর নিয়োগ একেবারেই ঠিক নয়।
আপনার মতামত লিখুন :