বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ আবারও একবার রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্রের বিরোধিতা করতে দেখা গেল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। এদিন বিজেপির দলীয় মিটিং-এ ‘পরিবারবাদের রাজনীতি’র বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার দলীয় কর্মীদের তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন যে, পদ্ম শিবিরে থেকে কোনোভাবেই পরিবারবাদকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। পাশাপাশি তিনি এও জানিয়েছেন যে, বিজেপি নেতার সন্তান হলেই টিকিট পাওয়া যাবে না।
এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন যে, ‘পরিবারবাদের রাজনীতি এই দলে থেকে করা যাবে না। অন্য দলের এই পরিবারতান্ত্রিক মনোভাবের বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করে চলেছি। যে মনোবৃত্তির সঙ্গে আমরা লড়াই করছি তা পোষণ করব কীভাবে? এর প্রতিবাদ করছি এবং করব।’ তিনি আরও বলেছেন যে, ‘কোনও নেতার পরিবারের কোনও সদস্যকে টিকিট দেওয়া না হতেই পারে। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তাই টিকিট দেওয়া হয়নি ভেবে নেবেন।’
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ৫ রাজ্যের নির্বাচনে ‘এক পরিবার এক টিকিট’ নীতি গ্রহণ করেছিল বিজেপি। দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল যে, মেধা আর পারফর্ম্যান্সের ভিত্তিতেই প্রার্থী বাছাই করা হবে। পাশাপাশি সদ্য সমাপ্ত পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী যারা হেরে গিয়েছে, তাঁদের হারের দায় নিলেন নরেন্দ্র মোদী নিজেই। আজ বিজেপির সংসদীয় দলের বৈঠকে তিনি বলেন, ‘কারও প্রার্থীপদ যদি খারিজ হয়ে থাকে, তাহলে এর দায়িত্ব আমার।’
এদিন বৈঠকে পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার পাশাপাশি নাম না করে কংগ্রেস এবং সমাজবাদী পার্টিকে কড়া বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘পরিবারতন্ত্র গণতন্ত্রের পক্ষে বিপজ্জনক। আমাদের এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। আমাদের দলে পরিবারতন্ত্র বরদাস্ত করা হবে না। আমার জন্যই বিধানসভা নির্বাচনে দলীয় সাংসদদের ছেলে-মেয়েরা প্রার্থী হতে পারেননি। আমাদের দলে যেমন পরিবারতন্ত্র কায়েম হতে দেওয়া যাবে না, তেমনই যে দলগুলি পরিবারতন্ত্রের ভিত্তিতে চলে, সেই দলগুলির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। পাঁচটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে মানুষ পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন।’
সম্প্রতি চার রাজ্যের বিধানসভা ভোটে জেতার পরও পরিবারবাদী রাজনীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন মোদী। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি কোনও পরিবারের বিরুদ্ধে নই। তাঁদের সঙ্গে ব্যক্তিগত কোনও সমস্যা নেই আমার। একটাই সমস্যা। আমি লোকতন্ত্রে বিশ্বাসী। তাই পরিবারবাদী রাজনীতি দূর করতে চাই।’
মোদীর আরও বক্তব্য, ‘রাজ্যগুলিকে পিছিয়ে দিচ্ছে এই পরিবারবাদী রাজনীতি। আমি নিশ্চিত পরিবারবাদের রাজনীতির সূর্যাস্ত ঘটাবে সাধারণ মানুষ। দুর্নীতি যাঁরা করে, তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত হওয়া উচিত। ঠিক কিনা? জনতা চায় আমি দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে তদন্ত করি। তদন্ত করলেই কিছুজন বিরোধিতা করে।’
আজকের এই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নীতিন গড়করী, বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল, সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী-সহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও সাংসদরা। আজকের বৈঠকের শুরুতেই লতা মঙ্গেশকরের প্রয়াণ, ইউক্রেনে মৃত ভারতীয় পড়ুয়া এবং কর্ণাটকে খুন হওয়া বজরঙ্গ দলের কর্মী হর্ষর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে দু’মিনিটের জন্য নীরবতা পালন করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :