বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ক্রমশ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতি। এই অবস্থায় ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয় পড়ুয়াদের ঠিকভাবে ফিরিয়ে আনাই প্রধান লক্ষ্য কেন্দ্রের। একথা বারবার কেন্দ্রের তরফে বলা হচ্ছে। এই একই কথা উঠে এসেছে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যেও। ভারতীয় পড়ুয়াদের সুরক্ষিতভাবে বের করে আনতে ঘনঘন জরুরি বৈঠকে বসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিকে, ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের পক্ষ থেকে চারজন মন্ত্রীকে ভারতীয় পড়ুয়াদের উদ্ধারের জন্য ইউক্রেনের প্রতিবেশী দেশগুলিতে পাঠানো হয়েছে।
এই মুহূর্তে কিয়েভে আর কোনও ভারতীয় পড়ুয়া আটকে না থাকলেও, ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে এখনও কয়েক হাজার পড়ুয়া আটকে রয়েছে, গতকালই এই কথা জানিয়েছিল কেন্দ্র সরকার। খারকিভে রুশ সেনার হামলাও উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে। এই পরিস্থিতিতে সেখানে আটকে থাকা ভারতীয় পড়ুয়াদের দ্রুত ওই শহর ছেড়ে বেরিয়ে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রর পক্ষ থেকে। এদিকে, পরিস্থিতি জটিল দেখে, বুধবার রাতে ফের একবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এরপরই খারকিভে আটকে পড়া ভারতীয় ছাত্রীদের জন্য ‘সেফ প্যাসেজ’-এর ব্যবস্থা করে দয়া হয় রাশিয়ার সেনার পক্ষ থেকে। এমনটাই সরকারি সূত্রের খবর।
গতকালই ইউক্রেনের খেরসন শহরের দখন নিয়েছে রুশ সেনা। ক্রমাগত হামলা হয়েই চলেছে কিয়েভ এবং খারকিভের উপর। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভকে ইতিমধ্যেই চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেছে রুশ সেনা। পাশাপাশি খারকিভের উপরও লাগাতার বোমা বর্ষণ করা হচ্ছে। পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল ও ভয়ঙ্কর হচ্ছে বুঝতে পেরেই গতকাল ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকে খারকিভে আটকে থাকা সমস্ত ভারতীয়দের দ্রুত শহর ছেড়ে বেরিয়ে আসার নিরদশ দেওয়া হয়। বলা হয় যে, সন্ধে ৬ টার মধ্যেই সকলকে শহর থেকে বেড়ি আসতে হবে। সেক্ষেত্রে যাতায়াতের জন্য ট্রেন-বাস না পেলে, ভারতীয়রা যেন পায়ে হেঁটেই চলে আসেন। নির্দেশে তেমনটাও বলা হয়।
খারকিভের দখল নেওয়া শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা, এরপর ভারতীয়দের কী অবস্থা হবে, সেই কহা চিন্তা করেই গতকাল রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ফোন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। উভয়ের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ কথাও হয়। তখনই ভারতীয়দের নিরাপদে বের করে আনার কোথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিকে, কেন্দ্রীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এরপরই রাশিয়ার সেনা খারকিভে আটকে থাকা ভারতীয় ছাত্রীদের জন্য সেফ প্যাসেজের ব্যবস্থা করে, তাঁদের ইউক্রেনের পশ্চিম সিমান্তগামি ট্রেনে বসিয়ে দিয়েছে। একইভাবে ভারতীয় ছাত্রদেরও উদ্ধার করে আনা হবে বলেও জানানো হয়েছে।
ভারতীয় বিদেশ্মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এক বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে যে, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের পরিস্থিতির পর্যালোচনা করেছেন, বিশেষত খারকিভ, যেখানে বহু ভারতীয় পড়ুয়া আটকে রয়েছেন, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সংঘর্ষস্থল থেকে কীভাবে ভারতীয়দের নিরাপদভাবে উদ্ধার করে আনা যায়, তার জন্য সেফ প্যাসেজ তৈরির বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।’
প্রসঙ্গত বুধবারই ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার সংঘর্ষ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয়দের উদ্ধারকাজ নিয়েও সংশয় তৈরি হয়। কেন্দ্র সরকারের এক শীর্ষ আধিকারিক জানান যে, খারকিভ-সহ অন্যান্য অংশ থেকে ভারতীয়দের সুরক্ষিভভাবে বের করে আনার জন্য রাশিয়ার সঙ্গে ক্রমাগত আলোচনা হচ্ছে। এও জানা যায় যে, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথার পরই ভারতীয়দের খারকিভ থেকে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করেছে রুশ সেনা।
এরপর রাশিয়ার পক্ষ থেকে সহযোগিতার কথা স্বীকার করে নিয়ে তিনি বলেন, ‘বিদেশমন্ত্রকের তরফে যে এলাকাগুলিতে হামলা চালাতে বারণ করা হয়েছিল, সেখানে হামলা চালায়নি রুশ সেনা। আমাদের পড়ুয়াদের সুরক্ষিতভাবে উদ্ধার করে আনার জন্য রাশিয়ার সঙ্গে কথা হচ্ছে।’
আপনার মতামত লিখুন :